দেশের গুরুত্বপূর্ণ দুই নৌপথ পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও শিমুলিয়া-বাংলাবাজারে ফেরিতে গত কয়েক দিন যানবাহনের বেশ চাপ থাকলেও বৃহস্পতিবার ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে।
চারটি ঘাটে সকাল থেকে যানবাহনের তেমন চাপ দেখা যায়নি।
পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া
মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া থেকে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া পর্যন্ত নৌপথে সকালে যানজট ছিল না, তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানবাহনের চাপ কিছুটা বেড়েছে।
বৃহস্পতিবার অফিস শেষে অনেকেই বাড়িতে ফিরবেন। এ কারণে বিকেল থেকে যানজটের আশঙ্কা করছেন অনেকে।
রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে বুধবার রাত ১২টা থেকে অপচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল বন্ধ ছিল। এ কারণে অন্য দিনের মতো যানবাহনের দীর্ঘ সারি ছিল না বৃহস্পতিবার সকালে।
গত কয়েক দিন এ ঘাটে হাজার হাজার যানবাহন ফেরি পারের অপেক্ষায় ছিল। সকালে সাড়ে তিন শর মতো গাড়িকে অপেক্ষা করতে দেখা যায়। দুই থেকে তিন ঘণ্টার মধ্যেই ফেরিতে উঠতে পেরেছে গাড়ি।
ফেরির অপেক্ষায় থাকা বাসচালক বাদশা রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আজকে ঘাটে বেশি চাপ নেই। তাও ১ ঘণ্টার বেশি বসে আছি। মনে হচ্ছে, আর ১ ঘণ্টার মধ্যে সিরিয়াল পাব।
‘ঢাকামুখী যাত্রী তেমন নেই, তবে আজ বিকেল থেকে ঘরমুখী মানুষের চাপ বাড়বে অনেকটা।’
প্রাইভেটকারের চালক শুভ রহমান বলেন, ‘আমি একজনের গাড়ি চালাই। ঈদের ছুটিতে তারা ঢাকা থেকে খুলনা যাচ্ছে। ভোগান্তি এড়াতে ফাঁকা সময়ে আগেই বাড়িতে যাচ্ছে তারা।’
গোয়ালন্দ পুলিশ কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ায় ১৮টি ফেরি চলাচল করছে। রাত থেকে অপচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এদিকে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে সকালে চাপ কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রী ও ব্যক্তিগত ছোট গাড়ির চাপ কিছুটা বাড়ছে। দীর্ঘ হচ্ছে যানবাহনের সারি।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ নৌপথে ১৯টি ফেরি চলাচল করছে। সকালে চাপ কম ছিল। বর্তমানে পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় ছোট-বড় মিলিয়ে পাঁচ শতাধিক যানবাহন ফেরি পারের অপেক্ষায় রয়েছে।
ফরিদপুরগামী যাত্রী আব্দুল্লাহ বলেন, ‘ফেরি পারের জন্য প্রায় এক ঘণ্টা অপেক্ষা করছি, কিন্তু ফেরির দেখা মিলছে না। রোজার মধ্যে গরমে বিরক্ত লাগছে।’
হাসেম আলী নামের আরেক যাত্রী বলেন, ‘গাড়িতে বসে থাকতে কষ্ট হচ্ছে। পুরো রাস্তায় ভোগান্তি হলেও পাটুরিয়ায় একটু বেশি হয়। ঈদের আগে সরকারের কিছু করা দরকার পাটুরিয়ায়।’
বিআইডব্লিউটিসির আরিচা কার্যালয়ের সহকারী উপব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মহীউদ্দীন রাসেল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষ ও যানবাহনের চাপ কিছুটা বেড়েছে, তবে এটা কোনো চাপ না, ঘাট স্বাভাবিক বলা চলে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ফেরি সচল থাকলে ঘাটে কোনো ভোগান্তি হবে না। যাত্রী ও যানবাহন চালকদের ফেরির জন্য একটু অপেক্ষা করতে হবে।’
শিমুলিয়া-বাংলাবাজার
মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ফেরি ঘাটে বৃহস্পতিবার ভোরে তিন শর মতো গাড়ি ফেরির অপেক্ষায় থাকতে দেখা গেলেও সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চিত্র পাল্টে যায়। ৫০ থেকে ৬০টি গাড়ি ছিল পারের অপেক্ষায়। এতে অনেকটাই ফাঁকা হয়ে যায় ঘাট।
বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. ফয়সাল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘৯টি ফেরি চলাচল করছে। সকাল থেকে শতাধিক মোটরসাইকেলসহ চার শতাধিক যানবাহন পার হয়েছে।
‘আজ অফিসের শেষ দিন। বিকেল থেকে যাত্রীদের চাপ বাড়তে পারে।’
বিআইডব্লিউটিসির বাংলাবাজার ফেরি ঘাটের ম্যানেজার সালাউদ্দিন মিয়া জানান, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ঘরমুখো যাত্রীদের ভিড় ছিল। দুপুরের পর থেকে চাপ কিছুটা কমেছে।