বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

প্রধান শিক্ষককে মারধর: দুদিনেও গ্রেপ্তার হয়নি কেউ

  •    
  • ২৭ এপ্রিল, ২০২২ ২৩:০২

এসআই ডেভিড হিমাদ্রী বর্মা বলেন, ‘শিক্ষকের ওপর হামলার ঘটনায় ২৫ তারিখ লিখিত অভিযোগ আসে থানায়। বিষয়টি তদন্তে প্রাথমিক সত্যতা মেলায় এজাহার মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়েছে। আসামিরা পলাতক। তাদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।’

স্কুল গেটে কাউন্টার বসাতে বাধা দেয়ায় পাবনা টাউন গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক রবিউল করিমকে পিটিয়ে আহত করার দুই দিনেও কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

এর আগে গত ২৫ মার্চ প্রধান শিক্ষক পাবনা সদর থানায় মামলা করেন।

এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে বুধবার প্রতিবাদ সভা, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন জেলা শিক্ষক সমিতির নেতারা ও মানবাধিকার কর্মীরা।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, পাবনার মধ্য শহরের প্রাচীন বিদ্যাপীঠ টাউন গার্লস হাইস্কুলের প্রধানশিক্ষক রবিউল করিম সম্প্রতি স্কুল গেটে মুজিব কানন (বাগান) তৈরির উদ্যোগ নেন। গত ২৫ এপ্রিল রনি, জ্যাকির নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫ জনের একটি দল স্কুলের কম্পাউন্ডে এসে লাঠি, লোহার রড দিয়ে প্রধান শিক্ষককে মারধর করেন। এতে তিনি গুরুতর আহত হন।

পরে সহকর্মীরা তাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রধান শিক্ষক রবিউল করিম কৃষ্ণপুর এলাকার রেন্ট-এ কার চালক জ্যাকি ও রনির নাম উল্লেখসহ আরও অজ্ঞাতপরিচয়ে ২৫ থেকে ৩০ জনের বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ডেভিড হিমাদ্রী বর্মা বলেন, ‘শিক্ষকের ওপর হামলার ঘটনায় ২৫ তারিখ লিখিত অভিযোগ আসে থানায়। বিষয়টি তদন্তে প্রাথমিক সত্যতা মেলায় এজাহার মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়েছে। আসামিরা পলাতক। তাদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।’

পাবনা টাউন গার্লস হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘শহরের প্রাণকেন্দ্র আব্দুল হামিদ সড়কে প্রায় দেড় শ বছরের প্রাচীন বিদ্যাপিঠ টাউন গার্লস হাইস্কুল। গত কয়েক মাস ধরে রনি, জ্যাকিসহ বেশ কিছু রেন্ট-এ কারচালক স্কুল গেটে কাউন্টার বসানোর চেষ্টা করে আসছেন। বাধা দেয়ায় প্রধান শিক্ষক রবিউল করিমের ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন তারা।

‘প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিব্রত করতে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের সঙ্গে নিয়ে চালকরা স্কুল গেটে বেঞ্চ পেতে বসে ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করা শুরু করেন তারা। একাধিকবার নিষেধের পরও তারা স্কুল গেটে গাড়ি রেখে যাতায়াতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। শিক্ষার্থীদের সম্মান বাঁচাতে শিক্ষকদের নিজ প্রতিষ্ঠানে এভাবে মারপিটের শিকার হওয়া শিক্ষক সমাজের জন্য অপ্রত্যাশিত, অবমাননাকর ও আতঙ্কের বিষয়।’

প্রতিবাদ সভায় পাবনা জেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি নওশের আলম মন্টু বলেন, ‘স্কুল কম্পাউন্ডে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের আক্রমণের শিকার হওয়ায় জেলা শিক্ষকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পরেছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। একই সঙ্গে জেলার প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানাই।

‘আসামিদের শাস্তির দাবিতে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে। দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তার করা না হলে জেলার শিক্ষকরা কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি গ্রহণ করবে।’

হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার নেটওয়ার্ক পাবনার সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রব মন্টু বলেন, ‘পাবনা টাউন গার্লস হাইস্কুল বনমালী শিল্পকলা কেন্দ্রের সামনে সড়কে রেন্ট-এ কার চালকরা অবৈধভাবে একাধিক কাউন্টার বসিয়েছেন। তারা যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং করে যানজট সৃষ্টির পাশাপাশি স্কুলছাত্রী ও পথচারীদের উত্ত্যক্ত করেন।

‘সন্ধ্যা হলেই প্রকাশ্যে এসব কাউন্টারে অসামাজিক কাজ করে। আমরা শিক্ষকের ওপর হামলার বিচার দাবির পাশাপাশি এসব কাউন্টার উচ্ছেদের প্রশাসনিক ব্যবস্থার দাবি জানাই।’

প্রতিবাদ সভায় আরও বক্তব্য দেন, হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার নেটওয়ার্ক পাবনার চেয়ারম্যান আব্দুল মতীন খান, শিক্ষক উম্মে হাবিবাসহ জেলার বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক।

এদিকে শিক্ষক হামলার ঘটনায় নিজের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত রেন্ট কার চালক জ্যাকি। তিনি বলেন, ‘কাউন্টার বসানো নিয়ে বিরোধ থাকলেও মারপিটের ঘটনায় আমাদের সম্পৃক্ততা নেই। অভিভাবকদের সঙ্গে দ্বন্দ্বে তিনি লাঞ্চিত হয়েছেন।’

এ বিভাগের আরো খবর