ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ২৩১টি এটিএম বুথ থেকে ২ কোটি ৪২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল একটি সিকিউরিটি সার্ভিস কোম্পানির ৯ সদস্য। তাদের মধ্য থেকে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন বা পিবিআইয়ের ঢাকা মেট্রোর উত্তর বিভাগ।
আদালতে তাদের দেয়া জবানবন্দিতে জানা গেছে, কীভাবে তারা ২৩১টি বুথ থেকে টাকাগুলো হাতিয়েছিল।
বুধবার ঢাকা মেট্রো উত্তরের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলম।
তিনি জানান, ঢাকা মহানগরের সেনপাড়া পর্বতা ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ২৮৫২ নম্বর এটিএম বুথসহ মিরপুর ও মোহাম্মদপুর এলাকার ২৩১টি বুথ থেকে গার্ডা শিল্ড সিকিউরিটি কোম্পানির ক্যাশ অ্যাটেনডেন্ট ও মেশিন মেইনটেন্যান্সের দায়িত্বে থাকা ৯ জন মিলে ২ কোটি ৪২ লাখ টাকা কৌশলে হাতিয়ে নেয়।
যে দুজন গ্রেপ্তার হয়েছে তারা হলেন, তাহমিদ উদ্দিন পাঠান ও আব্দুর রহমান বিশ্বাস।
বিশেষ পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম জানান, তাহমিদ উদ্দিন পাঠান ও আব্দুর রহমান বিশ্বাস গার্ডা শিল্ড সিকিউরিটি কোম্পানিতে ক্যাশ অ্যাটেনডেন্ট ও মেশিন মেইনটেন্যান্স হিসেবে চাকরি করতেন। ডাচ-বাংলার বনানী শাখা থেকে মিরপুর ও মোহাম্মদপুর এলাকার এটিএম বুথে টাকা লোডের জন্য কোম্পানিতে বুথের তালিকা ও টাকা লোডের পরিমাণসহ রিকুইজিশন আসতো।
আসামিরা ১১ জন পর্যায়ক্রমে ২ জন করে একাধিক টিমে বিভক্ত হয়ে এটিএম বুথে টাকা লোড ও মেশিন মেইনটেন্যান্সের ডিউটি করতেন। ডিউটির সময় তারা এটিএম মেশিনে টাকা লোড করার পর ফলস ট্রানজেকশন করতেন। এভাবে অক্টোবর ২০২১ থেকে গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে চক্রটি ২ কোটি ৪২ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।
বিষয়টি ব্যাংক কর্তৃপক্ষের নজরে আসলে কর্তৃপক্ষ গার্ডা শিল্ড সিকিউরিটি কোম্পানিকে আইনি ব্যবস্থা নিতে বলে। গার্ডা শিল্ড প্রাথমিক তদন্ত করে তাহমিদ উদ্দিন পাঠান ও আব্দুর রহমান বিশ্বাসের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের সত্যতা পায়।
গার্ডা শিল্ডের সৈয়দ আব্দুল আলম ওই ২ জনের বিরুদ্ধে কাফরুল থানায় মামলা করেন।
পরে পুলিশ একে একে ৯ আসামিকে গ্রেপ্তার করে। পরে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স মামলাটির পিবিআইতে হস্তান্তর করার নির্দেশ দেয়।
তদন্তের দায়িত্ব পেয়ে সংস্থাটি তাহমিদ উদ্দিন পাঠান ও আব্দুর রহমান বিশ্বাসকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা অভিযোগ স্বীকার করেন।
মামলাটিতে গ্রেপ্তার অন্য আসামিরা হলেন একই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কামরুল হাসান, তারেক আজিজ, আলী, রবিউল হাসান, আব্দুল কাদের, হাবিবুর রহমান, সুজন মিয়া, তরিকুল ইসলাম এবং শিশির কুমার।
পিবিআই জানায়, এসব বুথ থেকে আসামিরা নিজে ও আত্মীয়দের নামে ইস্যু করা এটিএম কার্ড দিয়ে ফলস ট্রানজেকশনের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিল।