বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ঈদের কেনাকাটায় জমজমাট বাজার

  •    
  • ২৭ এপ্রিল, ২০২২ ১৫:১০

পরী ফ্যাশন হাউজের মালিক নাজমুন নাহার রত্না বলেন, ‘গত দুই বছর করোনার কারণে তেমন একটা সেল হয়নি, তবে গতবারের তুলনায় এখন আমাদের অনেক বেশি সেল হচ্ছে, কাস্টমারের চাপও অনেক বেশি। কাস্টমারের চাহিদা বেশি গাউন। নতুন ড্রেস কাঁচা বাদাম, পুষ্পা এগুলোও ভালো চলছে।’

ঈদকে সামনে রেখে প্রতিটি শোরুম ও বিপণিবিতানে নতুন নতুন পোশাক তুলেছেন ব্যবসায়ীরা। দোকান থেকে কেউ কেউ কেনাকাটা করে বের হচ্ছেন, কেউ প্রবেশ করছেন। অনেকে পছন্দের জামাকাপড় কিনতে এক দোকান থেকে অন্য দোকানে ছুটছেন। ফুটপাতে কেনাকাটা করছেন নিম্ন আয়ের লোকজন।

ময়মনসিংহ শহরে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা। বিভিন্ন শপিংমলসহ ফুটপাতের দোকানগুলোতেও ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। এতে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন দোকানিরা।

গাঙ্গিনারপাড় এলাকায় বারি প্লাজার একটি দোকানের ব্যবস্থাপক আরিফুর রহমান। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন বয়সী নারী ক্রেতাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে সব ধরনের কালেকশন রেখেছি। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ক্রেতার সমাগম বাড়ছে। তারা পছন্দের কাপড় স্বাচ্ছন্দ্যে কিনে বাড়ি ফিরছেন।’

শহরের গাঙ্গিনারপাড়, স্টেশন রোড ও নতুন বাজার এলাকা ‘মার্কেটপাড়া’ হিসেবে খ্যাত।

বিক্রেতারা জানান, গত দুই বছর করোনার প্রাদুর্ভাব ও কঠোর বিধি-নিষেধে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ব্যবসায়ীরা। এ বছর করোনা প্রাদুর্ভাব কমে যাওয়ায় জীবনযাত্রায় ফিরেছে স্বাভাবিক ছন্দ। ফলে ঈদ আনন্দে মেতে উঠেছে নানা বয়সী মানুষ। গত এক সপ্তাহ সব বিপণিবিতানে ক্রেতাদের সমাগম বেড়েছে। আর কয়েকদিন পর ক্রেতার সংখ্যা আরও বাড়বে বলে প্রত্যাশা করছেন তারা।

স্টেশন রোড এলাকায় পালিকা শপিং সেন্টারে ছেলেদের জামা বিক্রি করেন জাবেদ আলী।

তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঈদ ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে বিক্রিও বাড়ছে। অনেকে জামা দেখে আবার চলে যাচ্ছেন। তবে, ক্রেতাদের উপস্থিতি দেখা বোঝা যাচ্ছে এবার প্রত্যাশা অনুযায়ী বিক্রি করতে পারব।’

আরাফাত সানি নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘প্রতিবছর ঈদে কেনাটার ভিড়ে ছিনতাইকারী ও পকেটমারের তৎপরতা দেখা যায়। প্রশাসনের কঠোর নজরদারি থাকলে সবাই পরিবার নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে কেনাকাটা করতে পারবে।’

ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ কামাল আকন্দ নিউজবাংলাকে বলেন, ঈদ উপলক্ষে শহরে পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে। চোর ও ছিনতাই থেকে সতর্ক থাকতে প্রতিদিন লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। তবুও সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। ঈদে স্বাচ্ছন্দ্যে কেনাকাটা নিশ্চিত করতে কাজ করছে পুলিশ।’

এদিকে সাতক্ষীরাতেও জমে উঠেছে ঈদের বাজার।

সাতক্ষীরার বাজারে এবার ভারতীয় নায়িকা ও সিরিয়ালের নামে তেমন কোনো পোশাক আসেনি। তবে কাঁচা বাদাম, পুষ্পার মতো পোশাক বাজার দখল করেছে।

তবে গরমের জন্য বেশিরভাগ ক্রেতাই পছন্দ করছেন সুতি কাপড়। আর শাড়ির বাজারে দেশি শাড়িই বিক্রি হচ্ছে বেশি।

বিক্রেতারা বলছেন দাম নাগালের মধ্যে আছে। ক্রেতাদের অভিযোগ গত বছর থেকে এবার কাপড়ের দাম তুলনামূলক বেশি।

এদিকে বিক্রেতারা যাতে ক্রেতাদের ঠকিয়ে বাড়তি দাম না নিতে পারে সে জন্য বাজার মনিটরিং করছে জেলা প্রশাসন।

সাতক্ষীরা শহরের আসাদুল মার্কেট, বসুন্ধরা মার্কেট, চায়না বাংলা শপিং কমপ্লেক্স, আল-বারাকা শপিংমল, থানা মসজিদ মার্কেট, আমিনিয়া সুপার মার্কেটসহ বিভিন্ন অভিজাত মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। সকল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এ ভিড় দেখা যায়।

ঈদে নতুন পোশাক কিনতে আসা ক্রেতা আফসানা মিমি বলেন, ‘করোনার কারণে গত দুই বছর পরিবারের জন্য কেনাকাটা করতে পারিনি। তবে এ বছর করোনার প্রকোপ না থাকায় পরিবারের জন্য কেনাকাটা করতে মার্কেটে এসেছি। গত বছরের তুলনায় এ বছর পোশাকের দাম একটু বেশি। বিভিন্ন দোকান ঘুরে দামাদামি করে পোশাক কিনতে হচ্ছে।’

থানা মসজিদ মার্কেটের মৌহিনী ফ্যাশন হাউজে সাজানো হয়েছে বাহারি পোশাক, রয়েছে লেহেঙ্গা, স্কার্ট ও গাউন। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় গাউন। কোয়ালিটিভেদে গাউন বিক্রি করা হচ্ছে দেড় হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকার মধ্যে।

সেখানে কথা হয় শহরের পলাশপোল এলাকার জাহিদা জাহানের সঙ্গে।

তিনি বলেন, ‘৬০০ টাকার কাপড় দেড় হাজার টাকায় বিক্রি করছে। মেয়ে কিছুই শুনতে চাচ্ছে না, তাই বাধ্য হয়ে বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে।’

পরী ফ্যাশন হাউজের মালিক নাজমুন নাহার রত্না বলেন, ‘গত দুই বছর করোনার কারণে তেমন একটা সেল হয়নি, তবে গতবারের তুলনায় এখন আমাদের অনেক বেশি সেল হচ্ছে, কাস্টমারের চাপও অনেক বেশি। কাস্টমারের চাহিদা বেশি গাউন। নতুন ড্রেস কাঁচা বাদাম, পুষ্পা এগুলোও ভালো চলছে।’

দাম বৃদ্ধির অভিযোগের বিষয়ে মৌহিনী ফ্যাশন হাউজের মালিক ইস্তিয়াক আহমেদ বলেন, ‘আমাদের বেশি দামে কিনতে হয়েছে, এজন্য দাম একটু বেশি, তবে সেই তুলনায় দাম ঠিকই আছে। যারা বছরে একবার আসেন, যাদের কাপড় সম্পর্কে কোন জ্ঞান নেই, তারা মূলত এ ধরণের অভিযোগ করেন।’

জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নাজমুল হাসান জানান, পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ভোক্তাদের জন্য বাজার নিয়ন্ত্রণ রাখতে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের নির্দেশনায় নিয়মিত বাজার তদারকি অভিযান পরিচালনা করা ও একই সঙ্গে সবাইকে সচেতন করা হচ্ছে।

সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ক্রেতারা যাতে শান্তিপুর্ণ পরিবেশে মার্কেটে কেনাকাটা করতে পারেন সেজন্য বিভিন্ন মার্কেটে ও তার আশপাশের এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর