ঈদের আনন্দ স্বজনদের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে রাজধানী ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছে মানুষ। অন্য যানবাহনের সঙ্গে ট্রেনেও গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা হয়েছে নগরবাসী।
বুধবার সকালে কমলাপুর থেকে ছেড়ে যাচ্ছে ঈদযাত্রার ট্রেন। এবার ভিড় অন্য ঈদের মতোই। সঙ্গে রয়েছে ট্রেনের সিডিউল বিড়ম্বনার বিষয়টিও।
গত কয়েক দিন ধরে কমলাপুরসহ রাজধানীর পাঁচটি স্টেশনে বিক্রি হচ্ছে ঈদযাত্রার অগ্রিম টিকিট। বুধবার শেষ হচ্ছে এই কার্যক্রম। তবে শেষ দিনেও উপচে পড়া ভিড় লেগেই আছে।
কমলাপুর রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সকাল ৯টা পর্যন্ত কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে আটটি ট্রেন ছেড়ে গেছে। প্রথম দিনে খুব বেশি ভিড় নেই। গন্তব্যে ছেড়ে যাওয়া ট্রেনগুলো হলো রাজশাহীগামী ধূমকেতু, সিলেটগামী পারাবত, চিলাহাটিগামী নীল সাগর, চট্টগ্রাম সোনারবাংলা, কিশোরগঞ্জ এগার সিন্দুর প্রভাতী, দেওয়ানগঞ্জ অভিমুখী তিস্তা এক্সপ্রেস, চট্টগ্রামগামী মহানগর প্রভাতী ও খুলনা অভিমুখী সুন্দরবন এক্সপ্রেস।
ভোর ৬টায় রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনের মাধ্যমে ঈদযাত্রা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা বিলম্বে পড়ে। আধাঘণ্টা পিছিয়ে সকাল সাড়ে ৬টায় ট্রেন ছাড়ার সময় নির্ধারিত হয়। তবে ট্রেনটি কমলাপুর রেলস্টেশন ছেড়ে যায় সকাল ৬টা ৫৫ মিনিটে।
এর আগেই সকাল ৬টা ২০ মিনিটে সিলেটগামী পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনের স্টেশন ছাড়ার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় ঈদযাত্রার।
সিলেটগামী পারাবত এক্সপ্রেস ছেড়ে যাওয়ার পর সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে ছাড়ার কথা ছিল চিলাহাটিগামী নীলসাগর এক্সপ্রেসের। কিন্তু ট্রেনটি সকাল ৭টা পর্যন্ত প্ল্যাটফর্মে আসেনি। সকাল ৭টার ট্রেন চট্টগ্রাম অভিমুখী সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে ছেড়ে গেছে।
সকাল ৭টার পর সঠিক সময়ে প্ল্যাটফর্মে অবস্থান করতে দেখা গেছে কিশোরগঞ্জগামী এগারো সিন্দুর প্রভাতী, দেওয়ানগঞ্জ অভিমুখী তিস্তা এক্সপ্রেস ও চট্টগ্রাম অভিমুখী মহানগর প্রভাতীকে। খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস আধাঘণ্টা দেরিতে ৮টা ৪৫ মিনিটে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ছেড়ে গেছে।
চট্টগ্রামগামী কর্ণফুলী কমিউটার পৌনে ৯টায় ছাড়ার কথা থাকলে সিডিউল বিপর্যয়ের কারণে কিছুটা দেরিতে ছেড়ে যায়।
সুন্দরবন এক্সপ্রেসে মা, বোন ও মামা-মামির সঙ্গে চুয়াডাঙ্গা যাচ্ছে ৯ বছরের রাফি। রাফি জানায়, তার নানার বাড়ি চুয়াডাঙ্গা ও দাদার বাড়ি মুজিবনগরে। প্রথমে নানাবাড়ি যাবে তারা। এরপর দাদার বাড়ি। সেখানেই ঈদ করবে।
১১ বছরের ফাহিম মা ও বোনের সঙ্গে গাজীপুর যাচ্ছে ঈদ করতে। ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুল কলেজের পঞ্চম শ্রেণির এই ছাত্র জানায়, খুব বেশি ভিড় নেই ট্রেনে। আরামেই ভ্রমণ করতে পারছে তারা।
ঈদযাত্রার প্রথম দিনের প্রথম ট্রেনেই বিলম্বে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ঘরমুখো মানুষ।
রংপুর এক্সপ্রেসে গাইবান্ধা যাবেন ওয়াহিদুজ্জামান। সকাল ৯টার দিকে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের ট্রেন ৯টা ১০ মিনিটের ছাড়ার কথা। কিন্তু এখনো ট্রেনের কোনো খবর নাই। ট্রেন প্ল্যাটফর্মেই আসেনি। মনে হয় এক ঘণ্টার মতো দেরি হবে।’
ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ১৩ এপ্রিল ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রির ঘোষণা দিয়েছিলেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করলেও ৩ মে ঈদ ধরে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয় ২৩ এপ্রিল থেকে।
ঈদের পর ৫ মে যারা ঢাকায় ফিরবেন, তাদের জন্য ১ মে, ৬ মের জন্য ২ মে, ৭ মের জন্য ৩ মে এবং ৮ মের জন্য ৪ মে টিকিট বিক্রি করা হবে ।