সাত মাস আগে শেষ হয়েছে প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মাণের কাজ। তবে স্থানীয়রা ব্যবহার করছেন সেতুর পাশেই তৈরি করা একটি বাঁশ-কাঠের সাঁকো। কারণ নবনির্মিত সেতুর সঙ্গে নেই সংযোগ সড়ক।
ঠিকাদার ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) বলছে, স্থানীয়রা জায়গা না ছাড়ায় সংযোগ সড়ক নির্মাণ হয়নি।
বরগুনার বামনা উপজেলার রামনা ইউনিয়নের উত্তর রামনা, খোলপটুয়া, গোলাঘাটা ও ডৌয়াতলার বাসিন্দারা রামনা খালের ওপর দিয়ে যাতায়াত করেন।
খালের দক্ষিণ পারে গোলাঘাটা-ডৌয়াতলা সড়ক এবং উত্তর পারে উত্তর রামনা-খোলপটুয়া সড়ক। পাশেই রামনা শেরেবাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়ে অন্তত ৫ শ শিক্ষার্থী।
এলজিইডির বরগুনা কার্যালয়ের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালের জুন মাসে রামনা খালের ওপর সেতু নির্মাণের জন্য ২ কোটি ৪৯ লাখ টাকা প্রাক্কলন ব্যয়ের অনুমোদন দেয় এলজিইডি। এমএম ট্রেডার্স নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি পায়।
২০১৮ সালের শেষ দিকে পুরোনো লোহার সেতু ভেঙে গার্ডার ব্রিজের কাজ শুরু হয়। তবে খুঁটি বসানো নিয়ে জটিলতায় কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ২০১৯ সালের শেষ দিকে আবার কাজ শুরু হয়। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে মূল সেতু নির্মাণের কাজ শেষ হয়।
তবে খালের দুই পারে সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করেই কাজ বন্ধ হয়ে যায়। তাই স্থানীয়দের পাশেই তৈরি অস্থায়ী সাঁকোটি ব্যবহার করতে হচ্ছে।
স্থানীয় কলেজছাত্রী সাদিয়া আক্তার বলেন, ‘প্রতিদিন এই খালের ওপর দিয়ে কলেজে যেতে হয়। খালের এক পাশে এসে গাড়ি থেকে নেমে সাঁকো পার হয়ে আবার অন্য পার থেকে আরেক গাড়িতে উঠতে হয়। এটা খুবই সমস্যার।’
রামনা শেরেবাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন বলেন, ‘স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আগে পুরোনো সেতু দিয়ে খাল পার হতো। ব্রিজ হওয়ার পর ব্যবহার করতে হচ্ছে বাঁশের সাঁকো। ছাত্র-ছাত্রীদের অনেকে সাঁকো পার হওয়ার সময় পড়ে আহত হচ্ছে। এখানে সংযোগ সড়ক নির্মাণ খুব জরুরি।’
সংযোগ সড়ক নির্মাণ না হওয়ার পেছনে স্থানীয়দেরই দায়ী করছেন ঠিকাদার ও কর্তৃপক্ষ।
ঠিকাদার অপূর্ব চন্দ্র অপু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দুই পাশে সংযোগ সড়কের জন্য যে জমি দরকার স্থানীয়রা তা ছাড়তে চাইছেন না। আমরা বিষয়টি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগকে জানিয়েছি। তারাও চেষ্টা করেছেন। স্থানীয়দের জমি না ছাড়ার কারণেই সংযোগ সড়ক নির্মাণ করতে দেরি হচ্ছে।
‘যত দূর জানি, নতুন করে অ্যাপ্রোচ সড়কের জন্য প্রাক্কলন ব্যয় প্রধান প্রকৌশলীর কাছে পাঠানো হয়েছে। সেটা অনুমোদন হলে আমরা কাজ করব।’
ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম জোমাদ্দার বলেন, ‘অ্যাপ্রোচ সড়ক তৈরির জন্য কয়েকজনকে ভিটেমাটির জমি ছাড়তে হবে। এ নিয়ে জটিলতায় কাজ বন্ধ। আমি ওই বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা ক্ষতিপূরণ পেলে জায়গা ছাড়বেন।’
এলজিইডির বরগুনা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী সুপ্রিয় মুখার্জী জানান, তিনি সেতুটির বিষয়ে খোঁজ নিয়েছেন। স্থানীয়রা জমি দিতে চাচ্ছেন না। সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য প্রাক্কলন ব্যয় বিভাগীয় প্রকৌশলী ও প্রধান প্রকৌশলীর কাছে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন হলেই কাজ শুরু হবে।