বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নিউ মার্কেটে সংঘর্ষে আসামি বিএনপি নেতা-কর্মীরা আত্মগোপনে

  •    
  • ২৬ এপ্রিল, ২০২২ ১৪:৩৫

সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের কাজে বাধা দেয়া ও হামলা, ভাঙচুরের অভিযোগে ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে গত ২০ এপ্রিল নিউ মার্কেট থানায় একটি মামলা করা হয়। এই ২৪ জনের সবাই বিএনপি নেতা-কর্মী। বিএনপি নেতা ও ব্যবসায়ী মকবুল হোসেন গ্রেপ্তার হয়েছেন। বাকিদের প্রায় সবাই আছেন আত্মগোপনে।

নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত মামলা হয়েছে পাঁচটি। এর মধ্যে কেবল একটিতে আসামিদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, বাকি চারটিতেই আসামিদের সবাই অজ্ঞাতপরিচয়।

একটি মামলায় যে ২৪ আসামির নাম উল্লেখ করেছে নিউ মার্কেট থানা পুলিশ, তাদের সবাই বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী। তবে এই আসামিদের অভিযোগ, রাজনৈতিক হয়রানির উদ্দেশ্যে পুলিশ তাদের নাম এজাহারে দিয়েছে। অবশ্য পুলিশের দাবি, সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতেই আসামি করা হয়েছে সবাইকে।

নিউ মার্কেটের দুটি ফাস্টফুডের দোকানে গত ১৮ এপ্রিল ইফতারের আগে টেবিল পাতা নিয়ে দুই কর্মচারীর বাগবিতণ্ডা হয়। এর জেরে এক কর্মচারীর ডাকে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের তিন কর্মীর নেতৃত্বে কিছু ছাত্র ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তবে তারা মারধরের শিকার হয়ে কলেজে খবর দিলে ছাত্ররা মার্কেটে হামলা চালান।

এ ঘটনার পরে ব্যবসায়ী ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রূপ নেয়। প্রায় দুই দিনের সংঘর্ষে প্রাণ হারান দুজন, সাংবাদিকসহ আহত হন অর্ধশতাধিক।

সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের কাজে বাধা দেয়া ও হামলা, ভাঙচুরের অভিযোগে ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে গত ২০ এপ্রিল নিউ মার্কেট থানায় একটি মামলা করেন থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইয়ামিন কবীর। ওই মামলায় অজ্ঞাতপরিচয়ে থাকা ঢাকা কলেজের ৬০০ থেকে ৭০০ ছাত্র এবং নিউ মার্কেট এলাকার ২০০ থেকে ৩০০ ব্যবসায়ী ও দোকান কর্মচারীকেও আসামি করা হয়েছে।

আদালত প্রাঙ্গণে শনিবার বিএনপি নেতা মকবুল হোসেন। ছবি: নিউজবাংলা

এ ছাড়া সংঘর্ষে নিহত নাহিদ মিয়ার চাচা মো. সাঈদ ২০ এপ্রিল অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেছেন। একই দিন বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে অজ্ঞাতনামা ১৫০ থেকে ২০০ জনের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করেন নিউ মার্কেট থানার উপপরিদর্শক মেহেদী হাসান।

চতুর্থ মামলাটি হয় ২১ এপ্রিল মধ্যরাতে। নিহত দোকান কর্মচারী মোরসালিনের বড় ভাই নুর মোহাম্মদের করা হত্যা মামলাটিতে অজ্ঞাতপরিচয় ১০০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। সবশেষ মামলাটি করেছেন সংঘর্ষের সময় ক্ষতিগ্রস্ত অ্যাম্বুলেন্স মালিক মো, সুজন। গত ২৩ এপ্রিল তার করা মামলাতেও আসামিদের পরিচয় উল্লেখ করা হয়নি।

পুলিশের কাজে বাধা দেয়া ও হামলা, ভাঙচুরের অভিযোগে করা মামলায় যে ২৪ আসামির নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তাদের মধ্যে মকবুল হোসেন, আমীর হোসেন, মিজান, হাজি জাহাঙ্গীর হোসেন পাটোয়ারী, টিপু, হাসান জাহাঙ্গীর মিঠু, হারুন হাওলাদার, শাহ আলম শন্টু, শহীদুল ইসলাম শহীদ, জাপানি ফারুক, মিজান ব্যাপারী ও আসিফের নাম এসেছে উসকানিদাতা হিসেবে। আর রহমত, সুমন, জসিম, বিল্লাল, হারুন, তোহা, মনির, বাচ্চু, জুলহাস, মিঠু, মিন্টু ও বাবুল সরাসরি ঘটনায় জড়িত বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

মামলার ১ নম্বর আসামি অ্যাডভোকেট মকবুল হোসেন সরদার নিউ মার্কেট থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি এবং বর্তমান ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। নিউ মার্কেটের ক্যাপিটাল ফাস্টফুড ও ওয়েলকাম ফাস্টফুড নামের দোকান দুটির মালিকও তিনি। এই দুই দোকান কর্মচারীদের বিরোধ থেকেই ঘটনার সূত্রপাত।

ওয়েলকাম নামের দোকানটি সরাসরি পরিচালনা করেন মকবুলের ছোট ভাই রফিক হোসেন সরদার, আর ক্যাপিটাল দোকানটি পরিচালনা করেন মকবুলের চাচাতো ভাই শহিদুল হোসেন সরদার।

বিএনপি নেতা ও ব্যবসায়ী মকবুল হোসেনকে ২২ এপ্রিল সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। তবে এর আগে মকবুল নিউজবাংলার কাছে দাবি করেন, উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিএনপি নেতা-কর্মীদের ফাঁসাতে এ মামলায় জড়ানো হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘সিসিটিভি ফুটেজে দোষীদের চেহারা স্পষ্ট থাকার পরও জড়িত ছাত্রদের নাম বাদ দিয়ে শুধু স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। ছাত্রলীগ কর্মীদের বাঁচাতে ঘটনাটিকে রাজনৈতিক রূপ দিয়ে বিএনপিকে জড়াচ্ছে প্রশাসন।’

মামলার এজাহারে আসামিদের রাজনৈতিক পরিচয় উল্লেখ না থাকলেও মকবুল দাবি করেন ২৪ জনই নিউ মার্কেট এলাকায় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।

তিনি জানান, দুই নম্বর আসামি আমীর হোসেন আলমগীর নিউ মার্কেট থানা যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক, মিজান ওই থানা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক, আনোয়ার হোসেন টিপু ছাত্রদলের সাবেক নেতা, জাহাঙ্গীর হোসেন পাটোয়ারী নিউ মার্কেট বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য, হারুন হাওলাদার নিউ মার্কেট থানা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, হাসান জাহাঙ্গীর মিঠু সাবেক সহসাংগঠনিক সম্পাদক ও ছাত্রদল নেতা, শন্টু ওরফে নান্টু সাবেক সহসভাপতি।

এ ছাড়া শহীদুল হক শহীদ ঢাকা কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি ও নিউ মার্কেট থানা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি, জাপানি ফারুক সাবেক প্রচার সম্পাদক, মিজান ব্যাপারী যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্যসচিব এবং নিউ মার্কেট ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক, রহমত ১৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক, সুমন ১৮ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সদস্য, জসিম থানা কমিটির সাবেক সদস্য।

মকবুল হোসেনের তথ্য অনুযায়ী, বিল্লাল ১৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক, হারুন ১৮ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের নেতা, তোহা নিউ মার্কেট থানা শ্রমিক দলের আহ্বায়ক, মনির স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি, বাচ্চু ও জুলহাস ১৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য এবং মিঠু, মিন্টু ও বাবুল ওয়ার্ড যুবদলের নেতা।

মকবুল হোসেন দাবি করেন, মামলার আসামিদের মধ্যে টিপু দীর্ঘদিন ধরে লন্ডনে আছেন। এ ছাড়া আসামিদের মধ্যে একজন ওমরাহ পালন করতে সৌদি আরব গিয়েছেন।

মামলার অন্য আসামিদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাঁচজন ছাড়া বাকি সবার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

মামলায় নিউ মার্কেট বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন পাটোয়ারীকে সংঘর্ষের উসকানিদাতা হিসেবে উল্লেখ করেছে পুলিশ।

নিউ মার্কেট কাঁচাবাজারকেন্দ্রিক এই বিএনপি নেতার নিউ মার্কেটে বরাদ্দ পাওয়া একটি দোকান আছে, যেটি তিনি ভাড়া দিয়েছেন। জাহাঙ্গীরের বাসা ধানমন্ডির রায়ের বাজার এলাকায়।

বিএনপির এই নেতার দাবি, যে রাতে নিউ মার্কেটের দুই ফাস্টফুডের দোকানে ঝামেলা তৈরি হয়, সেদিন তিনি নিজের বাসায় ছিলেন না, আগের দিন থেকেই কামরাঙ্গীর চরে বোনের বাসায় অবস্থান করছিলেন। আর ১৯ এপ্রিল তিনি ব্যক্তিগত কাজে গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরে চলে যান।

জাহাঙ্গীরের দাবি, টেলিভিশন, ফেসবুকের মাধ্যমে তিনি সংঘর্ষের খবর জানতে পারেন। ঘটনা সূত্রপাতের আগের দিন বোনের বাসায় অবস্থানের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন মামলার জন্য বিএনপির কেউই নিজ বাসায় থাকতে পারেন না।’

মামলায় তার বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন জাহাঙ্গীর।

মামলার আরেক আসামি মহানগর বিএনপির সাবেক সহসাংগঠনিক সম্পাদক ও ছাত্রদল নেতা হাসান জাহাঙ্গীর মিঠুও দাবি করছেন, তিনি ঘটনার সূত্রপাতের সময় বাসায় ছিলেন না।

মোবাইল ফোনে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, 'আমি ঘটনার সময় ঢাকাতেই ছিলাম না। আমার বাসা ধানমন্ডির জিগাতলায়। ওই দিন সন্ধ্যায় আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গিয়েছিলাম, সেখানে সেহরি খেয়েছি। এর পরদিন বিকেলে ঢাকায় ফিরছিলাম, কিন্তু মামলা হওয়ার পর কুমিল্লায় চলে এসেছি।‘

মামলার অন্য আসামিদের অবস্থানের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মামলার পর তারা সবাই ফোন নম্বর পরিবর্তন করেছেন।’

এই মামলার আরেক আসামি মো. আনোয়ার হোসেন টিপুর সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করা গেছে। টিপু ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদ্য সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রদল নেতা। উসকানিদাতা হিসেবে তার নাম এসেছে এজাহারে।

হোয়াটসঅ্যাপে ভিডিও কলে যুক্ত হলে দেখা যায়, টিপুর অবস্থান লন্ডনে। মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দেখতেই তো পারছেন, আমি এখন লন্ডনে। আমি ২০১৫ সালের ১ মার্চ থেকে লন্ডনে আছি। আমার বিরুদ্ধে ১৩ মামলা চলমান, মামলা থেকে বাঁচতে বিদেশ পাড়ি জমিয়েছি।

‘মামলার কারণে আমার দেশে ফেরার সুযোগ নেই। না বুঝেই পুলিশ এ মামলায় আমার নাম যুক্ত করেছে। এখন বুঝতে পারছে কাঁচা কাজ করে ফেলেছে।‘

লন্ডন থেকেও তো উসকানি দেয়া সম্ভব, এমন মন্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি কীভাবে উসকানি দিয়েছি সেটা তারা প্রমাণ করুক।’

সংঘর্ষে সরাসরি যুক্ত হিসেবে মামলায় হারুন নামে বিএনপির এক নেতার নাম রয়েছে। মোবাইল ফোনে কল করা হলে তিনি দাবি করেন, ‘তিনি মামলার আসামি নন, অন্য কোনো হারুনের কথা বলা হয়েছে।’

রাজনৈতিক পরিচয় জানতে চাইলে তিনি নিজেকে ব্যবসায়ী দাবি করে ফোন কেটে দেন, পরে আর ফোন ধরেননি।

রহমত নামের একজনকে সেদিনের ঘটনায় সরাসরি যুক্ত থাকার কথা অভিযোগে উল্লেখ করেছে পুলিশ। তার পুরো নাম রহমত উল্লাহ। তিনি নিউ মার্কেট থানা বিএনপির সাবেক প্রচার সম্পাদক।

রহমত নিউজবাংলার কাছে দাবি করেন, ব্যাবসায়িক কারণে তিনি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে দীর্ঘদিন জড়িত। তবে মিটিং মিছিলে অংশ নেয়া ছাড়া অন্য কোনো রাজনৈতিক তৎপরতায় কখনও অংশ নেননি। তার বিরুদ্ধে এর আগে কোনো মামলা বা জিডিও হয়নি।

রহমত বলেন, ‘নিউ সুপার মার্কেটে একটি দোকান ভাড়া নিয়ে আমি কাপড়ের ব্যবসা করছি। গণ্ডগোল শুরুর পরপরই দোকান বন্ধ করে পল্টনের বাসায় চলে যাই। পরদিন মার্কেট বন্ধ থাকায় আমি আর বাসা থেকে বের হইনি।’

তিনি অভিযোগ করেন, মামলার অন্যতম আসামি ও নিউ মার্কেট থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাজি জাহাঙ্গীর হোসেন পাটোয়ারীর অনুসারী হওয়ায় তাকেও মামলায় জড়ানো হয়েছে।

মামলার বাকি সব আসামির মোবাইল ফোন নম্বর বন্ধ থাকায় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি নিউজবাংলা।

মামলায় আসামি হিসেবে শুধু বিএনপি নেতা-কর্মীদের নাম উল্লেখের কারণ জানতে চাইলে পুলিশের নিউ মার্কেট জোনের সহকারী কমিশনার শরীফ মোহাম্মদ ফারুকুজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এখানে তো কারও রাজনৈতিক পরিচয় উল্লেখ করা হয়নি। এত বড় সংঘর্ষের পর গোয়েন্দারা প্রাথমিক তদন্ত করে উসকানিদাতা ও সরাসরি সম্পৃক্তদের নাম পেয়েছেন। সেই তালিকা ধরেই মামলা হয়েছে।

‘এখন আমরা বিশদ তদন্ত করে দেখব। যারা নিরপরাধ তাদের নাম পরে বাদ যাবে, আর জড়িতদের শাস্তি হবে।’

ঘটনার শুরুতে সিসিটিভি ফুটেজে ছাত্রদের অনেককেই চিহ্নিত করা গেলেও তাদের নাম কেন মামলায় নেই, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমরা তখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যস্ত ছিলাম। আর ঘটনার ছায়া তদন্ত করে গোয়েন্দারা রিপোর্ট দিয়েছেন। সেখানে আাসামিদের যার যার নাম এসেছে আমরা মামলায় শুধু তাদের নামই দিয়েছি। মামলায় ছাত্রদের অজ্ঞাতপরিচয় বলা হয়েছে, তাই জড়িত ছাত্রদেরও ছাড় দেয়া হবে না।’

মাঠপর্যায়ের প্রাথমিক তদন্তের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির একটি বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা শুধু ঘটনাটি কীভাবে শুরু হলো তা তদন্ত করেছি। টানা সংঘর্ষ চলার কারণে প্রথমেই ঘটনা সম্পর্কে আমরা কোনো স্পষ্ট ধারণা পাচ্ছিলাম না। তাই শুরুতেই দুই দোকানের যারা ঝামেলা পাকিয়েছে, তাদের শনাক্ত করতে চাচ্ছিলাম।‘

মকবুল হোসেনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘দুই দোকানের মালিক হওয়ায় এবং কর্মচারীদের বিরোধ মীমাংসা না করে ঘটনাকে বড় হতে দেয়ার দায় তিনি কোনোভাবেই এড়াতে পারেন না। তবে সেখানে আমরা পলিটিক্যাল কোনো ইস্যু বা ইন্ধন পাইনি, তাই মকবুলের রাজনৈতিক পরিচয় উল্লেখ করা হয়নি।’

নিউ মার্কেটে বাইরে পুলিশ ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষকে আলাদা ঘটনা বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত করেছে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা। একটি সংস্থার এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঘটনার শুরুর দিকে অনেক তথ্য বিশ্লেষণ করে আমরা এই ২৪ আসামির সংশ্লিষ্টতা পেয়েছি। নিউ মার্কেটের দুই দোকানের কর্মচারীরা নিজেদের বিবাদে ঢাকা কলেজের ছাত্রদের ডেকে আনে। তবে ছাত্ররাই উল্টো মার খান। এর জেরে উত্তেজনা আরও ছড়িয়ে যায়।’

এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা আদালতে সব তথ্য-প্রমাণ তুলে ধরব। আসামিরা যদি পারেন, সেখানে নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করবেন।’

এ বিভাগের আরো খবর