বিএনপিকে দেশের সবচেয়ে বড় শত্রু হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ। তিনি বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শুধু হত্যা করা নয়, তার স্বপ্নের সোনার বাংলাকে পরাজিত করতেই জন্ম হয়েছে বিএনপির।
তবে তাদের যেকোনো ষড়যন্ত্র রুখে দিতে যুবলীগের নেতাকর্মীরা সজাগ ও সতর্ক আছেন বলেও জানান তিনি।
রাজধানীর খিলগাঁওয়ের ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডে সোমবার সকালে সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষের মাঝে যুবলীগের ঈদ উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ পরশ বলেন, ‘মেজর জিয়াউর রহমান, খন্দকার মোশতাক এবং দেশের ভেতরে কিছু প্রতিবিপ্লবী, স্বাধীনতাবিরোধী চক্র, জামায়াত ইসলাম ও মুসলিম লীগের অনুসারী, পাকিস্তানি মতাদর্শে বিশ্বাসী আমলা এবং পাকিস্তান-আমেরিকার এজেন্টদের ষড়যন্ত্রের শিকার হন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও তার পরিবার।’
জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করে প্রতিবিপ্লবী এবং স্বাধীনতাবিরোধী, জামায়াতে ইসলামী ও মুসলিম লীগের অনুসারীদের শক্তিশালী করে তাদের গাড়িতে পতাকা ও ক্ষমতা তুলে দেয় বলেও মন্তব্য করেন যুবলীগ চেয়ারম্যান।
তিনি বলেন, ‘তাই আমি বলি, বিএনপি এ দেশের সবচেয়ে বড় শত্রু। তারা কখনও, কোনোদিন এ দেশের ভালো চায়নি। বঙ্গবন্ধুকে শুধু হত্যা নয়, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাকে পরাজিত করার জন্যই বিএনপি নামক সংগঠনটির সৃষ্টি। ৭৫-এর হত্যাকাণ্ড ছিল মহান মুক্তিযুদ্ধে বাঙালিদের পরাজিতদের জঘন্যতম প্রতিশোধ।’
দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত করা বিএনপি-জামায়াতের আসল উদ্দেশ্য বলেও মনে করেন শেখ পরশ। তিনি বলেন, ‘বিএনপির মুখে যখন এই সরকারের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র হনন করার অভিযোগ শোনা যায় তখন হাসি পায়। কারণ বিএনপি সেই দল, যাদের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান একটা নির্বাচিত রাষ্ট্রপ্রধান, জাতির পিতাকে হত্যা করে ক্ষমতা দখল করেছিলেন। বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা এ দেশে হত্যা, গুম ও সন্ত্রাসের রাজনীতি কায়েম করেছিলেন। রেফেরেন্ডাম দিয়ে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার চেষ্টা করেছিলেন।’
পরবর্তী সময়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও একই পরিকল্পনা ও নীলনকশা অনুযায়ী দেশকে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এখনও বিএনপি-জামায়াত ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দেশে অরাজকতা করে ক্ষমতায় আসার পাঁয়তারা করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি ঢাকা কলেজের ছাত্রদের সঙ্গে নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের পেছনে তাদের ষড়যন্ত্রের প্রমাণও বেরিয়ে এসেছে।’
বিএনপি-জামায়াত জোটের এসব ষড়যন্ত্রের বিষয়ে যুবলীগ সজাগ আছে বলে জানান তিনি।
শেখ পরশ বলেন, ‘এ দেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে যে অগ্রযাত্রা তা আমরা নস্যাৎ হতে দেব না। ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে সাধারণ মানুষকে বঞ্চিত করার তাদের সেই অতি পরিচিত নীলনকশা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ যে কোনো মূল্যে প্রতিরোধ করবে।’
অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছেন এবং তিনি এ দেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে দিন-রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। শেখ হাসিনার দক্ষ ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণে ধাপে ধাপে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।’
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ, অসহায় কৃষকের ধান কেটে ঘরে তুলে দেয়া; করোনার মহামারিতে খাদ্য, চিকিৎসা, বিনা মূল্যে অক্সিজেন ও অ্যাম্বুলেন্সসহ করোনায় মৃত মানুষের দাফন ও সৎকারে যুবলীগ সব সময় মানুষের পাশে ছিল বলে জানান সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল।
নিখিল বলেন, ‘যুবলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলতে চাই, জামায়াত-বিএনপির সব ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙা জবাব দিয়ে সাধারণ মানুষের পাশে থাকবেন। আপনারা আগামীতে ভোটের মাধ্যমে নৌকাকে আবার বিজয়ী করবেন।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য নবী নেওয়াজ, মোয়াজ্জেম হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার মৃণাল কান্তি জোদ্দার, তাজউদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুব্রত পাল, বদিউল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মো. মাজহারুল ইসলাম, ডা. হেলাল উদ্দিন, সাইফুল সোহাগ, ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানা, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজা, কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদসহ আরও অনেকে।