বয়স হয়েছে ৭০। তাতে কী! যার মনের জোর থাকে, আনন্দ থাকে তার জন্য বয়স নিছক সংখ্যামাত্র। এই বয়সেও মনের আনন্দে করতে পারেন যা খুশি।
আর এ মনের জোরেই চট্টগ্রামের শত বছরের ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলি খেলতে হাটহাজারীর চাড়িয়া থেকে ছুটে এসেছেন ৭০ বছরের মফিজুর রহমান মফিজ বলী। ১২ বছর বয়স থেকেই এ খেলায় অংশ নিয়ে আসছেন তিনি।
কোভিড মহামারির কারণে দুই বছর অপেক্ষার পর চট্টগ্রামে ১১৩তম জব্বারের বলি খেলা আজ সোমবার।
বিকেলে বেলুন উড়িয়ে এর উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম পুলিশ কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর। এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী।
সোমবার দুপুর আড়াইটায় লালদীঘি চত্বরে বাদ্যের তালে তালে নেচে বলী খেলার রিং প্রাঙ্গণে প্রবেশ করেন মফিজ বলি। এসময় তার জুটি হিসেবে সঙ্গে ছিলেন খাজা আহমদ বলি। একই বয়সী খাজা বলী ১০ বছর বয়স থেকে বলি খেলায় অংশ নিচ্ছেন বলে দাবি তার।
মফিজ বলী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘করোনার কারণে দুই বছর বলি খেলা হয়নি। সেই পাকিস্তান আমল থেকে এই বলী খেলায় অংশ নিয়ে থাকি। সেই ধারাবাহিকতা বুড়ো বয়সেও মনের আনন্দের জন্য হাটহাজারী থেকে চলে এসেছি। খাজা আহমদ বলী জুটি হিসেবে প্রতি বছরের মতো এবারও আমার সঙ্গে এসেছেন।’
পাকিস্তান আমল থেকে বলি খেলা শুরু করে এখন পর্যন্ত মোট তিন বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন বলে দাবি তার।
দেহের বয়স বাড়লেও মনের বয়সে এখন সুঠাম দাবি করে খাজা আহমদ বলী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বলী খেলায় শক্তি ও কৌশল দুটোই লাগে। তাই বৃদ্ধ বয়সে অতীত অভিজ্ঞতা নিয়ে জয়ী হতে এসেছি।’
এবার বলী খেলায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ১০০ বলী অংশ নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। এদিকে বলী খেলাকে কেন্দ্র করে রোববার থেকেই শুরু হয়েছে লোকজ মেলা। যা চলবে মঙ্গলবার পর্যন্ত। মেলায় বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়েছেন প্রায় ৩০০ ব্যবসায়ী।
১৯০৯ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত টানা ১১০ বছর চট্টগ্রামের লালদিঘির মাঠে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছিল ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলি খেলা। এরপর করোনা মহামারির কারণে দুই বছর বন্ধ থাকে এটি। করোনা প্রকোপ প্রায় নিয়ন্ত্রনের আসায় আবারও হচ্ছে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী এ আয়োজন।