এবার ঈদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে ঘর পাচ্ছেন ভূমিহীন ও গৃহহীনরা। দেশের প্রায় ৩৩ হাজার আশ্রয়হীন মানুষ এ উপহার পাচ্ছেন।
মাথা গোঁজার আশ্রয় পাওয়াকে ঈদের সেরা উপহার মনে করছেন গৃহহীনরা। তাদের একজন ফরিদপুরের নগরকান্দার কাইচাইল ইউনিয়নের পোড়াদিয়া বালিয়ার জাকির হোসেন।
দুই সন্তানের জনক শারীরিক প্রতিবন্ধী এ ব্যক্তি অন্যের বাড়িতে ছোট খুপড়ি ঘর করে থাকতেন। এবার সেই জাকির প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহারের ঘর পাবেন।
প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে সোমবার নিউজবাংলাকে জাকির বলেন, ‘ছোটকাল থেকে মাইনষের বাড়িতে ঘর করে থাকতাম। অনেক সময় তাড়ায়া দিত। কারও দয়া হইলে জাগা দিত, না হইলে দিত না।
‘এইবার প্রধানমন্ত্রীর ঘর পাব, অনেক খুশি লাগতাছে। নিজের পাকা ঘরে ঈদ করব। এডাই আমার জীবনে বড় খুশি, আনন্দ।’
বালিয়ায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীন ১১০টি ঘর দলিলসহ আশ্রয়হীনদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।
ঘর বরাদ্দ পাওয়া বালিয়ার বাসিন্দা ফরিদা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী নাই। সন্তান নিয়ে সরকারের খাস জমিতে থাকতাম। এবার ঘর পাব, মেলা খুশি। প্রধানমন্ত্রীকে আল্লাহ সুখে রাখুক।’
মুজিব জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন পরিবারের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে দুই শতক জমিসহ আধাপাকা নতুন ঘর।
আনুষ্ঠানিকভাবে মঙ্গলবার ঈদ উপহার হিসেবে জমির দলিলসহ বাড়ি হস্তান্তর করবেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায়ে ৬৫ হাজার ৪৭৪টি পরিবারের জন্য ঘর তৈরি করা হচ্ছে। এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন এলাকায় অর্ধেকের মতো ৩২ হাজার ৯০৪টি ঘর প্রস্তুত হয়ে গেছে। এগুলোই ঈদ উপহার হিসেবে তুলে দেয়া হচ্ছে। বাকিগুলোর নির্মাণকাজও শেষের পথে।
ঘর ও জমির দলিল হস্তান্তর উপলক্ষে চট্টগ্রাম, বরগুনা, সিরাজগঞ্জ এবং ফরিদপুরের একটি করে আশ্রয়ণ প্রকল্পে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
‘মুজিববর্ষে কেউ গৃহ ও ভূমিহীন থাকবে না’—প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই ঘোষণা বাস্তবায়নে প্রায় ৯ লাখ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ঘর করে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছিল সরকার।
গত বছরের ২৩ জানুয়ারি আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় প্রথম পর্যায়ে সারা দেশের ভূমি ও গৃহহীন ৬৬ হাজার ১৮৯টি পরিবারের হাতে দুই শতাংশ জমি ও ঘর তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।
একই বছরের ২০ জুন আরও ৫৩ হাজার ৩৪০টি পরিবারকে জমি ও নতুন ঘর দেয়া হয়।
অর্থাৎ আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের প্রথম দুই পর্যায়ে এক লাখ ১৭ হাজার ৩২৯টি পরিবার ঘর পেয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় তৃতীয় পর্যায়ে আরও ৬৫ হাজার ৪৭৪টি একক গৃহ নির্মাণের কাজ চলছে। এর মধ্যে চরাঞ্চলে বিশেষ নকশায় নির্মাণ করা হচ্ছে এক হাজার ৪২টি ঘর।