বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পুরো টিম নিয়ে ভোট দেখতে আসুন, যুক্তরাষ্ট্রকে ঢাকা

  •    
  • ২৪ এপ্রিল, ২০২২ ২১:০১

রাষ্ট্রদূত হাস বলেন, ‘আমি স্পষ্ট করে বলছি, বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্র কারও পক্ষ নেবে না। আমাদের খুশির বিষয়টি খুব সাধারণ. বাংলাদেশের মানুষ ভোটের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া পাবে, এটাই আমাদের চাওয়া।’

বিভিন্ন সময় বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলা যুক্তরাষ্ট্রকে পুরো টিম নিয়ে এসে বাংলাদেশে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন।

রোববার রাজধানীর বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) উদ্যোগে ‘বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক: বর্ধিত সহযোগিতা ও অগ্রসর অংশীদারিত্ব’ শীর্ষক এক সেমিনারে মন্ত্রী তার এমন আহ্বান জানান।

দেশের দশম সংসদ নির্বাচনের পর বিরোধী দল বিএনপি অভিযোগ তোলেন, নির্বাচনে তাদের মাঠেই নামতে দেয়নি সরকার, পাশাপাশি তাদের ভোট দিতেও বাধা দেয়া হয়েছে, রাতেই ব্যালট বাক্স ভরে রেখে অনেক স্থানে দিনে কাউকে প্রবেশই করতে দেয়া হয়নি ভোট কেন্দ্রে।

পরে সে নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছিল, তারা বাংলাদেশে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন প্রত্যাশা করে।

সেসব বিষয় তুলে ধরে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসকে উদ্দেশ্য করে ড. মোমেন বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে আপনারা প্রশ্ন তোলেন। আমাদের আগামী নির্বাচনে আপনাদের পুরো টিম নিয়ে আসেন। আমরা স্বাগত জানাই।’

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষনে আসা বিদেশি পর্যবেক্ষকদের বাংলাদেশ স্বাগত জানাবে বলেও জানান মোমেন।

তিনি বলেন, ‘যে কোনো দেশ চাইলেই এই নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে পারবে।’

অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও ভূরাজনৈতিক অবস্থানের জন্য বিশ্বে বাংলাদেশের গুরুত্ব দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানান যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।

এ জন্য বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সহযোগিতা এবং অংশীদারিত্বমূলক সম্পর্ক ভবিষ্যতে বজায় থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্র মুক্ত ও অবাধ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের অগ্রগতিতে এবং উভয় দেশের প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলায় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়নে প্র‍য়াস চালিয়ে যাবে বলে মনে করেন তিনি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ব‌লেন, ‘আমি আনন্দিত যে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আগামী নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের স্বাগত জানাতে চেয়েছেন। আন্তর্জাতিক মানের নির্বাচন হওয়া মানে, যে দিন ভোট, শুধু সেদিনের বিষয় এটা নয়। আপনারা জানেন, ইতিমধ্যে বাংলাদেশে নির্বাচনি প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে।

‘সত্যিকারের গণতান্ত্রিক নির্বাচনে জনগণের সুযোগ থাকা উচিত। সাংবাদিকরা যেন স্বাধীনভাবে তাদের অনুসন্ধানমূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করতে পারেন, সে দিকে নজর দেয়া উচিত। নাগরিক সমাজের সংগঠনগুলো যেন তাদের বিস্তৃত কার্যক্রম চালাতে পারে, সে রকম পরিবেশ থাকতে হবে।’

রাষ্ট্রদূত হাস বলেন, ‘আমি স্পষ্ট করে বলছি, বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্র কারও পক্ষ নেবে না। আমাদের খুশির বিষয়টি খুব সাধারণ. বাংলাদেশের মানুষ ভোটের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া পাবে, এটাই আমাদের চাওয়া।’

সেমিনারে বক্তব্যে বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধার বিষয়টিও তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন।

বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের জিএসপি সুবিধা আমরা পেতে চাই। এই জিএসপি সুবিধা পেতে শ্রমমান উন্নয়নে কী করতে হবে, সেটা যুক্তরাষ্ট্র জানালে আমরা বাস্তবায়ন করব।’

তিনি বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রায় যুক্তরাষ্ট্র এক গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারের ভূমিকা পালন করেছে।

মিয়ানমারের মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের মানব নিরাপত্তা অবস্থা বিষয়ক জাতিসংঘ সাধারণ সম্মেলনের প্রস্তাবে সমর্থন দেয়া এবং বাইডেন প্রশাসন কর্তৃক রোহিঙ্গাদের উপর গণহত্যার স্বীকৃতি দেয়ার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

ইন্দো -প্যাসিফিক স্ট্রাটেজি এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ বলে মনে করেন তিনি। এই অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ও সকল দেশের জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরিতে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র একত্রে কাজ করবে বলে আশা প্রকাশ করেন মোমেন।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিআইআইএসএস মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মাদ মাকসুদুর রহমান।

তিনি বলেন, ‘১৯৭২ সালের ৪ এপ্রিল দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক ক্রমান্বয়ে বিবর্তিত হয়ে একটি অংশীদারিত্বমূলক সম্পর্কে পরিণত হয়েছে।’

‘ইভোলভিং বাংলাদেশ ইউএস রিলেশনস’ শীর্ষক বিষয়ে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক রোকসানা কিবরিয়া।

‘বাংলাদেশ ইউএস পার্টনারশিপ ফর এনহ্যান্সেড সিকিউরিটি ইন সাউথ এশিয়া’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত ড. সাখওয়াত হোসেন।

‘কসটেমপোরারি ডায়নামিকস অফ বাংলাদেশ ইউএস রিলেশনস অ্যান্ড দি ওয়ে ফর ওয়ার’ শীর্ষক বক্তব্য উপস্থাপন করেন সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবীর।

বিআইআইএসএস চেয়ারম্যন রাষ্ট্রদূত কাজী ইমতিয়াজ হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক একটি লম্বা পথ পাড়ি দিয়েছে, যার ভিত্তি ছিল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাস৷’

২০১৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায়, বিশেষত তাদের মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে সহযোগিতা করায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা, বৈদেশিক দূতাবাসের প্রতিনিধি, সাবেক কূটনীতিক, সামরিক কর্মকর্তা, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী গবেষণা সংস্থার প্রতিনিধিরা তাদের মতামত তুলে ধরেন।

সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ ও জবাবদিহিতা ছাড়া নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সুযোগ নেই

সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ ও জবাবদিহিতা ছাড়া র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস।

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আইনপ্রয়োগ বিষয়ে আমি সৎভাবে বলতে চাই, সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ ও জবাবদিহিতা ছাড়া র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের কোনো সুযোগ নেই। আমরা এমন একটি র‌্যাব চাই, যারা সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধে যেমন কঠোর থাকবে, তেমনি কঠোর থাকবে মৌলিক মানবাধিকারের প্রতি সম্মান বজায় রাখতে।’

তিনি বলেন, ‘কিন্তু র‌্যাবের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার মানে এই নয় যে, আমরা জোরদার আইন প্রয়োগ বিষয়ে আমাদের ইতোমধ্যে স্থাপিত শক্তিশালী নিরাপত্তা সহযোগিতা বাড়াতে পারব না। আন্তর্জাতিক অপরাধ ও সন্ত্রাসবাদের দমন, সীমান্ত নিরাপত্তা বৃদ্ধি এবং সহিংস চরমপন্থা প্রতিরোধে আমরা বাংলাদেশের সাথে কাজ করে যাব।’

সন্ত্রাসবাদ দমন ও আন্তর্জাতিক অপরাধ দমন পুলিশ, সন্ত্রাসবাদ-বিরোধী ইউনিট এবং চট্টগ্রাম, সিলেট ও রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিটগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতামূলক কার্যক্রমে সহায়তা প্রদান অব্যাহত রেখেছে বলেও জানান হাস।

এ বিভাগের আরো খবর