ট্রেনে ঈদযাত্রার টিকিট কিনতে শনিবার বিকেলে কমলাপুর রেলস্টেশনে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন রাফসান। দীর্ঘ সময় অপেক্ষা। এরপর রোববার দুপুরে বাসায় ফিরে গেছেন তিনি। তবে টিকিটের বদলে তার সঙ্গী হয়েছে হতাশা।
আগের দিন বিকেল ৪টা থেকে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে ইফতার-সেহরি করেছেন এখানেই। রোববার দুপুর ১২টার দিকে খালি হাতে ফিরেছেন তিনি। সব মিলিয়ে এই যুবক টিকিটের জন্য লাইনে ছিলেন প্রায় ২০ ঘণ্টা।
জয়পুরহাটে যাওয়ার জন্য টিকিট কাটতে আসা রাফসান দুপুরে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গতকাল বিকেল ৪টায় এসে দাঁড়িয়েছি। টিকিটপ্রার্থীরা উদ্যোগ নিয়ে সিরিয়াল মেইনটেইন করছিল। আমি যখন আসি তখন ১৩০ থেকে ১৩৫ জনের সিরিয়াল ছিল। আজকে টিকিট বিক্রি শুরুর পর ৬০ জনের মতো টেনেছে। অর্থাৎ ২০০ থেকে ২৫০টি টিকিট দেয়ার পর বলছে টিকিট নাই।’
ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘প্রায় ২০ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। ইফতারি ও সেহরি এখানেই করেছি। তবুও যেন টিকিটটা পাই। কিন্তু সব পরিশ্রম, কষ্ট জলে গেল। আমি চরমভাবে হতাশ! এতক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট না পাওয়ার কষ্ট বলে বোঝানোর নয়। কি করব, কি সিদ্ধান্ত নেব বুঝতে পারছি না।’
দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট পাননি একটি বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক গালিব উন নূর। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘ভোর ৪টা ২০ মিনিটে এসে এখানে দাঁড়িয়ে আছি। এখন বলছে টিকিট নাই। যাব উত্তরবঙ্গে। উত্তরবঙ্গের লালমনিরহাট, পঞ্চগড় এক্সপ্রেস, বা অন্য কোনো ট্রেনের টিকিট নাই।’
গালিব উন নূর বলেন, ‘লাইনে দাঁড়ানোর পর অনলাইনে ঢুকে টিকিট কাটার চেষ্টা করেছি। কিন্তু সার্ভার জ্যাম। ঢোকা যায় না। ঢুকতে পারলেও পরে আর টিকিট পাওয়া যায়নি। আধাঘণ্টা পর টিকিট উধাও! ’
হতাশা নিয়ে তিনি বলেন, ‘এখন কালকের জন্য লাইন দিব, যদি কালকে পাওয়া যায়৷ এ ছাড়া আর কিছু করার নাই।’
কথা হয় টিকিটপ্রত্যাশী বুলবুলের সঙ্গে। তিনিও ভোর ৪টায় এসে ১২টা পর্যন্ত লাইনে দাঁড়িয়ে খালি হাতে ফেরেন। নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মন খারাপ করে ফেরা ছাড়া কোনো উপায় নাই। পরে এসে কালকের জন্য আবার লাইন দেব, যদি কালকেরটা পাই।’
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, ঢাকার পাঁচটি স্টেশনে আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঈদযাত্রার ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু হয় শনিবার। ২৮ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে রোববার। ২৯ এপ্রিলের টিকিট কেনা যাবে ২৫ এপ্রিল।
৩০ এপ্রিলের টিকিটের জন্য যেতে হবে ২৬ এপ্রিল। আর ১ মে যারা ভ্রমণ করতে চান তাদের ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাবে ২৭ এপ্রিল।