‘রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে বিএনপি নেতা মকবুল হোসেন সরদার কোনোভাবেই জড়িত নন। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নিউমার্কেট থানা বিএনপির নেতাকর্মীদের তালিকা থেকে তার নাম মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।’
শনিবার মহানগর হাকিম মো. মামুনুর রশিদের আদালতে মকবুল হোসেনের রিমান্ড ও জামিন আবেদনের শুনানির সময় আসামির আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইকবাল হোসেন এমনটা দাবি করেন। শেষে বেলা আড়াইটার দিকে
রিমান্ড আবেদনের বিরোধিতা করে তিনি আদালতকে বলেন, ‘দেশের প্রতিটি থানায় বিএনপির নেতাকর্মীদের একটি তালিকা থাকে। কোনো ঘটনা ঘটলেই মামলায় সেসব তালিকা থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়। নিউ মার্কেট থানার এমন একটি তালিকা থেকে মকবুলকে আসামি করা হয়েছে।’
আইনজীবী ইকবাল হোসেন বলেন, ‘মকবুল হোসেন শুধু ওই দোকান দুটির মালিক। দোকানের ভাড়াটিয়াদের কর্মীরা ঝামেলা করেছে। এর দায় কোনোভাবেই দোকান মালিকের হতে পারে না। গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়া ওই ঘটনার ভিডিও ফুটেজসহ অনেক ফুটেজে সংঘর্ষে জড়িতদের চেহারা স্পষ্ট বোঝা গেলেও ঢাকা কলেজের ছাত্র ও ব্যবসায়ীদের অজ্ঞাত বলা হচ্ছে। আর শুধু রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করতেই মকবুল হোসেনকে এই মামলায় জড়ানো হয়েছে।’
আদালতকে আইনজীবী জানান, মকবুল হোসেন হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসসহ নানা রোগে আক্রান্ত। তার ওপেন হার্ট সার্জারিও হয়েছে। গ্রেপ্তারের পর থেকে তিনি শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। প্রয়োজনীয় মেডিক্যাল কাগজ আদালতে দাখিল করে তার চিকিৎসা প্রয়োজন উল্লেখ করে রিমান্ড আবেদন বাতিল করে জামিন চান আইনজীবী ইকবাল হোসেন।
এর আগে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হেমায়েতউদ্দীন হিরন আদালতে বলেন, দুই দোকানের মালিক হওয়ায় মকবুল পুরো ঘটনার দায় কোনোভাবেই এড়াতে পারেন না। সেই সঙ্গে ঘটনা শুরুর পর পরই গোয়েন্দারা মাঠে কাজ করে নিশ্চিত হয়েছেন যে সংঘর্ষে তার উসকানি ছিল। অতীতেও তার বিরুদ্ধে এমন উসকানি দিয়ে সংঘর্ষ বাধানোর জন্য ছয়টি মামলা রয়েছে।’
এটা কোনো রাজনৈতিক মামলা নয় উল্লেখ করে আইনজীবী হিরন বলেন, ‘এমনটা হলে এজাহারে তার রাজনৈতিক পরিচয় দেয়া হতো। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং অন্য আসামিদের পরিচয় ও ঠিকানা জানতে আসামি মকবুল হোসেনকে রিমান্ডে নেয়া প্রয়োজন।’
শুনানি শেষে তাৎক্ষণিক কোনো সিদ্ধান্ত না জানিয়ে আদালত নথি পর্যালোচনা করার জন্য কিছুটা সময় নেয়। এরপর বেলা আড়াইটার দিকে মকবুলের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।