বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ফুলবাড়িয়া রেল কাউন্টার সরব ৫৪ বছর পর

  •    
  • ২৩ এপ্রিল, ২০২২ ১৬:৫৭

ঢাকার বঙ্গবাজারের কাছে রেলপথ পরিদর্শন অধিদপ্তরের পুরোনো ভবনের পাশেই নতুন একটি টিনশেডে কাউন্টার স্থাপন করা হয়েছে। কাউন্টারের সামনের অংশে যাত্রীদের জন্য শামিয়ানা টানিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে দীর্ঘদিনের তফাতে এখানে টিকিট কাউন্টার চালু হওয়ায় মানুষকে জায়গাটি খুঁজে পেতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

ফুলবাড়িয়া রেলস্টেশন, যার পরিচিতি ছিল ঢাকা রেলস্টেশন নামে। কিন্তু ব্যবহার না হওয়ায় তা ভুলতে বসেছিল মানুষ। ঈদযাত্রায় অগ্রিম টিকিট বিক্রিকে কেন্দ্র করে ৫৪ বছর পর সরব হয়েছে সেই রেলস্টেশনের কাউন্টার। মাঝে অবশ্য ২০১৯ সালে ঈদযাত্রা সামনে রেখে এখানে টিকিট বিক্রির উদ্যোগ নেয়া হয়। এরপর করোনা সংক্রমণের কারণে মাঝের দুই বছর এই কাউন্টারের দরজা খোলেনি।

কমলাপুর রেলস্টেশনের চাপ কমাতে এবার ঈদে ট্রেনের অগ্রিম টিকিটের জন্য রাজধানীর পৃথক পাঁচটি স্থানে টিকিট বিক্রির ব্যবস্থা করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। তার একটি হচ্ছে ফুলবাড়িয়া পুরোনো রেলস্টেশন।

শনিবার সকালে সেই ফুলবাড়িয়া স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, ঈদের অগ্রিম টিকিট নিতে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন যাত্রীরা। ঢাকার বঙ্গবাজারের কাছে রেলপথ পরিদর্শন অধিদপ্তরের পুরোনো ভবনের পাশেই নতুন একটি টিনশেডে কাউন্টার স্থাপন করা হয়েছে। কাউন্টারের সামনের অংশে যাত্রীদের জন্য শামিয়ানা টানিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে দীর্ঘদিনের তফাতে এখানে টিকিট কাউন্টার চালু হওয়ায় মানুষকে জায়গাটি খুঁজে পেতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

কাউন্টারের সামনে টিকিটপ্রত্যাশীদের লাইন তেমন দীর্ঘ নয়। সার্বিক পরিবেশ ও ব্যবস্থাপনায় খুশি টিকিট নিতে আসা মানুষ। কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের মতো তেমন হাঁকডাক নেই। নীরব এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশে টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন তারা।

লাইনে দাঁড়ানো টিকিটপ্রত্যাশীদের একজন ষাটোর্ধ্ব সিরাজুল ইসলাম স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘একসময় এখানেই ছিল ঢাকার মূল স্টেশন। এই ফুলবাড়িয়া স্টেশন থেকেই আমরা ট্র্রেনে উঠতাম। এখন তো এসব স্মৃতি।’

লাইনে দাঁড়ানো আরেক যাত্রী সৌরভ বলেন, ‘এই কাউন্টার খুঁজে পেতে কষ্ট হয়েছে। তবে এসে সার্বিক পরিবেশ দেখে ভালো লাগছে। কোনো ভিড় নেই। এসেই টিকিট নিতে পেরেছি।

এ বিষয়ে ফুলবাড়িয়া স্টেশনের সুপারভাইজার রেলের পরিবহন পরিদর্শক (বাণিজ্যিক) তৌফিকুল আজিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘২০১৯ সাল থেকে এখানে টিকিট বিক্রি শুরু হয়। মাঝে দুই বছর করোনার কারণে তেমন কার্যক্রম ছিল না। এ বছর আবার টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। এখান থেকে এবার সিলেট ও কিশোরগঞ্জ রুটের টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে।

‘সকাল ৮টা থেকে আমরা টিকিট দেয়া শুরু করেছি। ১০টার মধ্যেই লাইন শেষ হয়ে গেছে। বিকেল ৪টা পর্যন্ত টিকিট বিক্রি চলবে। আজ (শনিবার) ২৭ এপ্রিলের টিকিট দেয়া হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে তারিখ অনুযায়ী এখান থেকে ঈদের আগাম টিকিট বিক্রি করা হবে।’

উইকিপিডিয়া ও ওয়েবসাইট ঘেঁটে জানা যায়, ফুলবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন বাংলাদেশের একটি বিলুপ্ত রেলওয়ে স্টেশন। কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন চালু হওয়ার আগে এটিই ছিল বাংলাদেশের (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) কেন্দ্রীয় রেলওয়ে স্টেশন। ১৯৬৮ সালের ১ মে থেকে কমলাপুর স্টেশনে ট্রেন চলাচল শুরু হলে এই স্টেশন বন্ধ করে দেয়া হয়।

১৮৯৫ সালে তৎকালীন ঢাকার প্রধান অংশের (বর্তমানে যা পুরান ঢাকা) দক্ষিণ দিকে ফুলবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন স্থাপন করা হয়। একই বছরে ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ এবং ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ রেল সংযোগ প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাজনের পর ঢাকা হয়ে ওঠে পূর্ব পাকিস্তানের প্রধান শহর ও রাজধানী।

১৯৫০ সালের মাঝ পর্ব পর্যন্ত ঢাকার মূল রেলস্টেশন ছিল ফুলবাড়িয়ায়। ক্রমে এই এলাকা ঘনবসতিপূর্ণ হয়ে পড়ে। সে কারণে এই রেলস্টেশন সরিয়ে নেয়ার চিন্তা করা হয়। কমলাপুর রেলস্টেশন নির্মাণ ও রেললাইন স্থাপনের কাজ ১৯৫০ সালের শেষ দিকে শুরু হলেও তা চলতে থাকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত। ১৯৬৮ সালের ১ মে থেকে কমলাপুর স্টেশনে রেল চলাচল শুরু হয়। ফলে আগের ফুলবাড়িয়া-তেজগাঁও লাইন পরিত্যক্ত হয়ে যায়। পরে লাইনটি তুলে সড়কপথ বানানো হয়।

এ বিভাগের আরো খবর