ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের ছাত্রদের সংঘর্ষের মামলায় গ্রেপ্তার নিউ মার্কেট থানা বিএনপি নেতা মকবুল হোসেন সরদারকে হেফাজতে নিয়ে তিন দিন জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি পেয়েছে পুলিশ।
শনিবার তার রিমান্ড ও জামিন আবেদনের শুনানি শেষে বেলা আড়াইটার দিকে মহানগর হাকিম মো. মামুনুর রশিদ এ আদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন আইনজীবী হেমায়েতউদ্দীন হিরন। আর আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী ইকবাল হোসেন।
এর আগে বেলা ১টার দিকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও নিউ মার্কেট থানার পরিদর্শক (অপারেশন) হালদার অর্পিত ঠাকুর মকবুলকে আদালতে উপস্থিত করে তার বিরুদ্ধে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।
আদালতে তার পক্ষে এ সময় রিমান্ড আবেদন বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে বিচারক নথি পর্যালোচনা করে পরে আদেশ দেবেন বলে জানান। পরে এ নিয়ে আদেশ দেয়া হয়।
মকবুল হোসেন সরদার নিউ মার্কেট থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সাম্প্রতিক সংঘর্ষে উসকানি দেয়ার অভিযোগে শুক্রবার সন্ধ্যায় নিজ বাসা থেকে মকবুলকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম।
সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের কাজে বাধা দেয়া, হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে একটি মামলা করে পুলিশ। সে মামলায় মকবুল এক নম্বর আসামি।
গোয়েন্দা তদন্ত রিপোর্ট বলছে, ঘটনা শুরুর পর থেকে সংঘর্ষ ছড়িয়ে দিতে ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থী দুই মহলকেই উসকে দিয়েছেন মকবুলসহ বিএনপির আরও কয়েকজন নেতাকর্মী।
যে দুই ফাস্টফুডের দোকানের কর্মচারীদের বিবাদে ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল, সেগুলোর মালিক মকবুল।
গোয়েন্দা পুলিশের একটি সূত্র নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিএনপি নেতা মকবুল আইন পেশায় নিযুক্ত থাকায় ওই মামলায় নিজের ও অন্য আসামিদের আগাম জামিন করানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
‘রোববার তারা জামিনের জন্য আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। জামিন নিয়ে তারা সবাই পালিয়ে যেতেন। এ জন্য মামলার কয়েকজন আসামির সঙ্গে শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর উত্তরায় একটি বৈঠকও করেছেন মকবুল।’
গত সোমবার মধ্যরাতে নিউ মার্কেটের দোকানমালিক ও কর্মচারীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের ছাত্রদের সংঘর্ষ শুরু হয়। এর জেরে মঙ্গলবার দিনভর ওই এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের রেশ থাকে বুধবার পর্যন্ত।
ওই সংঘর্ষে একজন ডেলিভারিম্যান ও এক দোকান কর্মচারীর মৃত্যু হয়। আহত হন অর্ধশতাধিক মানুষ। সংঘর্ষের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে আহত হয়েছেন ১৫ জনের মতো সাংবাদিক।