মাগুরায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ডিজিটাল ডিভাইস নেয়া ও সরবরাহের অভিযোগে এক ছাত্রলীগ নেতাসহ ৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
শুক্রবার সকালে মাগুরা ডিবি পুলিশ তাদের আটক করে।
আটক ছাত্রলীগ নেতার নাম ফাহিম ফয়সাল রাব্বি। সে মাগুরা সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি।
আটক অন্যরা হলেন- মাগুরা শহরের ইফতেখার ইসলাম, তারানা আফরোজ, মহম্মদপুরের সোহেল রানা, শাহানা বেগম ও একই উপজেলার ইসমত আরা ঝর্না।
তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানায় পুলিশ।
পুলিশ জানায়, সকালে পরীক্ষা শুরুর আগে মাগুরা এজি একাডেমি কেন্দ্র থেকে তারানা আফরোজ নামের এক পরীক্ষার্থীকে ডিজিটাল ডিভাইসসহ আটক করা হয়। এরপর তার দেয়া তথ্যে জানা যায়, এর পেছনে রয়েছে তার ভাই ইফতেখার ইসলাম টিটো।
টিটো শহরের পুর্বাশা এলাকায় পাখি ব্যবসায়ী।
বেলা দেড়টার দিকে মাগুরা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজিম উদ্দিন আল আজাদ বলেন, ‘যাদের আটক করা হয়েছে, তাদের নাম ঠিকানা আপাতত গোপন রাখা হচ্ছে। চক্রের হোতা কারা তা বের করতে এখনই সব বলা যাচ্ছে না।’
এ সময় এজি একাডেমি স্কুলের একটি ঘরে ছাত্রলীগ নেতাসহ অন্যদের ডিবির হেফাজতে নেয়ার কথা বলা হয়।
মাগুরা ডিবির এসি জয়নাল আবেদীন জানান, ফাহিম ফয়সালের ডিজিটাল ডিভাইস সরবরাহের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। তাই তাকে আটক করা হয়েছে। এর সঙ্গে আর কে কে জড়িত তা তদন্ত করে বের করা হবে।
ছাত্রলীগ নেতা ডিভাইস সরবরাহের কথা স্বীকার করলেও কত টাকায় করেছেন তা বলেননি বলে জানায় পুলিশ।
আটক টিটো মিয়া পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি তার বোনের জন্য ৮ লখ টাকার চুক্তিতে এই ডিভাইস নিয়েছেন।
তবে আটক হওয়াদের একজন ইসমত ঝর্নার স্বামী ব্যবসায়ী নাইম ইসলামের দাবি, তার স্ত্রীকে পুলিশ পরীক্ষার পর বাড়ি থেকে ধরে এনেছে। তারা এসবের কিছুই জানেন না।
মাগুরা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কুমারেশ চন্দ্র গাছী বলেন, ‘নিয়োগ পরীক্ষায় ২৫টি কেন্দ্রে ১১ হাজার ৮৪৪ জনের পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা ছিল। এর মধ্যে পরীক্ষা দেয় ৮ হাজার ১৪৪ জন। এর মধ্যে মাগুরা পলিটেকনিক ইনিস্টিটিউট কেন্দ্রে আব্দুস সামাদ নামে এক পরীক্ষার্থীকে মোবাইল ফোন ব্যবহার করায় শাস্তি দেয়া হয়েছে।’
তবে ডিজিটাল ডিভাইস বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না বলে জানান।
মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, ‘পরীক্ষায় ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করার অভিযোগে ছয়জনকে আটক করা হয়েছে। যে সব কেন্দ্রে এ রকম পাওয়া গেছে, সেখানে দায়িত্বে থাকা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের অভিযোগের ভিত্তিতে দোষীদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে। এর সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কি না সে বিষয়ে তদন্ত চলছে।’