জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত দিতে ২০০১ সালে ব্যবস্থা নিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের তখনকার প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের প্রশাসন। কিন্তু সে সময় বাংলাদেশে সদ্য ক্ষমতায় আসা বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার সে প্রচেষ্টা আটকে দেয়।
প্রথম মেয়াদে ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ সরকার রাশেদ চৌধুরীকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফেরাতে যে উদ্যোগ নিয়েছিল, রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত দিতে ক্লিনটন প্রশাসনের সেই উদ্যোগ ছিল তারই ফল।
নিউজবাংলার সঙ্গে ফোনালাপে এ তথ্য জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত আনার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিনকেনের সঙ্গে সাম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্র সফরে আলোচনা হয়েছে বলে জানান মোমেন।
‘আমি বলেছি নিশ্চয়ই আমেরিকান নাগরিকরা চান না তাদের দেশে একজন খুনি থাকুক।
এ সময় ব্লিনকেন বলেছেন, ‘বিষয়টি তিনি দেখবেন’। তিনি আরও বলেন, ‘বিষয়টি স্টেট ডিপার্টমেন্টের না, কিন্তু আমরা বিষয়টি ত্বরান্বিত করব।’
মোমেন বলেন, ‘আমাকে জানানো হয়েছে ২০০১ সালে রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেডেলিন অলব্রাইট। কিন্তু তৎকালীন বিএনপি সরকার বিষয়টি আটকে দেয়। এখন বিষয়টি পুনরায় পর্যালোচনা করতে হবে।’
নতুন কোনো অগ্রগতি হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে আছে। পরিস্থিতি এখন কোন পর্যায়ে আছে স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলতে পারেনি। অবশ্য তাদের অ্যাপ্রোচ ইতিবাচক।’
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে ১২ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আদালত। তাদের মধ্যে ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি পাঁচজনের দণ্ড কার্যকর করা হয়। তারা হলো সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশীদ খান, মহিউদ্দিন আহমদ (ল্যান্সার), এ কে বজলুল হুদা এবং এ কে এম মহিউদ্দিন (আর্টিলারি)।
বাকি সাত খুনির একজন আজিজ পাশা ২০০২ সালে পলাতক অবস্থায় জিম্বাবুয়েতে মারা যান। আরেক খুনি ক্যাপ্টেন (বরখাস্তকৃত) আবদুল মাজেদ হঠাৎ গত ৭ এপ্রিল ঢাকায় পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। তার ফাঁসি কার্যকর হয় গত ১১ এপ্রিল।
বঙ্গবন্ধুর খুনিদের মধ্যে এ এম রাশেদ চৌধুরী, শরিফুল হক ডালিম, এসএইচএমবি নূর চৌধুরী ও রিসালদার মোসলেম উদ্দিন খানের পাশাপাশি পলাতক রয়েছেন খন্দকার আবদুর রশিদও। রাশেদ চৌধুরী আছেন যুক্তরাষ্ট্রে।