বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সেই দুই ফাস্ট ফুড দোকানিকে খুঁজছেন অন্য ব্যবসায়ীরাও

  •    
  • ২১ এপ্রিল, ২০২২ ২০:১০

গার্মেন্টস সামগ্রী বিক্রেতা ফেরদৌস বলেন, ‘এক ঝামেলাতেই সব শেষ। দোকান যে বন্ধ হইছে, এ দোকান কবে খুলতে পারবো তার ঠিক নাই! বেচাকেনা নিয়া নিজেরা নিজেরা মারামারি করছে। এখন পারলে বন্ধ দোকানে বেশি বেচাকেনা করুক। নিজেরা তো শেষ, আমাগো শেষ করতাছে।’

‘আমার কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। যারা ঝামেলা করছে সেই দুই দোকানের মালিক পালাইছে। তাদের আমি খুঁজতেছি। আমার যা ক্ষতি হয়েছে তার টাকা তাদের দেয়া লাগবে।’

ক্ষোভের সঙ্গে কথাগুলো বলছিলেন রাজধানীর নিউ মার্কেটের এয়ার ফাস্ট ফুডের মালিক জাহিদুল ইসলাম। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার খাবারের দোকান।

দোকানটি নিউ মার্কেটের ২ নম্বর গেটের পাশে অবস্থিত।

সোমবার রাতে এই মার্কেটের ক্যাপিটাল ও ওয়েলকাম ফাস্ট ফুড থেকে সূত্রপাত হয় মারামারির। এরপর তা ব্যবসায়ী ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।

মারামারির কারণে দুই দিন থেকেই বন্ধ ছিল দুই ফাস্ট ফুডের দোকানসহ পুরো মার্কেট। বৃহস্পতিবার সকালে নিউ মার্কেটের অন্যান্য দোকানপাট খুলেছে। তবে খোলেনি ক্যাপিটাল ও ওয়েলকাম ফাস্ট ফুড।

এয়ার ফাস্ট ফুডের মালিক জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘দোকানের সামনের গ্লাস ভাঙছে, তিনটা ফ্রিজ ভাঙছে, কত বলমু? আমার কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। যারা ঝামেলা করছে সেই দুই দোকানের মালিক পালাইছে।’

ক্যাপিটাল ফাস্ট ফুডের সামনে গিয়ে দেখা গেল দোকানের সব শাটারই বন্ধ। সামনে গ্লাসের কাউন্টারের ভেতরে পড়ে আছে শুকনো ফুচকা। সঙ্গে কয়েকটি প্লেট, খাবারের বাসনপত্র। পাশে স্তুপ করে রাখা শখানেক চেয়ার। একপাশে রাখা ফ্রিজে পানির বোতলসহ নানা খাবার সামগ্রী।

ক্যাপিটাল ফাস্ট ফুডের সামনে থাকা চেয়ারগুলোতে বিশ্রামের জায়গা হয়েছে এই মার্কেটে আসা ক্রেতাদের। অথচ দুইদিন আগে সকাল থেকে মাঝরাত পর্যন্ত মানুষের আনাগোনা ছিল এ দোকানে।

অন্যদিকে ওয়েলকাম ফাস্ট ফুডের সামনের জায়গায় এখন এই মার্কেটের দায়িত্বরত পুলিশের বসার জায়গা হয়েছে। মার্কেটের নিরাপত্তায় বাড়তি পুলিশকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

এই দোকানের সামনে পোশাক বিক্রি করছেন মো. রিপন। তিনি বলেন, ‘নিজেদের মধ্যে সামান্য ঘটনাটাকে তারা পুরো মার্কেট করছে, পুরো দেশ করছে। এতে আমগো মত সাধারণ দোকানদারগো অবস্থা খারাপ। দুই দিন বন্ধ থাকার পর যাও দোকান খুলছি, কাস্টমার নাই।’

এই দোকানের অপর পাশে গার্মেন্টস সামগ্রী বিক্রেতা ফেরদৌস বলেন, ‘এক ঝামেলাতেই সব শেষ। দোকান যে বন্ধ হইছে, এ দোকান কবে খুলতে পারবো তার ঠিক নাই! বেচাকেনা নিয়া নিজেরা নিজেরা মারামারি করছে। এখন পারলে বন্ধ দোকানে বেশি বেচাকেনা করুক। নিজেরা তো শেষ, আমাগো শেষ করতাছে।’

আরও পড়ুন: দোকানিদের সংঘাতে যেভাবে জড়াল ঢাকা কলেজ

ওয়েলকামের পাশের ফাস্ট ফুড দোকান প্যানজীর ম্যানেজার আরিফুর রহমান বলেন, ‘দুইদিন ধরেই এই দোকানের কারও খোঁজ নেই। তাদের ঝামেলার কারণে আমাদের দোকান বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ভাংচুর হয়েছে। আমাদের সামনের গ্লাস, অনেক কিছুই ভেঙেছে। গতকাল রাতে কোনো রকম ঠিক করতে এক লাখ টাকার বেশি খরচ হয়েছে। আরও এক লাখ টাকার কাজ আছে।’

এই দোকানের সামনে দায়িত্বরত পুলিশের একজন সদস্য সজীব বলেন, ‘আজকে আমাদের এখানে দায়িত্ব পড়েছে। আমরা সতর্ক আছি। সন্ধ্যা হতে চললো, এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।’

দুই ফাস্ট ফুড দোকানের বিরোধ থেকে ঘটনার সূত্রপাত- নিউজবাংলায় এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ হয় মঙ্গলবার। দুই দোকানের মালিকের ফোন নম্বর এর আগে চালু ছিল। তবে এ প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকে তাদের ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।

সোমবার মধ্যরাতে নিউ মার্কেটের দোকানমালিক ও কর্মচারীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের ছাত্রদের সংঘর্ষ শুরু হয়। এর জেরে মঙ্গলবার দিনভর ওই এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের রেশ থাকে বুধবার পর্যন্ত।

ওই সংঘর্ষে একজন ডেলিভারিম্যান ও এক দোকান কর্মচারীর মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক।

সংঘর্ষের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে আহত হয়েছেন ১৫ জনের মতো সাংবাদিক।

এ বিভাগের আরো খবর