দিনাজপুরে পরিবহন শ্রমিকনেতাকে ‘মারধরের’ বিচার এবং গ্রেপ্তার ৮ অ্যাম্বুলেন্স চালকের মুক্তির দাবিতে বুধবার মধ্যরাত থেকে চলা পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছেন শ্রমিকরা।
পুলিশের আশ্বাসে প্রায় সাড়ে ১৪ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ৩টায় অবরোধ তুলে নেয় জেলা মোটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন, চলতে শুরু করে যানবাহন।
শ্রমিক সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বী বলেন, ‘অ্যাম্বুলেন্স চালকদের আটক করা হয়েছে, তাদের জামিন দিয়ে দেয়া হবে এবং শ্রমিকনেতাকে মারধরের ঘটনায় মামলা হয়েছে। জড়িতদের আটক করা হবে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এ কারণে আমরা অবরোধ তুলে নিয়েছি।’
কোতোয়ালি থানার ওসি মোজাফ্ফর হোসেন বলেন, ‘শ্রমিকদের সঙ্গে বসা হয়েছিল। রাস্তা খুলে দেবে বলেছে।’
কী আশ্বাস দেয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কোনো কিছু আশ্বাস নাই, রাস্তা খুলে দেবে বলেছে। এরপর পরের বিষয় পরে।’
শ্রমিকদের অভিযোগ ছিল, বুধবার বিকেলে দিনাজপুর শহরের বালুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে সিএনজিচালিত অটোরিকশার এক যাত্রীকে অটোরিকশা থেকে নামিয়ে বাসে তুলে নেন এক বাস হেলপার। এর জেরে অটোরিকশার চালকরা সেই হেলপারকে মারধর করেন। বাসস্ট্যান্ড শাখা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. ডাব্লু এগিয়ে আসলে তাকেও মারধর করা হয়। একপর্যায়ে তার মাথায় আঘাত করেন চালকরা।
এ ছাড়া তারা আরও জানান, একই দিন বিকেলে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বর থেকে রোগী ও নিহতদের মরদেহ নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে কোতোয়ালি থানা পুলিশ ৫ অ্যাম্বুলেন্স-চালককে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
তাদের মুক্তির দাবিতে রাত ১২টায় হাসপাতালের সামনে দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ মহাসড়কে অ্যাম্বুলেন্স রেখে অবরোধ করেন অন্য চালকরা। পুলিশ তাদের লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় আরও ৩ অ্যাম্বুলেন্স চালককে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
এরপর দিনাজপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের সামনে বুধবার রাত ১টায় দিনাজপুর-রংপুর-গোবিন্দগঞ্জ মহাসড়কে ব্যারিকেড দেন পরিবহনশ্রমিকরা।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। দিনাজপুর-রংপুর-গোবিন্দগঞ্জ মহাসড়কে বাস রেখে ব্যারিকেড দিয়ে রাখেন শ্রমিকরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শহরের ফুলবাড়ী বাসস্ট্যান্ড, বালুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড, সুইহারী মোড়, কলেজ মোড়সহ বিভিন্ন সড়কে বাস দিয়ে ব্যারিকেড দেন শ্রমিকরা।
এ ছাড়া জেলার বিরল, বোচাগঞ্জ, কাহারোল, বীরগঞ্জ, চিরিরবন্দর, পার্বতীপুর, ফুলবাড়ী, বিরামপুর, ঘোড়াঘাট ও হাকিমপুরে বাসস্ট্যান্ড ও গুরুত্বপূর্ণ সড়কে একইভাবে সড়ক অবরোধ করে রাখেন শ্রমিকরা।