বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘রোজিনার অপেক্ষায়’ গাছেই বসবাস

  •    
  • ২১ এপ্রিল, ২০২২ ১৬:৪০

প্রায় এক যুগ ধরে গাছে বসবাস করছেন মাগুরার লিয়াকত হোসেন। কয়েকটি গাছে বাসা বানিয়েছেন তিনি। তবে রাতে থাকেন একটি বিশেষ গাছে। লোকের ধারণা, স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যাওয়ায় তার পথ চেয়ে গাছে বসে থাকেন তিনি।

গাছেই তার বাড়ি। দিনরাত গাছেই বসবাস। ছোট গাছ থেকে শুরু করে বড় গাছের ডালে ডালে নিজের ঘর। খড়কুটো দিয়ে তৈরি করা হয়েছে মাথাগোঁজার ঠাঁই। পাখি যেমন বসবাস করে গাছে, তেমনই লিয়াকত আলীর গাছে বসবাস।

মাগুরা শালিখা উপজেলার ছয়ঘোরিয়া এলাকায় মাগুরা-যশোর সড়কের পাশে লিয়াকতকে দেখা যায়। এই পথ ধরে বাস-ট্রাকসহ যেকোনো যানে গেলে লিয়াকতকে দেখতে পায় মানুষ। সবার প্রশ্ন একটাই: লোকটা গাছে কী করে?

লিয়াকতের বাড়ি এই এলাকার বাজারের পাশে। বাড়িতে তার বৃদ্ধ মা থাকে। আর এক ভাই প্রবাসী।

প্রতিবেশীরা জানান, লিয়াকত পড়াশোনায় ভালো ছিলেন। সংসারের হাল ধরতে তিনি ২০০০ সালের আগে ঢাকায় যান চাকরির আশায়। সেখানে মেরুল বাড্ডা এলাকায় রডমিস্ত্রির কাজ করতে থাকেন। বিয়ে করেন ঢাকাতেই এক পোশাক কর্মীকে। তবে সেই বিয়ে টেকেনি। এরপর তিনি মাগুরায় ফিরে আসেন। শুরু করেন মাগুরা-যশোর সড়কে বাসে প্রথমে হেলপারের, পরে চালকের কাজ।

সচ্ছলতা ফিরে আসায় পরিবারের উদ্যোগে তাকে আরেকটি বিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু লিয়াকতের ‘মাথায় সমস্যা’ দেখা দিলে সেই স্ত্রীও তাকে ছেড়ে চলে যান বলে প্রতিবেশী ও স্বজনেরা জানান।

লিয়াকতের চাচা শুকুর মোল্লা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রায় এক যুগ ধরে সে গাছে গাছে থাকে। ছয়ঘোরিয়ায় বিভিন্ন গাছে তার ঘর রয়েছে চারটি। এরপর বাজার পেরিয়ে স্কুলমাঠের সামনের সড়কে ঘেঁষে গাছে রয়েছে আরও দুটি। এত গাছে বাড়ি বানালেও সে রাতে থাকে একটি বিশেষ গাছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘লিয়াকতের খাওয়া-দাওয়ার ঠিক নেই। যেকোনো দোকানে গিয়ে বসে থাকে। কিছু দিলে খায়। না দিলে হাঁটা মারে। তবে সে পুরো পাগল নয়। তার চিকিৎসার চেষ্টা করেছিল পরিবার। কিন্তু টাকার অভাবে আর করা হয়নি। এখন সে নিজের বাড়ি রেখে গাছে গাছে বসবাস করে।’

লিয়াকত আলী মানসিক ভারসাম্যহীন বলেই সকলে মনে করেন। নিউজবাংলা তার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে।

কত দিন ধরে গাছে থাকেন– জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, কয়েক বছর। তার গাছে বসবাসের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটাই আমার বাড়ি, আমি আর কোথায় থাকব? রোজিনা আসবে তাই বসে আছি। এই পথ ধরে সে আবার আসবি...।’

রোজিনা কে জানতে চাওয়া হলে জবাব না দিয়ে লিয়াকত গাছে উঠে যান।

প্রতিবেশী চাচা শুকুর মিয়া জানান, রোজিনা লিয়াকতের দ্বিতীয় স্ত্রী। মানসিক ভারসাম্য হারানোর পর রোজিনা তাকে ছেড়ে যান। রোজিনার বাড়ি যশোর জেলার চতুরবাড়িয়া এলাকায়।

ধারণা করা হয়, এই পথ দিয়ে তার স্ত্রী তাকে ফেলে বাসে চেপে চলে যান। এ জন্য লিয়াকত গাছে থাকেন। তাকিয়ে থাকেন কখন রোজিনা আসবেন।

এ বিভাগের আরো খবর