নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে শিশু তাসকিয়া আক্তার জান্নাত হত্যা মামলায় চার আসামিকে পাঁচ দিন করে রিমান্ডে পাঠিয়েছে পুলিশ।
আমলি আদালত-৩-এর বিচারক তৌহিদুল ইসলাম বৃহস্পতিবার দুপুরে আসামিদের রিমান্ডে পাঠান।
এর আগে মূল আসামি মাঈন উদ্দিন রিমনসহ পাঁচজনকে কঠোর নিরাপত্তায় আদালতে তোলে পুলিশ। তাদের সাত দিন করে রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা ও ডিবি পুলিশের পরিদর্শক সবজাল হোসেন। তবে শুনানি শেষে প্রধান আসামি রিমন ছাড়া অন্যদের রিমান্ডে পাঠায় পুলিশ।
নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার শহিদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, রিমন ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে পারেন। এ কারণে তার রিমান্ড শুনানি এখনও হয়নি। বাকিদের পাঁচ দিন করে রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।
যাদের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে তারা হলেন মহিন উদ্দিন, আকবর হোসেন, মো. সুজন ও মো. নাঈম।
শিশু তাসকিয়া হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ৫ আসামি। ছবি: নিউজবাংলার্যাবের হাতে আটক ওই পাঁচ আসামির নামে এবার অস্ত্র আইনে মামলা হয়েছে। র্যাব-১১-এর সিপিসি-৩ নোয়াখালী ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার খন্দকার শামীম হোসেন জানান, বুধবার রাতে র্যাবের উপসহকারী পরিচালক বোরহান উদ্দিন বাদী হয়ে জেলার চরজব্বর থানায় মামলাটি করেন।
সুবর্ণচর উপজেলার চরক্লার্ক এলাকায় অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার রাতে তাদের আটক করে র্যাব। এ সময় র্যাবের সঙ্গে তাদের গোলাগুলি হয় বলে বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়। বলা হয়, তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি দেশি তৈরি পাইপগান, একটি ম্যাগাজিন ও গুলি উদ্ধার করা হয়।
১৩ এপ্রিল বাবার কোলে থাকা অবস্থায় গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারায় তাসকিয়া।
যা ঘটেছিল
পুলিশ জানায়, পূর্ব হাজীপুর গ্রামের খোরশেদ আলম দুর্গাপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীনারায়ণপুর গ্রামের মো. বাদশার কাছে তার কৃষিজমির মাটি বিক্রি করেন। চুক্তি অনুযায়ী ৬ ফুট মাটি কেটে নেয়ার কথা। তবে বাদশা এর চেয়ে বেশি মাটি কাটতে চাইলে খোরশেদের ভাই ফিরোজ আলম বাধা দেন।
বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সালিশ-বৈঠক করে মীমাংসার চেষ্টা হয়। এতে অংশ নেন তাসকিয়ার বাবা আবু জাহের। তবে প্রথম দফার আলোচনা ভেস্তে যায়। ৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় ফিরোজের বাড়িতে বৈঠক চলাকালে রিমনের নেতৃত্বে সেখানে ককটেল হামলা ও গুলি ছোড়ার ঘটনা ঘটে।
পরদিন ফিরোজ থানায় অভিযোগ দেন। এরপর পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তবে অভিযুক্ত কাউকে না পাওয়ার কথা জানিয়ে পুলিশ চলে আসে।
এই থানায় যাওয়ার কারণে ১০ তারিখ আবার ফিরোজের বাড়িতে হামলা হয়। তখন ৯৯৯-এ ফোন করে বিষয়টি জানায় ফিরোজের মেয়ে শেফালি। এরপর আবারও ঘটনাস্থলে এসে পুলিশ অভিযুক্তদের ধরতে ব্যর্থ হয়।
অভিযোগ ওঠে, তাসকিয়ার বাবা আবু জাহেরের কারণে ওই বৈঠকগুলো কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়া শেষ হয়। তখন সন্ত্রাসীরা জাহেরকে হত্যার পরিকল্পনা করে তার ওপর হামলা চালায়।