বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘ভাঙনের ভয়ে ঘুমাইতে পারি না’

  •    
  • ২১ এপ্রিল, ২০২২ ১৫:২৮

উজানপুর এলাকার জাবেদা বেগম বলেন, ‘দিনের বেলায় কম ভাঙলেও রাতের বেলায় বেশি ভাঙন হয়। ভাঙনের ভয়ে ঘুমাইতে পারি না, ভয়ে বুক কাঁপে। যখন ভাঙতে শুরু করে, তখন ভয়ঙ্কর শব্দ হয়। বাড়িঘর কাঁপতে থাকে। সারারাত নদীর পাড়ে বইসে থাকি, আর চিন্তা করি কখন বাড়িঘর নদীতে যাইবো।’

মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে পদ্মা নদীতে জোয়ারের পানি বেড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এ আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে পদ্মা তীরবর্তী শতাধিক পারিবারের সদস্যদের।

বর্ষার আগে ভাঙন রোধে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন এলাকাবাসী। তবে ভাঙন রোধে নানা অজুহাতের কথা বলছে প্রশাসন।

স্থানীয়রা জানান, প্রায় দুই মাস ধরে পদ্মায় পানি বাড়ছে। এতে উপজেলার কাঞ্চনপুর, গোপীনাথপুর ও সুতালড়ী ইউনিয়নে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে নদীগর্ভে চলে গেছে বিস্তীর্ণ ফসলের জমি, বসতভিটা। ভাঙন প্রতিরোধে জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হলেও থামছে না ধ্বস।

কাঞ্চনপুর এলাকার সুফিয়া বেগম বলেন, ‘নদীতে জোয়ারের পানি আসার পর থেকে গত দুই মাস ধরে বিভিন্ন জায়গায় ও বেড়িবাঁধে ভাঙন শুরু হইছে। ভাঙন শুরুর পর মেম্বার-চেয়ারম্যানকে জানাইছি। তারা দেইখা চলে গেছে। এখন ব্যবস্থা না নিলে বর্ষার আগেই আমাগো বসতভিটা নদীতে যাইব।’

একই এলাকার ইয়াসমিন বেগম বলেন, ‘পদ্মার ভাঙনের কারণে আমাদের সব শেষ হয়ে গেছে, বসতভিটা ছাড়া এখন কিছু নাই। এই বাড়িটা নদীতে চইলা গেলে একটু জায়গাও থাকব না। পদ্মার ভাঙনে সব শেষ কইরা দিছে। সরকারের কাছে অনুরোধ, দয়া কইরা ভাঙন বন্ধে কাজ করেন।’

গোপীনাথপুরের বাহাদুরপুরের জরিনা বেগম বলেন, ‘সারাদিন মাইনষের বাড়িতে কাজ করে, যা পাই তাই দিয়া কোনোমতে সংসার চালাই। এর মধ্যে আবার নদী ভাঙন শুরু হইছে। নদী ভাঙতে ভাঙতে সব শেষ কইরা দিছে। সামনে ঈদ, নিজেরা কিছু নিতে পারি না। পোলাপাইনরেও কিছু দিতে পারিনা।’

একই ইউনিয়নের উজানপুর এলাকার জাবেদা বেগম বলেন, ‘দিনের বেলায় কম ভাঙলেও রাতের বেলায় বেশি ভাঙন হয়। ভাঙনের ভয়ে ঘুমাইতে পারি না, ভয়ে বুক কাঁপে। যখন ভাঙতে শুরু করে, তখন ভয়ঙ্কর শব্দ হয়। বাড়িঘর কাঁপতে থাকে। সারারাত নদীর পাড়ে বইসে থাকি। আর চিন্তা করি কখন বাড়িঘর নদীতে যাইবো।’

কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গাজী বনি ইসলাম রুপক জানান, পদ্মায় জোয়ারের সঙ্গে ভাঙছে পাড়। এখন ভাঙন রোধে ব্যবস্থা না নিলে বর্ষার আগে কয়েক শ পরিবার নিঃস্ব হয়ে যাবে। হাট-বাজার, স্কুল-মাদ্রাসা, ফসলি জমি, বসতভিটা পদ্মায় বিলিন হয়ে যাবে। ভাঙনের বিষয়ে ইউএনও ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) প্রকৌশলীকে জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো.মঈন উদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের কাছে কোনো বাজেট নেই। কিন্তু মানুষের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবে ধূলসুরা ইউনিয়ন ও গোপীনাথপুর এলাকায় নদীর তীর সংরক্ষণের কাজ বাস্তবায়ন হচ্ছে।

‘এ ছাড়াও মানিকগঞ্জের আরও গুরুত্বপূর্ণ জায়গা রক্ষায় বোর্ডে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। এখনও কোনো অনুমতি পাওয়া যায় নি। অনুমতি মিললে আগামী বর্ষার আগে কাজ বাস্তবায়ন করা হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর