বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

হাওরে শ্রমিক সংকট, বিপাকে কৃষক

  •    
  • ২১ এপ্রিল, ২০২২ ১১:১৭

শাল্লার ছায়ার হাওরে সাড়ে ৪ একর জমিতে ধান আবাদ করেছেন রতি দাশ। তার জমির ধান আধাপাকা। পানি বাড়ছে, তাই আধাপাকা ধানই কেটে নেবেন। কিন্তু শ্রমিক সংকটে তা পারছেন না। তিনি বলেন, ‘কষ্ট করে ফসল লাগাইয়া এখন হাওরও পানি বাড়ের, কিন্তু ধান কাটার মানুষ ফাইরাম না। ছেলে আর আমি যতটুকু পাররাম কররাম, এখনও বিশাল পরিমাণে ধান হাওর রয়ে গেছে। কি করমু কিচ্ছু বুঝরাম না।’

অসময়ের পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের বিভিন্ন হাওরের বাঁধ ভেঙে তলিয়েছে বহু ধানি জমি। বাঁধ রক্ষায় যে কৃষকরা দিন-রাত খেটেছেন, তারা এখন ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন ধান রক্ষার লড়াইয়ে।

জেলার শাল্লা, তাহিরপুর ও শান্তিগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন হাওরের ধান কেটে নিচ্ছেন কৃষকরা। কোমর সমান পানিতে নেমেও ধান কাটছেন তারা। তবে এসবের মধ্যে ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে শ্রমিক সংকট।

কৃষকের আশঙ্কা, আর কয়েক দিন উজানের পানি বাড়লে অবশিষ্ট ধানও তলিয়ে যাবে। এমন পরিস্থিতিতে বেশি মজুরি দিয়েও পাওয়া যাচ্ছে না প্রয়োজনীয়সংখ্যক শ্রমিক।

তাই এ সংকট সমাধানে প্রশাসনের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন হাওর বাঁচাও আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বিজন সেন রায়। যদিও কৃষি বিভাগের দাবি, হাওরে শ্রমিক সংকট তেমন একটা নেই।

শাল্লার ছায়ার হাওরে সাড়ে ৪ একর জমিতে ধান আবাদ করেছেন রতি দাশ। তার জমির ধান আধাপাকা। পানি বাড়ছে, তাই আধাপাকা ধানই কেটে নেবেন। কিন্তু শ্রমিক সংকটে তা পারছেন না।

নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘কষ্ট করে ফসল লাগাইয়া এখন হাওরও পানি বাড়ের, কিন্তু ধান কাটার মানুষ ফাইরাম না। ছেলে আর আমি যতটুকু পাররাম কররাম, এখনও বিশাল পরিমাণে ধান হাওর রয়ে গেছে। কি করমু কিচ্ছু বুঝরাম না।’

শান্তিগঞ্জে দেখার হাওরে হাঁটু পানিতে ধান কাটছেন কৃষক নুর উদ্দিন। তার অধিকাংশ ধানগাছ অর্ধেক পানির নিচে। তিনি বলেন, ‘বাজান এবার আমরার শনি লাগছে। ধান ভালা অইছিল। কিছু পোকায় খাইছে, এখন পানি সব নিরোগি। কয়েকজন মিলিয়া ধান কাটরাম মানুষ, কিন্তু পাচ্ছি না। আসমানও মেঘ, মরি আর বাঁচি, ধান না খাটলে ফুরুতা না খাইয়া থাকবও।’

শনির হাওরের কৃষক জব্বার আলী বলেন, ‘ধান কাটার মানুষ নাই, যাও পাইলায় তারা রোজ ৫০০-৭০০ করি টাকা চায়। এত টাকা কই পাইতাম। এমনেই অবস্থা ভালা না, তাড়াতাড়ি কাটতে না পারলে সব শেষ।’

হাওর বাঁচাও আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বিজন সেন রায় বলেন, ‘এ শ্রমিক সংকট দূর করতে সব বালুমহাল ও পাথর কোয়ারি আপাতত বন্ধ করে শ্রমিকদের হাওরে পাঠাতে হবে। তা না হলে আমরার যা পাওয়ার ছিল, তাও পাব না।’

তবে সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি কর্মকর্তা বিমল চন্দ্রের দাবি উল্টো। নিউজবাংলাকে বলেন, ‘জেলায় এবার ২ লাখ ২২ হাজার ৮০৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে, এর মধ্যে প্রায় ৭১ হাজার হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে। হাওরে শ্রমিক সংকট তেমন একটা নেই, ধান কাটার হারভেস্টার মেশিন আছে। আর বৃষ্টি না হলে ধান আমরা ভালোভাবেই তুলতে পারব।’

এ বিভাগের আরো খবর