ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের জেরে দুই দিনের বেশি সময় বন্ধ থাকার পর রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকায় দোকান খোলা শুরু হয়েছে।
সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে বুধবার গভীর রাতে শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের সাড়ে তিন ঘণ্টা বৈঠকে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দোকান খোলার সিদ্ধান্ত হয়।
সে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সকাল ৯টার দিকে কিছু দোকান খোলা দেখা যায়। বেলা ১১টার পর অনেক দোকান খুলতে দেখা যায় কর্মীদের। ক্রেতাদের সমাগমও বাড়ছে ধীরে ধীরে।
নিউ মার্কেট ও আশপাশের এলাকায় সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে, তবে পুরো এলাকায় মোতায়েন রয়েছে বিপুলসংখ্যক পুলিশ। সকাল থেকে তালাবদ্ধ মার্কেটের সামনে অবস্থান নেন বাহিনীর সদস্যরা।
সকালে চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটের নিচে ৩০ জনের মতো পুলিশ সদস্যকে দেখা যায়। কাছাকাছি ঢাকা নিউ সুপার মার্কেটের পাশে পুলিশের আরেকটি দলের অবস্থান দেখা যায়।
রাস্তার বিপরীতে গাউছিয়া সংলগ্ন নুর ম্যানশনের সামনে একাধিক পুলিশ সদস্যের উপস্থিতি চোখে পড়ে। কাছাকাছি ধানমন্ডি হকার্স মার্কেটের পাশেও পুলিশের একটি দল অবস্থান নেয়।
ধানমন্ডি হকার্স মার্কেটের ‘স্ন্যাকস কর্ণার’ নামের একটি দোকানে খাবার তৈরি করতে দেখা যায়, তবে দোকানটির শাটার অর্ধেক নামানো ছিল৷
হকার্স মার্কেটের গেটগুলোতে তালা ঝুললেও ভেতরে দোকানমালিকদের অবস্থান দেখা যায়। ওই সময় অনেক কর্মচারী বাইরে রাস্তায় অপেক্ষা করছিলেন।
অন্যদিকে ঢাকা কলেজের বিপরীত পাশে যাদব ঘোষ অ্যান্ড সন্স নামের মিষ্টির দোকানে ক্রেতা-বিক্রেতার সরব উপস্থিতি দেখা যায়। পাশেই মোহন চান গ্র্যান্ড সন্স নামে মিষ্টির দোকান খোলা দেখা যায়৷
নুরজাহান সুপার মার্কেটের সামনে ফুটপাতের এক পোশাক বিক্রেতা বসে ছিলেন কাপড় নিয়ে। মো. মনির নামের সেই বিক্রেতা বলেন, ‘কখন খোলা যায়, তার তো কোনো স্টেশন নাই। হেরা কইছে খুলব। কখন যে খুলব?’
নুর ম্যানশনের ‘দাদু ওয়ান’ নামের জুতার দোকানের স্বত্বাধিকারী নেসার উদ্দিন বলেন, ‘আমরা যে দোকান খুলতে পারছি, এটাই আনন্দ লাগছে। ক্ষতি যা হইছে ওটা তো আর কেউ দেবে না।
‘এখন আমাদের কাছে একটি দিন এক মাসের সমান।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সাদিয়া পারভিন সকালেই আসেন নিউ মার্কেট এলাকায়। নুর ম্যানশনের একটি দোকান থেকে ব্যাগ কিনেন তিনি।
নিউজবাংলাকে সাদিয়া বলেন, ‘আসছি তো ভয়ে ভয়ে দোকান খোলে কি না; খোলা পাব কি না। এখন দেখছি তো দোকানপাট খুলছে। পুলিশের ব্যাপক সদস্য আছে, যা জনমনে স্বস্তি দিচ্ছে।’
গত সোমবার মধ্যরাতে নিউ মার্কেটের দোকানমালিক ও কর্মচারীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের ছাত্রদের সংঘর্ষ শুরু হয়। এর জেরে মঙ্গলবার দিনভর ওই এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের রেশ থাকে বুধবার পর্যন্ত।
ওই সংঘর্ষে একজন ডেলিভারিম্যান ও এক দোকান কর্মচারীর মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক।
সংঘর্ষের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে আহত হয়েছেন ১৫ জনের মতো সাংবাদিক।