রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ী ও ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের মধ্যে চলমান সংঘর্ষের ঘটনায় নীরব স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন। ঘটনার দুদিন পার হতে চললেও সংকট নিরসনে মাঠে দেখা যায়নি তাকে।
সোমবার রাতে শুরু হয় ব্যবসায়ী ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ। মঙ্গলবার তা রূপ নেয় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে। ব্যবসায়ী-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে চলা সংঘর্ষে শতাধিক ব্যক্তি আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। মঙ্গলবারের সংঘর্ষে আহত কুরিয়ার সার্ভিস কর্মী নাহিদ রাতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
বুধবার সকাল থেকে পুরো এলাকায় পরিস্থিতি শান্ত ছিল। ব্যবসায়ী নেতারা সংবাদ সম্মেলন করে দুপুরের পর থেকে সংশ্লিষ্ট এলাকার সব মার্কেটের দোকান খোলার ঘোষণা দেন।
ব্যবসায়ী-কর্মচারীদের সঙ্গে সংঘর্ষের পর আগামী ৫ মে পর্যন্ত ঢাকা কলেজ বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। ছাত্রদের এখন ধৈর্যধারণের আহ্বান জানিয়ে প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এ টি এম মইনুল হোসেন এই ছুটিতে ছাত্রদের বাড়ি গিয়ে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে বলেছেন।
বিকেলের দিকে এসে ধাপে ধাপে খুলতেও শুরু করে দোকানপাট। তবে ৪টা ৫০ মিনিটের দিকে আবারও শিক্ষার্থীরা ঢাকা কলেজ চত্বর থেকে রাস্তায় বেরিয়ে আসেন। দোকানি ও শিক্ষার্থীরা মুখোমুখি অবস্থান নিলে ফের উত্তেজনা দেখা দেয়।
সোমবার রাত থেকে বুধবার বিকেল পর্যন্ত এত কিছু ঘটে গেলেও দৃশ্যপটে নেই আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হওয়া সত্ত্বেও বিরোধ নিরসনে কার্যত কোনো ভূমিকা রাখতে দেখা যায়নি তাকে।
স্থানীয় এই জনপ্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে নিউজবাংলা। কিন্তু তাকে বারবার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। ফোন ধরার অনুরোধ জানিয়ে এসএমএস পাঠানো হলেও তিনি সাড়া দেননি। এরপর থেকে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
করোনা মহামারির মধ্যে ২০২০ সালের ১৮ এপ্রিল উপনির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এই ব্যবসায়ী নেতা।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ ফজলে নূর তাপস এ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে নির্বাচিত হন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে তিনি সংসদ সদস্য পদ ছেড়ে দেন। পরে ওই আসনে উপনির্বাচনে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পান শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন।
২০২০ সালের ১৮ এপ্রিলের ওই উপনির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন ৩ লাখ ২১ হাজার ২৭৫ জন। তার মধ্যে ভোট পড়ে মাত্র ৫ দশমিক ২৮ শতাংশ। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন পান ১৫ হাজার ৯৯৫ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিএনপির প্রার্থী শেখ রবিউল আলম পান ৮১৭ ভোট। এ ছাড়া জাতীয় পর্টির প্রার্থী হাজি মো. শাহজাহান লাঙ্গল প্রতীকে ৯৭ ভোট পান।