রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুদিন ধরে চলা সংঘর্ষে তৃতীয় পক্ষ অনুপ্রবেশের অভিযোগ করেছেন দোকান মালিক সমিতির নেতারা। তাদের দাবি, সংঘর্ষকালে অ্যাম্বুলেন্স ভাঙচুরের ঘটনায় ব্যবসায়ীরা জড়িত নয়।
ঢাকা নিউ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির কার্যালয়ে বুধবার বেলা ২টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে এমনটা দাবি করা হয়। এতে লিখিত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দীন। এ সময় নিউ মার্কেট দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম শাহীনসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দোকান মালিক ও কর্মচারীদের টানা দুদিন ধরে চলা সংঘর্ষের ঘটনায় এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
হেলাল উদ্দীন বলেন, ‘নিউ মার্কেটের দোকানমালিক, ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা সম্মানজনক অবস্থানে থাকেন। অ্যাম্বুলেন্সে যারা আক্রমণ করেছে আমি মনে করি তাদের কোনো বোধশক্তি নেই। তারা ব্যবসায়ী হওয়ার প্রশ্নই আসে না। এরা একদল উচ্ছৃঙ্খল জনতা। আমি নিশ্চিত করেই বলছি, এখানে তৃতীয় পক্ষ ছিল। ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ আছে।
‘পুলিশ এক পক্ষকে সরিয়ে দিলে আরেক পক্ষ বেরিয়ে আসছে। এর মাধ্যমে আমাদের কাছে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়েছে যে এখানে তৃতীয় পক্ষ কাজ করেছে। এখানে ব্যবসায়ী ছিল না। আমরা মনি করি ছাত্ররাও ছিল না।
‘তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এত বড় ঘটনা ঘটবে তা আমাদের কারোরই মাথায় আসেনি। যদি দেখি কোনো ব্যবসায়ী সাংবাদিকদের ওপর হামলা করেছে তাহলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেব। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অনুরোধ করব তাদের বিরুদ্ধে যেন যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হয়।’
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি বলেন, ‘নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে এ ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি আমরা। একই সঙ্গে নিউ মার্কেট এলাকার দোকানমালিক ও কর্মচারীদের অনুরোধ করছি, তারা যেন ছাত্রদের উদ্দেশ করে কোনো ধরনের উসকানিমূলক কথা না বলেন। পাশাপাশি ছাত্র-শিক্ষক ভাইদেরও সহনশীল আচরণ করার জন্য অনুরোধ করছি।’
হামলা-সংঘর্ষের ঘটনায় হতাহতদের দায় ব্যবসায়ীরা নেবেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে নিউ মার্কেট দোকান মালিক সমিতির সভাপতি শাহিন বলেন, ‘যিনি নিহত হয়েছেন এবং ব্যবসায়ী ও ছাত্রদের মধ্যে যারা আহত হয়েছেন তারা সবাই ক্ষতিগ্রস্ত। তবে আজ তৃতীয় দিনের মতো আমাদের দোকান বন্ধ। আমরা তো আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। আমরা সবাই মিলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। সামাজিকভাবে আমরা যেহেতু সবাই একই জায়গায় বসবাস করি, তাই এর দায় আমরা কেউই এড়িয়ে যেতে পারি না। তাই তদন্তের মাধ্যমে যারা এই ঘটনার জন্য দোষী হবে তাদের ওপরই এই দায় চাপাতে হবে।’
নিহত তরুণের পরিবারকে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে কোনো ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে কি না জানতে চাইলে শাহিন বলেন, ‘সামাজিক যে দায়িত্ব সেটা অবশ্যই এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা পালন করব।’
দায়িত্বের ধরন সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দায়িত্ব তো দায়িত্বই।’