দেশের ২১টি জেলার অন্যতম যোগাযোগমাধ্যম ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক। স্বাভাবিক সময়েই এই সড়কে যানবাহনের চাপ বেশি থাকে। ঈদ আসলে এই চাপ বাড়ে কয়েক গুণ। এবারের ঈদে ঘরমুখো মানুষের ভোগান্তি দূর করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হলেও এই মহাসড়কের মানিকগঞ্জ অংশে তীব্র যানজট ও ভোগান্তির আশঙ্কা করছেন চালক ও যাত্রীরা।
জেলার সড়ক ও জনপথ বিভাগ জানিয়েছে, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জ অংশের ৩২ কিলোমিটারজুড়ে চার লেনের উন্নয়নকাজ চলছে। এ ছাড়া মহাসড়কের এই অংশটিতে ১১টি রোড ডিভাইডারও আছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার বারোবাড়িয়া থেকে শিবালয়ের পাটুরিয়া ঘাট পর্যন্ত চার লেনের উন্নয়নকাজ চলছে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু অংশে কাজ শেষ হলেও অধিকাংশ জায়গায় তা চলমান রয়েছে। উন্নয়নকাজের জন্য কিছু এলাকায় সড়কের একাংশ বন্ধ রাখা হয়েছে। মহাসড়কের কিছু অংশ সরু থাকা ছাড়াও রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ বাক ও ডিভাইডার।
মহাসড়কের মানিকগঞ্জ অংশে চার লেন তৈরির কাজ চলমান থাকায় ঈদে বড় জ্যামের আশঙ্কা করছেন চালক ও যাত্রীরা
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের নিয়মিত চালক আওলাদ হোসেন বলেন, ‘এই সড়কে স্বাভাবিক সময়েই অনেক যানবাহন চলে। ঈদ আসলে তো কথাই নাই। মানিকগঞ্জের গাড়ি ছাড়াও বিভিন্ন রুটের গাড়ি চলে আসে। যানবাহন বেড়ে যায় বেশ কয়েক গুণ। এতে মহাসড়কে বড় জ্যাম লাগে। এবার আবার রাস্তায় কাজ চলছে। ঈদের ছুটি দিলেই যানজট শুরু হইবো।’
এ ছাড়া সড়কে ব্যাটারিচালিত যান, ইজিবাইক, সিএনজি, পিকআপ ও হ্যালোবাইক চলাচল করে পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলতে পারে বলে মনে করেন আওলাদ। ঈদের সময় এই ধরনের যানগুলোর চলাচলও বাড়ে।
নিউ ভিলেজ লাইন পরিবহনের চালক টিটু মিয়া বলেন, ‘রাস্তায় কাজের কারণে এমনিতেই আমাদের ভোগান্তি হচ্ছে। প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা জ্যামে থাকতে হয়। ঠিকমতো রাস্তার কাজ করলে আমাগো ভোগান্তি হতো না। তারা কী কাজ করে আমরা তো কিছুই বুঝি না। ঈদের সময় কী হবে আল্লাহ ভালো জানে।’
চালক সাইদুর রহমান বলেন, ‘একে তো ঈদের সময় যাত্রীদের চাপ বাড়ে। তার মধ্যে পুরাতন সব গাড়ি রং করে রাস্তায় নামায়। ফলে ইঞ্জিন পুরাতন হওয়ায় ঘন ঘন নষ্ট হয়। এতে সড়কে জ্যাম বাড়ে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যে পর্যন্ত মহাসড়কের কাজ শেষ না হবে আর এই রুটে অতিরিক্ত যান আসা বন্ধ না হবে, ততদিন ভোগান্তি কমবে না। জ্যাম তো হবেই।’
এদিকে মানিকগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী গাউস-উল-হাসান মারুফ বলেন, ‘গতবার কোনো ভোগান্তি হয়নি। এবারও হবে না। কারণ রাস্তার কাজ প্রায় শেষের দিকে। আশা করছি, ভোগান্তি ছাড়াই ঈদে ঘরমুখো মানুষ বাড়ি যেতে পারবে।’
এ ছাড়া মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ গোলাম আজাদ খাঁন জানিয়েছেন, ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রাপথ নিরাপদ এবং ভোগান্তিমুক্ত করতে কাজ করছে পুলিশ। ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ মোতায়েন করা হবে।