সব ধরনের অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে পাবজি খেলা বন্ধের রায় প্রত্যাহার চেয়ে পাবজি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের করা আবেদন খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট। এর ফলে পাবজি খেলা বন্ধই থাকবে।
বুধবার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেয়।
আদালতে পাবজি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার সামির সাত্তার। রিটের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার হুমায়ন কবির পল্লব।
এর আগে গত বছরের ২৪ জুন সব অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে অবিলম্বে পাবজি, ফ্রি ফায়ারসহ এ ধরনের সব ক্ষতিকর গেম বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট।
এ আদেশের পরে হাইকোর্টে মামলাটিতে পক্ষভুক্তির আবেদন করে পাবজি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। আদালতের অনুমতি নিয়ে পাবজি বন্ধের আদেশ প্রত্যাহার চেয়ে তারা আবেদন করে। আদালত সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে তাদের আবেদনটি খারিজ করে দেয়।
এর ফলে পাবজি বন্ধই থাকছে বলে জানান রিটকারী আইনজীবী হুমায়ন কবির পল্লব।
সব অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে টিকটক, বিগো লাইভ, পাবজি, ফ্রি ফায়ার গেম তথা লাইকির মতো সব ধরনের অনলাইন গেম এবং অ্যাপস অবিলম্বে বন্ধ করার নির্দেশনা চেয়ে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব এবং ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাউছার।এর আগে গত বছরের ১৯ জুন তারা আইনি নোটিশ পাঠিয়েছিলেন।
নোটিশে বলা হয়, টিকটক, বিগো লাইভ, পাবজি এবং ফ্রি ফায়ারের মতো গেমগুলোতে বাংলাদেশের যুব সমাজ এবং শিশু-কিশোররা ব্যাপকভাবে আসক্ত হয়ে পড়েছে। যার ফলে সামাজিক মূল্যবোধ, শিক্ষা, সংস্কৃতি বিনষ্ট হচ্ছে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হয়ে পড়ছে মেধাহীন। এসব গেমস যুব সমাজকে সহিংসতা প্রশিক্ষণের এক কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে।
অন্যদিকে টিকটক, লাইকি অ্যাপস ব্যবহার করে দেশের শিশু কিশোর এবং যুব সমাজ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছে। অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে এবং সারাদেশে কিশোর গ্যাং কালচার তৈরি হচ্ছে।
এ ছাড়াও সম্প্রতি নারী পাচারের ঘটনা এবং বাংলাদেশ থেকে দেশের বাইরে অর্থ পাচারের ঘটনায়ও টিকটক, লাইকি এবং বিগো লাইভের মাধ্যমে চলছে যেটা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক এবং দেশের ও জনস্বার্থের পরিপন্থী।
নোটিশে আরও বলা হয়, এই বিষয়টি মনিটর করার জন্য এবং শিশুদের জন্য উপযোগী অনলাইন গেমসগুলোকে সুপারিশ করার জন্য মনিটরিং টিম গঠন করা জরুরি। তাই সব অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে পাবজি, ফ্রি ফায়ার গেমস এবং টিকটক, লাইকি, বিগো লাইভের মত ক্ষতিকারক অ্যাপসগুলোকে অপসারণ করা এবং সব লিংক বন্ধ করার অনুরোধ করা হয়।
একই সঙ্গে এ সব বিষয় মনিটরের জন্য এবং শিশুদের উপযোগী অনলাইন গেমসগুলো সুপারিশ করার জন্য মনিটরিং এবং সুপারিশ কমিটি গঠন করতে অনুরোধ করা হয় নোটিশে।
নোটিশের জবাব না পাওয়ায় হাইকোর্টে রিট করেন দুই আইনজীবী।