রাজধানীর অদূরে টঙ্গীল যানজটে প্রতিদিন অন্তত ১০ কোটি টাকার জ্বালানি ক্ষতি হচ্ছে বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সহসভাপতি এবং পরিবহন ও যোগাযোগ (রেল, সড়ক ও মহাসড়ক) বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির ডিরেক্টর ইন চার্জ আমিনুল হক শামীম।
পরিবহন ও যোগাযোগ (রেল, সড়ক ও মহাসড়ক) বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রথম বৈঠকে এ কথা জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘শুধু টঙ্গীর যানজটে দিনে জ্বালানি খরচসহ ক্ষতি হচ্ছে ১০ কোটি টাকা। অথচ তার সমাধান হচ্ছে না।’
শামীম বলেন, ‘ করোনায় ১৮ মাস গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও সরকারের কাছ থেকে কোনো সহায়তা পাওয়া যায়নি। খেলাপি হওয়া এড়াতে, আয় না থাকলেও ব্যাংকঋণের কিস্তি নিয়মিত পরিশোধ করতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে আগামী বাজেটে টায়ার, টিউব ও অন্য যন্ত্রাংশের ওপর বাড়তি শুল্ক-কর আরোপ করা ঠিক হবে না।’
১৪ দিন সড়কে কাজ বন্ধের আহ্বান
আসন্ন ঈদে ঘরমুখো মানুষের ভোগান্তি কমাতে বিভিন্ন সড়কে চলমান সংস্কার ও নির্মাণকাজ ঈদের আগে-পরে মোট ১৪ দিন বন্ধ রাখার আহ্বান জানায় এফবিসিসিআই।
এ ছাড়া ঈদযাত্রায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের ভোগান্তি কমাতে মাওয়া ও আরিচায় বাড়তি ফেরি ও ফেরির ট্রিপের সংখ্যা বাড়ানোরও আহ্বান জানানো হয়েছে।
বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এফবিসিসিআই সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, ‘বিভিন্ন সড়কে সংস্কার ও নির্মাণকাজ চলায় যানবাহনের গতি ধীর হয়ে যায়, যা দীর্ঘ যানজট তৈরি করে। ঈদে ঘরমুখো মানুষের ভোগান্তি কমাতে তাই ২৭ এপ্রিল থেকে ১০ মে পর্যন্ত সড়কের সংস্কার ও নির্মাণকাজ বন্ধ রাখতে হবে।’
এই সময়ে যেসব পয়েন্টে বেশি যানজট হয়, সেখানে সার্বক্ষণিক হাইওয়ে পুলিশ মোতায়েনের দাবি জানান তিনি।
এ ছাড়া সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধে সরকারি সংস্থাগুলোর কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার দাবিও জানান তিনি।
সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধের অনুরোধ জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশের মহাপরিদর্শককে শিগগিরই এফবিসিসিআই থেকে চিঠি পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।
বৈঠকে এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে পদ্মা সেতুর টোল নির্ধারণে এফবিসিসিআই, সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি ও বাস ট্রাক মালিক সমিতিকে সম্পৃক্ত করার প্রস্তাব রাখা হয়।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চাঁদাবাজি বন্ধ চান নেতারা
কমিটির চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ বাস ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান রমেশ চন্দ্র ঘোষ বলেন, রাজধানীর জয়কালী মন্দির ও ইত্তেফাক মোড়ে প্রতি রাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বেআইনিভাবে চাঁদা তোলেন। চাঁদাবাজি বন্ধে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সহায়তা চান তিনি।
করোনাকালে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত খাত হিসেবে গণপরিবহন খাত চিহ্নিত করে রমেশ চন্দ্র ঘোষ আগামী তিন বছর এ খাতে নীতি সুরক্ষা দেয়ার আহ্বান জানান। আগামী বাজেটে বাড়তি কোনো কর আরোপ না করার আহ্বানও জানান তিনি।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক বিজয় কুমার কেজরিওয়াল, সাবেক পরিচালক আব্দুল হক, মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজুল হক, স্ট্যান্ডিং কমিটির কো-চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, এম হুমায়ুন কবীর, ফারুক তালুকদার সোহেল, গোলাম কবীর, জি রহমান শহীদ, বজলুর রহমান রতনসহ অন্যরা।