ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে দুই দিন বন্ধ থাকার পর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিউ মার্কেট দোকান মালিক সমিতি। বুধবার বেলা ৩টা থেকে নিউ মার্কেটের সব দোকান খুলে দেয়ার কথা সংবাদ সম্মেলনে জানান ব্যবসায়ী নেতারা।
তবে এখন পর্যন্ত কোনো দোকান খুলতে দেখা যায়নি। দোকানগুলোর সামনে দোকান মালিক ও কর্মচারীরা অবস্থান করছেন।
তারা বলছেন, এখনও ব্যবসায়ী নেতারা দোকান খোলার সিদ্ধান্তের কথা দোকান মালিকদের জানাননি। জানানোর সঙ্গে সঙ্গে তারা দোকান খুলে দিতে নিউ মার্কেটের দোকানগুলোর সামনে অবস্থান করছেন তারা।
ঢাকা নিউ মার্কেটে নিজেদের কার্যালয়ে বুধবার দুপুরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দোকান খোলার ঘোষণা দেন ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহিন।
ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে দুই দিনের সংঘর্ষের পর শান্ত অবস্থা বিরাজ করছে নিউ মার্কেট এলাকায়। বুধবার সকাল থেকে নির্বিঘ্নে যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। নিউ মার্কেট থেকে সায়েন্সল্যাব পর্যন্ত এলাকায় সড়কে দেখা যায়নি কোনো শিক্ষার্থীকে।
প্রেক্ষাপট
নিউ মার্কেট এলাকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সোমবার মধ্যরাতে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। এর জেরে রাতভর উত্তেজনা ছিল ওই এলাকায়।
মঙ্গলবার সকালে আবারও সড়কে নেমে আসেন শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীরা। দুপক্ষের পাল্টাপাল্টি অবস্থানে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় পুরো এলাকা।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রড ও লাঠিসোঁটা হাতে দলবেঁধে নিউ মার্কেট এলাকায় আসতে থাকেন ঢাকা কলেজের ছাত্ররা। শুরু হয় ভাঙচুর। হাতে লাঠিসোঁটা নিয়ে বেরিয়ে আসেন ব্যবসায়ীরাও। বেধে যায় তুমুল সংঘর্ষ।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে পুলিশ।
সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত সংঘর্ষের ঘটনায় ঢাকা কলেজেরই অন্তত ৩০ শিক্ষার্থী আহত হন বলে নিশ্চিত করেন ঢাকা কলেজ শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক ড. মো. আব্দুল কুদ্দুস সিকদার। তবে শিক্ষার্থীদের দাবি, তাদের শতাধিক সহপাঠী আহত হয়েছেন।
অন্যপক্ষে ব্যবসায়ী ও পথচারীদের অনেকে আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে।
এদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় আহত এক তরুণের মৃত্যু হয়েছে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ইমার্জেন্সি সেন্টারের আইসিইউতে মঙ্গলবার রাত ৯টা ৪০ মিনিটে তার মৃত্যু হয়। একই ঘটনায় আহত হয়ে ভর্তি থাকা তিনজনের অবস্থা গুরুতর।
নিহত তরুণের নাম নাহিদ হাসান। তিনি একটি প্রতিষ্ঠানে ডেলিভারিম্যান হিসেবে কাজ করতেন।
দিনভর থেমে থেমে সংঘর্ষের পর অবশেষে ছাত্র-ব্যবসায়ী দুই পক্ষই রাস্তা ছাড়ে। ঢাকা কলেজের ছাত্ররা রাত সোয়া ১০টার দিকে ক্যাম্পাসে ফিরে যান। এর পর পরই কলেজের ফটক বন্ধ করে দেয়া হয়। এর কিছু পর ব্যবসায়ীরাও ফিরে যান।