বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বাঁধ কাটলেন মাছচাষি, ফসল হারালেন কৃষক

  •    
  • ২০ এপ্রিল, ২০২২ ১৩:৫৪

কৃষক ইব্রাহিম মিয়া বলেন, ‘এই জোয়ারের পানিতে মুগডাল তলিয়ে গাছ সম্পূর্ণ নষ্ট হবে। মুগডাল চাষে লাভতো হবেই না, উল্টো ঋণ পরিশোধও করতে পারব না। আমরা জমাদ্দারকে একাধিকবার বাঁধ কাটতে নিষেধ করলেও কথা না শুনে বাঁধটি কেটে দেয়।’

বরগুনার তালতলীতে ফসল রক্ষার বাঁধ কেটে ব্যক্তিগত মাছের ঘেরে পানি নেয়ার কারণে কৃষকের প্রায় ১৭ একর জমির মুগডাল জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে।

অভিযোগ, স্থানীয় নবী হোসেন জমাদ্দার নামের এক প্রভাবশালী তার মাছের ঘেরে পানি ওঠাতে গিয়ে বাঁধ কেটে দেন। এতে জোয়ারের পানি ঢুকে ওই এলাকার ৯ কৃষকের ১৭ একর জমির মুগডাল এখন পানিতে নিমজ্জিত।

ধার-দেনা করে আবাদের মুগডাল বিক্রি করে লাভের মুখ দেখবেন- এমন আশায় বুক বাঁধলেও ফসলি ঋণের টাকা কীভাবে শোধ করবেন সে চিন্তার ভাঁজ এখন তাদের কপালে।

স্থানীয় ইসমাইল হোসেন জানান, উপজেলার খোট্টার চর এলাকায় গত বছর প্রায় ৩৮ লাখ টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) ফসল রক্ষার বাঁধ নির্মাণ করে। কিন্তু ব্যক্তিগত ঘেরে মাছ চাষের জন্য এ বাঁধ কেটে জোয়ারের পানি ওঠান জমাদ্দার। কৃষকদের অভিযোগ, তারা বাঁধ কাটতে নিষেধ করলেও তাতে কর্ণপাত করেননি তিনি।

বাঁধটিতে গিয়ে দেখা যায়, বাঁধ কাটার ফলে সে অংশ দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকছে। এতে তলিয়ে গেছে আশেপাশের মুগডালের জমিগুলো।

কৃষক মোঃ ইব্রাহীম মিয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ৯ জন কৃষক এ বছর ১৭ একর জমিতে মুগডাল চাষ করি। এতে প্রায় ৪ লাখ টাকা খরচ হয়। মুগডাল ফলন ভালো হওয়াতে ঋণ পরিশোধ করে লাভের মুখ দেখার আশায় ছিলাম। কিন্ত স্থানীয় প্রভাবশালী নবী হোসেন জমাদ্দার সোমবার রাতে তার ব্যক্তিগত ঘেরে মাছ চাষের জন্য ফসল রক্ষার বাঁধ কেটে জোয়ারের পানি উঠায়। এতে ফসলের মাঠ জোয়ারের নোনা পানিতে ডুবে গেছে।’

কৃষক ইব্রাহিম মিয়া বলেন, ‘এই জোয়ারের পানিতে মুগডাল তলিয়ে গাছ সম্পূর্ণ নষ্ট হবে। মুগডাল চাষে লাভতো হবেই না, উল্টো ঋণ পরিশোধও করতে পারব না। আমরা জমাদ্দারকে একাধিকবার বাঁধ কাটতে নিষেধ করলেও কথা না শুনে বাঁধটি কেটে দেয়।’

কৃষক খলিল মিস্ত্রী বলেন, ‘মিস্ত্রীর কাজ করে মুগডাল চাষ করছি। গায়ের জোরে বাঁধ কেটে দিছে, জোয়ারের পানিতে আজ সব শেষ। কি জন্য এতো কষ্ট করলাম। এখন কার কাছে যাব, কি করব জানি না। আমাদের দুঃখ দেখার কেউ নেই।’

জানতে চাইলে নিজের পক্ষেই সাফাই গাইলেন বাঁধ কেটে দেয়া জমাদ্দার। নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার রেকর্ডি জমির উপরের বাঁধ কেটে পানি উঠাইছি। আমার লাখ লাখ টাকার মাছ বাঁচানোর জন্য পানি উঠাইছি। এতে যদি কোনো কৃষকের ক্ষতি হয়, তাতে আমার কিছু করার নেই।’

উপজেলা কৃষি অফিসার সি এম রেজাউল করিম জানান, তাদের অনুমতি না নিয়েই এ বাঁধ কেটেছেন জমাদ্দার। বলেন, ‘বাঁধ কেটে পানি ওঠানোর প্রশ্নই আসে না। এ বিষয়ে কৃষকরা যদি কোনো আইনি ব্যবস্থা নিতে চায়, তাহলে সব ধরণের সহযোগিতা করা হবে।’

বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) বরগুনা জেলা কর্মকর্তা মো. প্রিন্স মল্লিক নিউজবাংলাকে বলেন বিষয়টি তার জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে দেখবেন। অভিযোগের সত্যতা পেলে আইনি ব্যবস্থা নেবেন।

এ বিভাগের আরো খবর