ব্যবসায়ী ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দুই দিনের সংঘর্ষের পর শান্ত অবস্থা বিরাজ করছে নিউ মার্কেট এলাকায়।
বুধবার সকাল থেকে নির্বিঘ্নে যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। নিউ মার্কেট থেকে সায়েন্স ল্যাব পর্যন্ত এলাকায় সড়কে দেখা যায়নি কোনো শিক্ষার্থীকে।
ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা তাদের ক্যাম্পাসে অবস্থান করছেন। আর নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ীরা বেলা সোয়া ১১টা পর্যন্ত দোকান খোলেননি।
নিউমার্কেট দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম শাহীন বলেন, ‘আমরা এখনও দোকান খুলিনি। প্রশাসনের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি। উনারা যা বলবে, সে অনুযায়ী আমরা আগাব। দোকান খুলতে বললে খুলব আর নিষেধ করলে খুলব না।’
এদিকে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের একটি অংশের নীলক্ষেত মোড়ে মানববন্ধন করার কথা থাকলেও প্রতিকূল আবহাওয়ায় কর্মসূচি শুরু করতে দেরি হচ্ছে।
সাত কলেজ আন্দোলনের সমন্বয়ক ইসমাইল সম্রাট জানান, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন হবে, তবে এ সময়ে যান চলাচলে বাধা দেয়া হবে না।
প্রেক্ষাপট
নিউ মার্কেট এলাকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সোমবার মধ্যরাতে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। এর জেরে রাতভর উত্তেজনা ছিল ওই এলাকায়।
মঙ্গলবার সকালে আবারও সড়কে নেমে আসেন শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীরা। দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি অবস্থানে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় পুরো এলাকা।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রড ও লাঠিসোঁটা হাতে দলবেঁধে নিউ মার্কেট এলাকায় আসতে থাকেন ঢাকা কলেজের ছাত্ররা। শুরু হয় ভাঙচুর। হাতে লাঠিসোঁটা নিয়ে বেরিয়ে আসেন ব্যবসায়ীরাও। বেধে যায় তুমুল সংঘর্ষ।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে পুলিশ।
সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত সংঘর্ষের ঘটনায় ঢাকা কলেজেরই অন্তত ৩০ শিক্ষার্থী আহত হন বলে নিশ্চিত করেন ঢাকা কলেজ শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক ড. মো. আব্দুল কুদ্দুস সিকদার, তবে শিক্ষার্থীদের দাবি, তাদের শতাধিক সহপাঠী আহত হয়েছেন।
অন্যপক্ষে ব্যবসায়ী ও পথচারীদের অনেকে আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে।
এদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় আহত এক তরুণের মৃত্যু হয়েছে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ইমার্জেন্সি সেন্টারের আইসিইউতে মঙ্গলবার রাত ৯টা ৪০ মিনিটে তার মৃত্যু হয়। একই ঘটনায় আহত হয়ে ভর্তি থাকা তিনজনের অবস্থা গুরুতর।
নিহত তরুণের নাম নাহিদ হাসান। তিনি একটি প্রতিষ্ঠানে ডেলিভারিম্যান হিসেবে কাজ করতেন।
দিনভর থেমে থেমে সংঘর্ষের পর অবশেষে ছাত্র-ব্যবসায়ী দুই পক্ষই রাস্তা ছাড়ে। ঢাকা কলেজের ছাত্ররা রাত ১০টা ১৫ মিনিটে ক্যাম্পাসে ফিরে যান। এর পরপরই কলেজের ফটক বন্ধ করে দেয়া হয়। এর কিছু পর ব্যবসায়ীরাও ফিরে যান।