ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্যের বিরুদ্ধে সরকারি বরাদ্দের ১০ টাকা কেজি চাল আত্মসাতের অভিযোগ তদন্তে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
স্থানীয় গ্রাম পুলিশ নরেশ চন্দ্র দাস সোমবার সন্ধ্যায় হারেজ আলীর নামে লিখিত অভিযোগ দেন। হারেজ ফুলবাড়িয়া উপজেলার এনায়েতপুর ইউনিয়নের সাবেক সদস্য এবং ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ডিলার।
ফুলবাড়িয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জ্যোতিষ চন্দ্র দেব নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অভিযোগের বরাতে তিনি জানান, হারেজ আলী হতদরিদ্রদের মাঝে ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রির সরকারি নিয়োগপ্রাপ্ত ডিলার। তিনি ইউনিয়ন পরিষদের একটি গুদামে চাল রেখে বিক্রি করতেন। গত শুক্রবার ভোররাতে হারেজ গুদাম থেকে প্রায় ৩০ বস্তা চাল একটি পিকআপ ভ্যানে করে সরিয়ে ফেলেন।
পিকআপের ধাক্কায় গুদামের সামনের প্লাস্টারও ভেঙে যায়। গ্রাম পুলিশ নরেশ চন্দ্র দাস বিষয়টি দেখতে পান। চেয়ারম্যানের পরামর্শে নরেশ থানায় অভিযোগ করেন।
ইউনিয়ন পরিষদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিল মাসে হারেজ ৬৫৮টি কার্ডের বিপরীতে সরকারি গুদাম থেকে ১৯ হাজার ৭৪০ কেজি চাল তুলেছেন। সব চাল বিতরণ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, এলাকার অন্তত ৬০ জন কার্ডধারী ১০ টাকা কেজির চাল পাননি।
৩ নম্বর ওয়ার্ডের এনায়েতপুর এলাকার কার্ডধারী সুফিয়া বেগম জানান, ছয় থেকে সাত মাস ধরে তিনিসহ আরও অনেককে চাল দেয়া হয়নি। ডিলার হারেজের কাছে গেলে তিনি কোনো সদুত্তর দেন না। তালিকায় নাম থেকেও চাল না পেয়ে তাদের কষ্টে দিন পার করতে হচ্ছে।
চাল আত্মসাতের অভিযোগের বিষয়ে হারেজ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি মাইকিং করে চার দিন চাল দিয়েছি। কেউ না পেয়ে থাকলে আসুক। চাল আছে, তারা এলে দেব। কারো ইন্ধনে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ তোলা হয়েছে। তদন্ত করলেই সব পরিষ্কার হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদুল করিম বলেন, ‘গ্রাম পুলিশের ডিলারের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দেয়ার কথা না। ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। হতদরিদ্রের চাল অন্য জায়গায় বিক্রি করা দণ্ডনীয় অপরাধ। তদন্ত সাপেক্ষে তার ডিলারশিপ বাতিলসহ আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ওসি মোল্লা জাকির হোসেন জানান, পুলিশ গুদাম পরিদর্শন করেছে। বিষয়টি দুদককে জানানো হয়েছে। তারা তদন্ত শুরু করেছে। লিখিত অভিযোগটি দ্রুত মামলা হিসেবে নথিবদ্ধ করা হবে।
এনায়েতপুর ইউপি চেয়ারম্যান বুলবুল হোসেন বলেন, ‘কার্ডধারীদের চাল না দিয়ে সেটা আত্মসাৎ করার ঘটনাটি দুঃখজনক। তদন্তে অপরাধ প্রমাণিত হলে হারেজের বিরুদ্ধে প্রশাসন আইনি ব্যবস্থা নেবে এমনটাই প্রত্যাশা করি।’