ঢাকা কলেজের ছাত্রদের ওপর পুলিশের অ্যাকশনের তদন্ত হবে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। তিনি বলেন, অ্যাকশনে যাওয়ার প্রয়োজন ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে। কোনো ধরনের বাড়াবাড়ি ছিল কি না তাও তদন্তে বের হয়ে আসবে।
রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে মঙ্গলবার রাতে ঢাকা কলেজের ছাত্র মোশাররফ হোসেনের অবস্থার খোঁজ নেয়া শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান মন্ত্রী।
দীপু মনি বলেন, ‘মোশাররফ হোসেনের চিকিৎসার ব্যবস্থা হবে। এ ছাড়া আহত সব শিক্ষার্থীর চিকিৎসারও ব্যবস্থা করা হবে।’
তিনি বলেন, আমরা তাকে (আহত মোশাররফ) দেখলাম। তার চোখে আঘাত লেগেছে। কিন্তু সে সচেতন আছে। আমার সঙ্গে তার কথা হয়েছে। ডাক্তারদের সাথেও আমি কথা বলেছি। তার যা চিকিৎসা প্রয়োজন তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তার সব চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আরও যা যা চিকিৎসা দরকার, তা আমি গ্রহণ করব।
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘সোমবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আজ সকাল থেকে দু’পক্ষকে যদি দূরে রাখা যেত, তবে হয়তো প্রাণহানির ঘটনা ঘটত না। আমরা সবার খোঁজ নিচ্ছি। ঢাকা মেডিক্যালে যাকে নেয়া হয়েছে তার বিষয়েও খোঁজ নিব। তার উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করব।’
সংঘর্ষের ঘটনায় আহত একজনের মৃত্যুর বিষয়ে দীপু মনি বলেন, ‘খুবই দুঃখজনক ঘটনা। এখানে যা ঘটেছে, তা এতদূর গড়ানোর কোনো কারণই ছিল না। আপনাদের ফুটেজে দেখলাম, দুটো দোকানের মধ্যে তাদের বাকবিতণ্ডায় কিছু ছাত্রকে জড়ানো হয়েছে বা তারা জড়িয়েছে।
তারপর একটা ঘটনা ঘটেছে। গতকালই তারা আহত হয়েছেন। আশা করছিলাম আজ সকাল থেকে দুই পক্ষ আলাদা থাকবে। তাদের যদি দূরে রাখা যেত, তাহলে হয়তো প্রাণহানির ঘটনা ঘটত না।’
পরিস্থিতি এখন শান্ত জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘কিছু পক্ষ আছে যাদের দরকার অশান্তি, অস্থিতিশীলা, অরাজকতা। তারাই ছোট ঘটনাকে নানাভাবে বড় করে দেখানোর চেষ্টা চালায়।’
প্রেক্ষাপট
সোমবার মধ্যরাতে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। সে রেশে রাতভর উত্তেজনা ছিল রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকায়।
মঙ্গলবার সকালে আবারও পথে নেমে আসেন শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীরা। দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি অবস্থানে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে পুরো এলাকা।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রড ও লাঠিসোটা হাতে দলবেঁধে নিউ মার্কেট এলাকায় আসতে থাকেন ঢাকা কলেজের ছাত্ররা। শুরু হয় ভাঙচুর। হাতে লাঠিসোটা নিয়ে বেরিয়ে আসেন ব্যবসায়ীরাও। বেধে যায় তুমুল সংঘর্ষ।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পুলিশ।
গতকাল থেকে মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত সংঘর্ষের ঘটনায় ঢাকা কলেজেরই অন্তত ৩০ শিক্ষার্থী আহত হন বলে নিশ্চিত করেন ঢাকা কলেজ শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক ড. মো. আব্দুল কুদ্দুস সিকদার। তবে শিক্ষার্থীদের দাবি, তাদের শতাধিক সহপাঠী আহত হয়েছেন।
অপরপক্ষে ব্যবসায়ী এবং পথচারীদের অনেকে আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। এই সংঘর্ষকালেই আহত হন কয়েকজন পথচারী।