দোকানের নাম ‘আর কে পচা কলার দোকান’। নাম শুনে খটকা লাগতে পারে, তবে দোকানের এটাই নাম। আর এ দোকানেই ক্রেতার ভিড়।
‘আর কে’ মানে রিয়াজ খন্দকার– দোকানের মালিকের নাম। তিনি বলেন, ‘আমার দোকানের কলা সম্পূর্ণ বিষমুক্ত। আমি মেডিসিন (ফরমালিন অথবা কার্বাইড) দেয়া কলা বিক্রি করি না। দুঃখজনক হলেও সত্য, অনেকে ভেজালভুক্ত দোকানের সাইনবোর্ড লাগিয়েও ক্রেতার সঙ্গে প্রতারণা করে। আমি তা না করে উল্টোটাই করেছি। এবং সততার মাধ্যমে ক্রেতার বিশ্বাস অর্জন করেছি।’
কিন্তু দোকানের নাম পচা কলার দোকান কেন? রহস্য খোলাসা করলেন দোকানি নিজে।
বললেন, কলা পচনশীল পণ্য, এটা পচবেই। যে সবজিতে ফরমালিন আছে তা সহজে পচে না। কিন্তু তার দোকানের কলা তিন দিনেই পচে যায়, নষ্ট হয়ে যায়। ক্রেতা এসে পাকা কলা দেখলেই বলে এটা তো পচা কলা। এ জন্যই দোকানের নাম দিয়েছি ‘পচা কলার দোকান।’
রাজধানীর মধ্য বাড্ডা এলাকার এই দোকানকে অনেকে গরিবের দোকান নামেও চেনে। কারণ জানতে চাইলে রিয়াজ খন্দকার বলেন, ‘যে কলাগুলো আমি বিক্রি করতে পারি না, তা রাতে দোকানের বাইরে রশিতে ঝুলিয়ে রাখি। কলাগুলোর খোসা কালো হলেও ভেতরে কিন্তু ভালোই থাকে। সকালে এসে দেখি রশি আছে, কিন্তু কলা নেই। যাদের টাকা দিয়ে কলা কেনার সামর্থ্য নেই, তারা এখান থেকে কলা নিয়ে খায়। এ জন্যই হয়তো অনেকে আমার এ দোকানকে গরিবের কলার দোকান নাম দিয়েছে।’
পচা কলার দোকান নাম হলেও এ দোকানের কলাগুলো পচা নয় বলে জানালেন একাধিক ক্রেতা।
নিয়মিত ‘আর কে পচা কলার দোকান’ থেকে কলা কেনেন বাড্ডার বাসিন্দা হারুন উর রশিদ।
জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দোকানের নাম পচা কলার দোকান হলেও প্রকৃতপক্ষে এখানে বিষমুক্ত ভালো কলা পাওয়া যায়। পচা কলার দোকান নাম দেয়ায় এর বিক্রি কমেনি, বরং বাড়ছে। কারণ তিনি ভেজালমুক্ত বলে ভেজাল পণ্য (কলা) বিক্রি করেন না। বরং পচা বলে বিষমুক্ত কলা বিক্রি করেন।’
একই কথা বললেন এলাকার বাসিন্দা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী আরাফাত ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘প্রথমে তার দোকানের নাম দেখে খটকা লাগলেও পরে কলা কিনে আমার ভুল ভেঙেছে। এ কথা স্বীকার করতেই হবে যে ওনার কলাগুলো সুস্বাদু ও মিষ্টি। ওনার দোকানের নাম পচা কলার দোকান বলা হলেও কলা কিন্তু সতিই সুস্বাদু।’