প্রতারণার ৩০টিরও বেশি মামলার আসামি রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান সাহেদ করিমের বিরুদ্ধে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা পরিচয়ে ব্যাংক ঋণ নেয়ার প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
মঙ্গলবার দুপুরে কমিশনের প্রধান কার্যালয়ের ফটকে ব্রিফিংয়ে এসে এ তথ্য জানান কমিশনের সচিব মাহবুব হোসেন।
তিনি বলেন, ‘রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহেদের বিরুদ্ধে এনআরবি ব্যাংক থেকে অবসরপ্রাপ্ত মেজরের পরিচয় দিয়ে লোন নিয়েছেন। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুদকে মামলা করা হয়েছিল। সে মামলায় তদন্তের স্বার্থে আমরা আজ তাকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি।
‘তদন্তে এখন পর্যন্ত যা পাওয়া গেছে তা হলো, লোন নেয়ার ক্ষেত্রে যে জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করা হয়েছিল তা ভুয়া। তার আরও দুইটি জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়া গেছে। এগুলোর বিষয়েও তদন্ত করা হবে।’
জাতীয় পরিচয় তৈরিতে বিধিবহির্ভূত কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান দুদক সচিব।
দুদক সচিব জানান, ২০২০ সালের ২৪ জুলাই সাহেদ করিম ও রিজেন্ট হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাসুদ পারভেজের বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় প্রতারণার অভিযোগে মামলা করেন বালু ব্যবসায়ী এস এম শিপন।
মামলার বলা হয়, শিপন আলী নামে একজন ২০১৯ সালের ২৭ অক্টোবর তার প্রতিষ্ঠান থেকে ১৯ কোটি ৭৫ লাখ টাকার ৫০ লাখ সিএফটি বালু কেনেন। সাহেদ ও মাসুদের নির্দেশে তিনি এই বালু কেনেন শিপন আলী।
বালুর দাম হিসেবে যে চেক দেয়া হয়, সেটি ব্যাংক থেকে প্রত্যাখ্যাত হয় পর্যাপ্ত টাকা না থাকায়। এরপর মামলা করেন এস এম শিপন।
তদন্ত শেষে ২০২০ সালে ৮ নভেম্বর তিনজনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দেন সিআইডির পরিদর্শক আকরাম হোসেন।
সাহেদের নামে যত মামলাসাহেদ করিমের বিরুদ্ধে মোট ৩৫ টি মামলা চলছে বলে নিউজবাংলাকে জানান তার প্রধান আইনজীবী মোহাম্মদ দবির উদ্দিন। তিনি জানান, ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও সাতক্ষীরাসহ কয়েকটি জেলায় মামলা রয়েছে তার মক্কেলের বিরুদ্ধে।
২০২০ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর অস্ত্র মামলায় সাহেদকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন ঢাকার জেষ্ঠ্য বিশেষ জজ কেএম ইমরুল কায়েশ।
২০২০ সালের ৬ জুলাই রাজধানী উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযান চালায় র্যাব। অভিযানে করোনা পরীক্ষা নিয়ে জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়ে সাহেদসহ ১৭ জনকে আসামি করে মামলা হয়।
ওই বছরের ১৫ জুলাই সাতক্ষীরার দেবহাটা সীমান্ত থেকে অস্ত্রসহ সাহেদকে গ্রেপ্তারের কথা জানায় বাহিনীটি। পরে তাকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় আনা হয়।
এরপর থেকে সাহেদের বিরুদ্ধে একের পর এক প্রতারণার অভিযোগ আসতে থাকে।