ঢাকা কলেজের ছাত্র ও নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ীদের মধ্যে সংঘর্ষের মধ্যে পুলিশের ‘নিষ্ক্রিয় ভূমিকার’ কারণে সমালোচনার মধ্যে ঢাকা মহানগর পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, তারা কৌশলী কারণে এই ভূমিকায় ছিলেন।
গত রাতে শুরু হওয়া এই সংঘর্ষ গোটা রাজধানীতে এখন সবচেয়ে আলোচিত ঘটনার একটি। সকাল থেকে থেমে থেমে চলা মারামারির মধ্যে ছাত্ররা যেমন মার্কেট খুলতে না দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন, তেমনি কলেজও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সেটি আবার মানতে চাইছেন না ছাত্ররা।
মঙ্গলবার সকালে যখন দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি শুরু হয়, তখন কয়েক ঘণ্টা পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়নি। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ সেখানে ঢোকে নীলক্ষেত দিয়ে, যেখানে অবস্থান করছিলেন ব্যবসায়ীরা।
বাহিনীটি ব্যবসায়ীদের পাশে অবস্থান করে ছাত্রদের দিকে কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। পাশাপাশি ব্যবসায়ীদেরও সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। তবে এই ধরনের সংঘর্ষের ক্ষেত্রে অন্যান্য সময়ে যে ধরনের তৎপরতা দেখা দেয়, সে রকম তৎপরতা দেখা যায়নি।
পুলিশের আসতে দেরি হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির রমনা জোনের উপকমিশনার সাজ্জাদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘পুলিশ আশপাশেই ছিল। তবে স্ট্র্যাটেজিক কারণে পুলিশ সামনে আসেনি।’
এই স্ট্র্যাটেজিক বা কৌশলগত কারণ কী সেটি অবশ্য স্পষ্ট করেননি তিনি।
তাদের ভূমিকা তুলে ধরে রমনা জোনের ডিসি বলেন, ‘যে অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয়ের কারণে এই ঝামেলার উদ্ভব হয়েছে আমরা গতকাল রাতে দুই পক্ষকে শান্ত করেই তারপর গিয়েছি। আজ সকালে শিক্ষার্থীরা আবার অবস্থান নেন। তবে তাদের অবস্থান শান্তিপূর্ণ ছিল। পরে হকার্স মার্কেট এবং ফুটপাতের দোকানিরা আসলে তাদের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়। এটি শান্ত করার জন্য আমাদের পুলিশ যথেষ্ট ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে প্রচেষ্টা চালিয়েছে।
‘শুরুতে আমরা ছাত্রনেতৃবৃন্দ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতাদের সঙ্গে কথা বলে শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করেছি, যারাই এই ঘটনায় দোষী তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, দুই বছর করোনার কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষতির বিষয়টি মাথায় রেখে তারা ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘এই বিজনেস হাব আবার সচল হবে, আমরা সর্বাত্মকভাবে সেই প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। রাষ্ট্রের কোনো ক্ষতি হতে না দেয়া আমাদের প্রধান প্রায়োরিটি। এটি অক্ষুণ্ন রেখে আমরা যারা দোষী তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।’
সংঘর্ষে হতাহত কত এমন প্রশ্নে ডিসি সাজ্জাদুর রহমান বলেন, ‘কয়েকজন ছাত্র ভাই এবং ব্যবসায়ী আহতের খবর আমরা পেয়েছি। এখন আমরা সংশ্লিষ্ট হাসাপাতালে যাব। তবে নিহতের কোনো খবর নেই।’