রাজধানীর নিউ মার্কেটে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে ৪১ জন আহত হয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক জানান, এর মধ্যে তিন জনের অবস্থা গুরুতর। তাদের দুই জনকেই ওয়ান স্টপ ইমারজেন্সি সেন্টারে (ওসেক) চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
মঙ্গলবার ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ওয়ান স্টপ ইমারজেন্সি সেন্টারে গুরুতর আহতদের দেখতে আসেন হাসপাতাল পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘নিউ মার্কেটের ঘটনায় সকাল থেকে এ পর্যন্ত হাসপাতালে আনুমানিক ৪১ জনের মতো চিকিৎসা নিয়েছেন। এদের মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর, তাদের আইসিইউ সাপোর্ট দেয়া হচ্ছে।’
নাজমুল হক বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে চিকিৎসার কোনো ত্রুটি হচ্ছে না। আমাদের হাসপাতালে কুইক রেসপন্স টিম তৈরি করা আছে।’
সংঘর্ষে শুধু ঢাকা কলেজের অর্ধশতাধিক ছাত্র আহত হয়েছে বলে দাবি করেছেন শিক্ষার্থীরা।
ব্যবসায়ীরাও বলছেন, তাদের পক্ষেরও অর্ধশতাধিক ব্যবসায়ী-কর্মচারী আহত হয়েছেন।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক বলেন, ‘গুরুতর আহত দুজনের একজনও ছাত্র নয়। তাদের যারা হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন তারা বলেছেন, নিউমার্কেট এলাকায় সংঘর্ষে তারা আহত হয়েছেন।
‘সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে অধিকাংশেরই মাথায় আঘাত রয়েছে। ঢাকা মেডিক্যালে এখন তিনজনকে ভর্তি রাখা হয়েছে।’
ভর্তি থাকা তিনজন হলেন, ১৭ বছর বয়সী মোহাম্মদ ইয়াসিন, ৩৪ বছরের মোরসালিন এবং আরেকজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
ব্যবসায়ী রুবেল বলেন, ‘আমরা সকালে নিউ মার্কেট এলাকার হকার মার্কেটে দোকান খুলি। কাস্টমার আনাগোনা করছেন। ঠিক সেই মুহূর্তে ধর ধর বলে চিৎকার করলে নারী-পুরুষসহ শিশুরা এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করে। তার কিছুক্ষণ পর ইট-পাটকেল আসা শুরু হয়। এরপরই শুরু হয় দুই পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। এতে অনেকে আহত হয়েছেন।
এ সময় আহত হয়েছেন সাংবাদিকরাও। সাংবাদিক আসিফ মুহিত বলেন, ‘আমরা গাউছিয়া মার্কেটের কাছে অবস্থান করছিলাম। সেই মুহূর্তে ব্যবসায়ীরা আমাদের ওপর অতর্কিতে হামলা করেন।’
সোমবার মধ্যরাতে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। সে রেশে রাতভর উত্তেজনা ছিল রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকায়।মঙ্গলবার সকালে আবারও পথে নেমে আসেন শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীরা। দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি অবস্থানে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে পুরো এলাকা।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রড ও লাঠিসোঁটা হাতে দলবেঁধে নিউ মার্কেট এলাকায় আসতে থাকেন ঢাকা কলেজের ছাত্ররা। শুরু হয় ভাঙচুর। হাতে লাঠিসোঁটা নিয়ে বেরিয়ে আসেন ব্যবসায়ীরাও। বেধে যায় তুমুল সংঘর্ষ।
এরপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে যায় পুলিশ। টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পুলিশ।