পোশাক কারখানাগুলো এক দিনে ছুটি দিলে ঈদে বাড়ি ফেরার ভোগান্তি অনেক বেড়ে যাবে উল্লেখ করে ধাপে ধাপে ছুটির অনুরোধ এসেছে সরকারের পক্ষ থেকে।
ঈদ সামনে রেখে মঙ্গলবার দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থতি পর্যালোচনা, ঈদের আগে পোশাকশ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ, সড়ক-মহাসড়ক নিরাপদ ও যানজটমুক্ত রাখাসহ প্রাসঙ্গিক বিষয়ে মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক সভা শেষে এই অনুরোধ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের বড় বড় শিল্পগুলো একসঙ্গে শ্রমিকদের ছুটি না দিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়ার অনুরোধ করছি যে ছুটিটা কীভাবে দেবে।
‘ছুটি যদি একসঙ্গে দেয়, তাহলে আমাদের হিসাবে প্রায় ৬০ লাখ মানুষ ঢাকা ত্যাগ করবে। এরা শুধু শ্রমিক, এর সঙ্গে অন্য মানুষ তো আছেই। কাজেই যানজট সৃষ্টির আশঙ্কা আছে। পর্যায়ক্রমে ছুটিগুলো দিলে সেটি কিছুটা নিয়ন্ত্রণ হবে।’
শ্রম মন্ত্রণালয়, বিজিএমইএ, বিকেএমইএসহ পোশাকশিল্প মালিকদের সঙ্গে বৈঠকে বেতন-বোনাস পরিশোধ এবং ছুটির বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, সেটি যেন মেনে চলা হয়, তার ওপরও জোর দেয়া হয় সভায়।
সভায় হাইওয়ের প্রধান প্রকৌশলী নিশ্চিত করেছেন, ২৫ এপ্রিলের মধ্যে সব রাস্তা সচল হবে। যেখানে খানাখন্দ আছে, সেগুলোও মেরামত করা হবে। এটি যেন কার্যকর হয় এ জন্য আগামীকাল বা পরশুর মধ্যে আবারও বসা হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘যদি কোনো অসুবিধা পাওয়া যায়, সেটি চিহ্নিত করে সমাধানে ব্যবস্থা নেবে।’
যানজট কিছুটা নিয়ন্ত্রণ দুই-এক দিনের মধ্যে
চলমান উন্নয়নকাজের কারণে রাজধানীজুড়ে যানজট বেড়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আশা করছেন, দুই-এক দিনের মধ্যে যানজট কিছুটা নিয়ন্ত্রণ হবে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের ঢাকা শহরে অনেকগুলো উন্নয়নকাজ চলছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, মেট্রোরেল ও ফ্লাইওভারগুলোর কারণে কিছু প্রতিবন্ধকতা আছে। আমাদের এই যানজটের সেটি একটি কারণ।
‘এরপর দীর্ঘদিন কোভিডের পর সবকিছু খুলেছে। আবার ঈদও এসে গেছে। সবাই মার্কেটমুখী। ঘর থেকে বের হয়ে সবাই এসব জায়গায় যাতায়াত শুরু করেছেন, যানজটের কিছু কারণের মধ্যে এগুলোও কারণ।’
যানজট নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা চলছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী, পুলিশ বিভাগ যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন। আগামী সাত দিনে তারা কী করবেন তার একটি কর্মপদ্ধতিও তারা বের করেছেন। আশা করি দুয়েক দিনের মধ্যে যানজট কিছুটা নিয়ন্ত্রণ হবে আমি আশা করি।’
সভার অন্যান্য সিদ্ধান্ত
সভার সিদ্ধান্ত জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ঈদের প্রাক্কালে দেশের সার্বিক আইন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রোধে পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও কাজ করছে। বিশেষ বিশেষ রাস্তা ও মোড়ে চেকপোস্ট স্থাপন এবং জাল টাকার বিস্তার রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
‘ঈদুল ফিতরের ছুটিতে কূটনৈতিক পাড়াসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থান এবং দেশের সকল বন্দরে পুলিশের টহল জোরদার থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটে। ঈদে ঘরমুখো মানুষের নিরাপত্তার জন্য বাস, ট্রেন ও লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বহন রোধে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
‘হাইওয়ে পুলিশের পাশাপাশি র্যাব, জেলা পুলিশ, মেট্রোপলিটন পুলিশের টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি থাকবে।’
ঈদযাত্রায় নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত ভাড়া আদায় রোধে নিরাপত্তা বাহিনী নজর রাখবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘নছিমন করিমনসহ ব্যাটারিচালিত গাড়ি যেন হাইওয়েতে না উঠতে পারে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’