রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের ছাত্রদের সংঘর্ষের ঘটনায় ওই এলাকাসহ আশপাশের সড়কগুলোতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে পুরো ঢাকায়।
সোমবার রাতে সংঘর্ষের পর থেকেই নিউ মার্কেট এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি ছিল। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আবারও সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়; বন্ধ হয়ে যায় সামনের সড়ক।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীরা রাস্তায় নেমে এলে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায় নিউ মার্কেটের সড়কে। আগেই গাড়ি ঘুরিয়ে অন্য রাস্তা বেছে নিতে শুরু করেন চালকরা।
রিকশা বা ছোট ছোট যানবাহনসহ যাত্রীবাহী সব পরিবহন যেতে থাকে বিকল্প পথে। ভোগান্তিতে পড়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানহ অফিসগামী বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
সকাল ১০টার দিকে শান্তিনগর থেকে আজিমপুর যাওয়ার জন্য রওনা হন আল আমিন নামের এক সাধারণ যাত্রী। পথে বেগ পেতে হয়েছে তাকে।
শাহবাগ এলাকায় তিনি জানান, শান্তিনগর থেকে কাকরাইল পর্যন্ত প্রচণ্ড যানজট। নিউ মার্কেটের রাস্তা বন্ধ থাকায় ঢাকা ইউনিভার্সিটি ও এর আশপাশ এলাকায়ও তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে।
নিউ মার্কেট এলাকায় যাওয়ার জন্য মিরপুর কাজীপাড়া থেকে বের হওয়া মৌসুমী ইসলাম বলেন, ‘আমি বের হয়ে গাড়িতে উঠেছি। হেলপার বলছে, ওদিকে মারামারি, ধানমন্ডি ৩২-এর পর আর যাবে না। গাড়ি ঘুরিয়ে দেবে। দেখি কতদূর যেতে পারি।’
নিউ মার্কেট এলাকা থেকে মো. রাফসান জানান, নিউ মার্কেটকেন্দ্রিক সব সড়কে যানবাহন থমকে আছে। কাটাবন সড়কে দুই পাশে কোনো গাড়ি সামনে যেতে পারছে না।
মোহাম্মদপুর থেকে ফার্মগেটগামী হয়ে বাংলামোটর অফিস করেন সুজন সরকার। তিনি বলেন, এমনিতেই প্রতিদিন এই রুটে প্রচণ্ড যানজট থাকে। তার ওপর নিউ মার্কেট এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনার কারণে প্রচণ্ড যানজট পোহাতে হচ্ছে।
নিউ মার্কেটে সংঘর্ষের কারণে ওই এলাকায় সড়ক বন্ধ থাকায় তীব্র যানজট হয়েছে আসাদগেট এলাকায়। সায়েন্সল্যাব-আসাদগেট রাস্তায়ও প্রচণ্ড যানজট। এর প্রভাব মোহাম্মদপুর এলাকায়ও পড়েছে।
ফার্মগেট এলাকার এক যাত্রী বলেন, ‘যানজট হয়েছে ফার্মগেটের রাস্তায়ও। সংসদ ভবনের সামনে থেকে ফার্মগেটের সম্পূর্ণ রাস্তায় জ্যাম। গাড়ি আগায় না। পরে হেঁটে বাংলামোটর আসলাম।’
ফার্মগেট এলাকায় দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট মেহেদি হাসান ফারুক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আজকে সকাল ৮টা থেকেই যানজট শুরু হয়েছে। অন্য দিন বেলা ১১টা বাজলে আমরা একটু বিশ্রাম নিতে পারি। কিন্তু নিউ মার্কেট এলাকায় ঝামেলার কারণে আজকে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে অবস্থা বেগতিক। বসার কোনো সুযোগ নাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রচণ্ড রোদ, ধুলা তার ওপর ভয়ানক যানজট। যানজটের কারণে বাস রেখে মানুষ হেঁটে কর্মস্থলে যাচ্ছে।’