বেগুনের দাম বেড়ে গেলে কুমড়া দিয়ে বেগুনি বানানোর যে পরামর্শ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিয়েছেন, তাকে পাগলের প্রলাপের সঙ্গে তুলনা করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
দেশ পাগলে ভরে গেছে, এমন মন্তব্য করে তিনি বলেছেন, ‘দেশকে পাগলমুক্ত করতে হবে।’
সোমবার ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলা এবং দোহার থানা, পৌরসভা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
গয়েশ্বর বলেন, ‘এখন প্রতিটি জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধিতে মানুষের নাভিশ্বাস অবস্থা। এখন বলে কুমড়া দিয়ে বেগুনি বানাতে। সরকারকে বলব, কাঁঠালে কি আমসত্ত্ব হয়? আমরা পাগলের দেশে আছি। এই দেশকে পাগলমুক্ত করতে হবে।’
গত ৬ এপ্রিল জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী বাজারদর নিয়ে কথা বলেন। এ সময় বেগুনির বিষয়টি সামনে আসে। তিনি বলেন, ‘রমজান আসল আর হঠাৎ করে বেগুন ১১০ টাকা কেজি হয়ে গেল। যদিও সেটা এখন কমে দাঁড়িয়েছে ৮০ টাকায়।... বেগুন না খেয়ে অন্য যেসব সবজি আছে সেটা দিয়ে খেলেই হয়। আমরা তাই খাই। মিষ্টি কুমড়া দিয়ে বেগুনি খুব ভালো লাগে।’
সরকার করোনার টিকার টাকা আত্মসাৎ করেছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি নেতা। বলেন, ‘করোনায় মানুষ মারা যায়, আর করোনা টিকার ২৩ হাজার কোটি টাকার হিসাব নেই। এই টাকার হিসাব কে দেবে? শেখ হাসিনা এই টাকার হিসাব কীভাবে দেবেন, সব টাকা তো বিদেশে পাচার করা হয়েছে।’
গয়েশ্বর কথা বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য নাজমুল হুদাকে নিয়েও। নবাবগঞ্জ-দোহার মিলিয়ে যখন একটি আসন ছিল, তিনি সেই আসন থেকে একাধিকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। বর্তমানে তিনি আলাদা কল করেন, যেটি আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চলছে।
নাজমুল হুদাকে ইঙ্গিত করে গয়েশ্বর বলেন, ‘খেয়াল করবেন, আপনাদের সতর্ক থাকতে হবে। আগে বিএনপি করত, এখন বিএনপিকে গালাগাল দেয় এবং শেখ হাসিনার প্রশংসা করে। এই দোহার-নবাবগঞ্জেই আছেন। কিন্তু মেয়ে আবার বিএনপি করে।’
দোহারের বর্তমান সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমানকে নিয়েও কথা বলেন বিএনপি নেতা। বলেন, ‘এই দোহার-নবাবগঞ্জের যিনি (এমপি) আছেন, বাংলাদেশে তার জন্ম নয়; তার জন্ম পাকিস্তানে। তার সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের কোনো সম্পর্ক ছিল না। ১৯৭৩ সালে তিনি বাংলাদেশে এসেছেন।’
দোহার থেকে আন্দোলন গড়ে ‘গণতন্ত্রের অপশক্তিকে’ বিতাড়িত করা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি আমরা। এখন আমরাই গণতন্ত্র মুক্ত করব, দেশের মানুষকে মুক্ত করব, এই দেশ পরিচালনা করব, আমরা মুদ্রা পাচারকারীদের আটক করব।’
‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে’র আন্দোলনে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি নেতা বলেন, ‘বিএনপির বিরুদ্ধে চতুর্মুখী ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এই ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে আমাদের মোকাবিলা করতে হবে।
‘জাতীয়তাবাদী সকল দেশপ্রেমিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে চলতে হবে, রাজপথে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। তাহলে দেশে গণতন্ত্রের মুক্তি হবে, গণতন্ত্রের মাতা খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে, আমাদের নেতা তারেক রহমান বিদেশে থাকবেন না দেশে আসবেন।’
নবাবগঞ্জ উপজেলা বিএনপির নতুন কমিটি
সম্মেলনে কণ্ঠভোটে নবাবগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজাদুল ইসলাম হাই, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবুল কালাম নির্বাচিত হন।
একইভাবে দোহার থানা বিএনপির সভাপতি নির্বাচিত হন নজরুল ইসলাম মেছের ও সাধারণ সম্পাদক মাসুদ পারভেজ।
ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি দেওয়ান মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু আশফাক, বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, নিপুণ রায় চৌধুরী, তমিজউদ্দিন নাজিম মাস্টারও বক্তব্য রাখেন।