স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উত্তরণে বাংলাদেশ নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে বলে মনে করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। এজন্য বিশ্ববাণিজ্যে সক্ষমতা অর্জনের জন্য সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতকেও সমান তালে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের পর্যটন ভবনে রোববার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন।
‘ন্যাশনাল ওয়ার্কশপ অন দ্যা প্রোপোজড টাইম বাউন্ড অ্যাকশন প্ল্যান অফ দ্যা টু এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন রিলেটেড সাব-কমিটি: প্রিফারেনশিয়াল মার্কেট অ্যাকসেজ অ্যান্ড ট্রেড এগ্রিমেন্ট অ্যান্ড ডব্লিউটিও ইস্যুজ’ শিরোনামে এ কর্মশালা হয়।
কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (সচিব) শরিফা খান ও এফবিসিসিআই’র প্রেসিডেন্ট জসিম উদ্দিন।
টিপু মুনশি বলেন, ‘এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন একদিকে আমাদের জন্য খুশির খবর হলেও অপরদিকে চ্যালেঞ্জের। চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য আমাদের তৈরি হতে হবে। ইউরোপিয়ন ইউনিয়ন জিএসপি প্লাস বাণিজ্য সুবিধা দিলেও তার জন্য অনেক শর্ত পূরণ করতে হবে। তাই বাণিজ্য সুবিধা আদায় করতে পিটিএ (অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি) ও এফটিএ (অবাধ বাণিজ্য চুক্তি) এর মতো বাণিজ্য চুক্তি করতে হবে। এজন্য সাময়িকভাবে আমরা কিছু শুল্ক হারালেও দীর্ঘ মেয়াদে লাভবান হবো।
‘এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পর আমাদের অনেক বাণিজ্য সুবিধা থাকবে না, উন্নত বিশ্বের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে এগিয়ে যেতে হবে। পণ্য রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা থাকবে না। এতে রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। রপ্তানি বাড়াতে কৃষিপণ্যসহ বিভিন্ন খাতে ভর্তুকি কমাতে হবে।’
নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে সরকার সচেতন আছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘২০২৬ সালের পর কি হবে বলা যায় না। হঠাৎ আসা চাপ আমরা সইতে পারবো না। তাই প্রধানমন্ত্রী আমাদের ডেকে সতর্ক করেছেন। পিটিএ ও এফটিএ না হলে বিপদে পড়তে হবে বলে তিনি বলেছেন। চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কি করছে তাও তিনি জানতে চেয়েছেন।
‘উন্নতবিশ্বের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হলে যোগ্য ও দক্ষ মানুষ গড়ে তুলতে হবে। আমাদের কাজ আমাদেরই করতে হবে। সক্ষমতা অর্জনের বিকল্প নেই, সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে নিজেদের তৈরি করতে হবে। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সেক্টরগুলোকেও সমান তালে এগিয়ে আসতে হবে।’
কর্মশালার আলোচনায় অংশ নেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান ড. জায়েদী সাত্তার, লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যান্যুফেকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, এনবিআর সদস্য (কাস্টমস পলিসি) মাসুদ সাদিক, এফবিসিসিআইয়ের উপদেষ্টা মনজুর আহমেদ, ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড এক্সপার্ট নেসার আহমেদ, বিআইডিএসের রিচার্স ডিরেক্টর ড. মনজুর হোসেইন ও পলিসি এক্সচেঞ্জ অফ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. এম মাসরুর রিয়াজ।