প্রায় এক বছর পর সন্তানদের দেখা পেলেও তাদের কাছে পাচ্ছেন না দিনাজপুর থেকে নারায়ণগঞ্জে আসা রিকশাচালক ইদ্রিস আলী। তার দুই মেয়ে তাদের নানি আকলিমা বেগমের কাছে থাকবে বলে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
তবে ইদ্রিস আলী চাইলে যেকোনো সময় মেয়েদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন, যোগাযোগও রাখতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে কেউ বাধা দিতে পারবে না।
নারায়ণগঞ্জের শিশু আদালতের বিচারক বেগম সাবিনা ইয়াসমিন ইদ্রিসের মেয়েদের বিষয়ে রোববার বিকেলে এই আদেশ দিয়েছেন।
শিশু আদালতের আইনজীবী রকিব উদ্দিন আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ইদ্রিসের মেয়েরা তার বাবার কাছে যেতে চাচ্ছে না। যেহেতু শিশুদের মা বিদেশে আছেন, সে কারণে আদালত শিশুদের ইচ্ছেকে প্রাধান্য দিয়ে তাদেরকে নানি আকলিমার জিম্মায় দিয়েছে। তবে বাবা ইদ্রিস আলী যেকোনো সময় মেয়েদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন, যোগাযোগও করতে পারবেন।
আদালত পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান জানান, দুই নাতনিকে নিয়ে আকলিমা আদালতে আসেন দুপুরে। একই সময়ে আসেন ইদ্রিসও। তিনি একজন আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতকে জানিয়েছেন সন্তানদের তার কাছে নিতে চান। তবে আদালত জানিয়েছে শিশুরা থাকবে তার নানির সঙ্গে।
বিচারকের এমন আদেশ শুনে আদালত চত্বরেই কান্নায় ভেঙে পড়েন ইদ্রিস। তার দাবি, সন্তানদের ভুল বোঝানো হয়েছে।
ইদ্রিস বলেন, ‘ছোট মেয়েটা যখন চলে আসে তখন তার বয়স আরও কম ছিল। সে তো আমাকে বুঝতে পারছে না। বড় মেয়েটাকেও আমার সম্পর্কে ভুল বুঝিয়েছে।’
আদালত চত্বরে আকলিমা বেগম বলেন, ‘ইদ্রিসের সঙ্গে আমার মেয়ের বিয়েবিচ্ছেদ হয়েছে। ইদ্রিস সারা দিন বাইরে কাজ করলে বাচ্চাগুলারা দেখবে কে। দুই নাতনি তার কাছে থাকলেই ভালো থাকবে।’
এ সময় আদালতের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।
২০ দিন ধরে নারায়ণগঞ্জ শহরে রিকশা চালিয়ে হারানো দুই মেয়েকে খুঁজছিলেন ইদ্রিস। এ নিয়ে ১৩ এপ্রিল ‘আমার মাইয়া দুইডারে দেখছেননি’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় নিউজবাংলায়। রোববার একটি ফোন নম্বরের সূত্র ধরে ইদ্রিস আলীর দুই মেয়েকে খুঁজে বের করে আদালতে পাঠায় পুলিশ।