বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অপহরণ মামলায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গ্রেপ্তার

  •    
  • ১৭ এপ্রিল, ২০২২ ১৯:৪৮

পটুয়াখালীর এসপি বলেন, ‘ব্যবসায়ী শিবু লাল দাসকে অপহরণের মাস্টার মাইন্ড কাপড় ব্যবসায়ী মামুনসহ তিনজন হলেও পুরো ঘটনার সঙ্গে ১০ থেকে ১৫ জন জড়িত। ঘটনার পর পরই সবাই আত্মগোপনে চলে যান। আমরা তাদের মধ্যে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করতে পেরেছি। অন্যদেরও শিগগিরই গ্রেপ্তার করা হবে।’

পটুয়াখালীর গলাচিপায় ২০ কোটি টাকা মুক্তিপণ চেয়ে ব্যবসায়ী শিবু লাল দাসকে অপহরণ মামলায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

পটুয়াখালী ও ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে শনিবার তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন পটুয়াখালী জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকুর রহমান পারভেজ, শামীম আহম্মেদ, আক্তারুজ্জামান সুমন, মিজানুর রহমান, বেল্লাল হোসেন ও সাব্বির আহম্মেদ। তারা সবাই পটুয়াখালী শহরের বাসিন্দা।

পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ রোববার বেলা ১টার দিকে নিজ কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব জানান।

তিনি বলেন, ‘ব্যবসায়ী শিবু লাল দাসকে অপহরণের মাস্টার মাইন্ড কাপড় ব্যবসায়ী মামুনসহ তিনজন হলেও পুরো ঘটনার সঙ্গে ১০ থেকে ১৫ জন জড়িত। ঘটনার পর পরই সবাই আত্মগোপনে চলে যান। আমরা তাদের মধ্যে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করতে পেরেছি। অন্যদেরও শিগগিরই গ্রেপ্তার করা হবে।’

প্রেস ব্রিফিংয়ে এসপি অপহরণের ও আসামিদের শনাক্তের বর্ণনা দেন।

তিনি জানান, ১১ এপ্রিল শিবু ও তার গাড়িচালক মিরাজকে অপহরণ করে হাত, পা ও মুখ বেঁধে গাড়িতে করে শহরের এসডিও রোডে মামুনের গোপন আস্তানায় রাখা হয়। পরদিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে মাতৃছায়া নামের দোকানের স্টিকার লাগানো প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে অটোরিকশায় তাদের শহরের সবুজবাগ এলাকার এসপি কমপ্লেক্সের আন্ডারগ্রাউন্ডে রাখা হয়।

ওই দিনই রাত সাড়ে ১০টার দিকে শিবু ও মিরাজকে বস্তাবন্দি অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ।

এসপি জানান, বস্তার সূত্র ধরে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। শহরের একাধিক মোড়ের ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন (সিসিটিভি) ক্যামেরার ফুটেজ ও শিবুর বক্তব্য মিলিয়ে আসামিদের শনাক্ত করা হয়।

তিনি বলেন, ‘আমরা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে প্রথমে অটোচালক মো. বেল্লালকে আটক করি। বেল্লাল জানান, এসডিও রোড থেকে খোঁড়া এক ব্যক্তি সবুজবাগ যাওয়ার জন্য তার অটো ভাড়া করেন। তার সঙ্গে আরও তিনজন ছিলেন। তারা অটোয় কিছু বস্তা তোলেন। এ সময় বেল্লালকে সিগারেট ও কোক আনতে দোকানে পাঠানো হয়।

‘সবুজবাগের ওই বিল্ডিংয়ের সামনে পৌঁছলে বেল্লালকে তারা আবারও সিগারেট ও কোক আনতে পাঠান। সে সময়ে তারা বস্তা নামিয়ে ফেলেন।’

এসপি আরও বলেন, ‘মূলত টাকার জন্যই শিবুকে অপহরণ করা হয়েছিল। তবে এর পেছনে অন্য কোনো কারণ থাকলে মামুনকে গ্রেপ্তারের পর তাও বেরিয়ে আসবে। আমরা কোনো কিছুই বাদ দিচ্ছি না। এ ঘটনায় কেউ ছাড় পাবে না।’

শিবুর ছোট ছেলে বাসু দেব দাস গত বুধবার দুপুরে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে পটুয়াখালী সদর থানায় মামলা করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, শিবু ব্যবসায়িক কাজে গত সোমবার বেলা ১১টার দিকে শহরের পুরান বাজারের নিজ বাসা থেকে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে গলাচিপার উদ্দেশে রওনা হন। এ সময় তার গাড়িচালক মিরাজ গাড়ি চালাচ্ছিলেন। কাজ শেষে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তারা হরিদেবপুর খেয়াঘাটের পাশে তাদের মালিকানাধীন শোভা আবাসিক বোর্ডিংয়ে বিশ্রাম নেন।

এরপর তারা আবার বাসার দিকে রওনা দেন। এর মাঝে আমখোলা বাজারে করিম হাওলাদারের কাছ থেকে গজালিয়া খেয়াঘাটের কালেকশন বাবদ সাড়ে ৭ হাজার টাকা এবং হরিদেবপুর খেয়াঘাটের ম্যানেজার শ্যামলের কাছ থেকে ৫২ হাজার ১২০ টাকা নেন।

রাত সাড়ে ৯টার দিকে পরিবারের সদস্যরা শিবুকে ফোন দিলে মোবাইল বন্ধ পান। গাড়ির চালককে ফোন দিলে তার ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়। রাত ১টা ৫৯ মিনিটে শিবুর নম্বর থেকে তার স্ত্রীর ফোনে কল আসে। অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা ২০ কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। তাকে জীবিত অবস্থায় ফেরত পেতে বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য বলা হয়। প্রশাসনকে জানালে তার শিবুকে হত্যার হুমকি দেয়।

ওই রাতেই শিবুর পরিবার সদর থানা পুলিশকে বিষয়টি জানায় ও সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

পুলিশ আমতলী উপজেলার আমড়াগাছিয়া এলাকার রহমানিয়া তেলের পাম্প থেকে শিবুর প্রাডো গাড়িটি উদ্ধার করে। এরপর এস‌পি কমপ্লেক্সের আন্ডারগ্রাউন্ড থেকে শিবু ও মিরাজকেও উদ্ধার করা হয়।

এ বিভাগের আরো খবর