জিয়াউর রহমান মেহেরপুরের মুজিবনগরে শপথ নেয়া মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনাকারী প্রবাসী সরকারের কাছ থেকে মাসে চার শ টাকা ভাতা পেতেন বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তার দল বিএনপি এই দিবসটি পালন না করার সমালোচনা করেছেন তিনি।
ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা বিভাগের এক প্রকাশনার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপির সমালোচনা করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপি মুজিবনগর দিবস পালন করে না। ‘তারা যে মুজিবনগর দিবস পালন করে না, এটি প্রকারান্তরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে অস্বীকার করা, আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রামকে অস্বীকার করার সামিল।’
মুক্তিযুদ্ধ চলাচালে ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল শপথ নেয় বাংলাদেশের প্রবাসী সরকার। সে সময় মুক্তাঞ্চল মুজিবনগরে এই শপথ হয় বলে সরকারটি মুজিবনগর সরকার হিসেবেও পরিচিতি পায়।
স্বাধীনতার সঙ্গে সম্পৃক্ত নানা দিবসের মতো এই দিবসও উপেক্ষা করে থাকে বিএনপি। আর এই বিষয়টি নিয়েই কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী।তিনি বলেন, ‘এই সরকারের অধীনে মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডারদের নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। জিয়াউর রহমান এই মুজিবনগর সরকারের অধীনেই একজন চাকুরে ছিলেন। তিনি চার শ টাকা বেতন পেতেন। অন্যান্য সেক্টর কমান্ডাররাও চার শ টাকা করে বেতন পেতেন। এই সরকারের অধীনেই পরবর্তীতে নানা দপ্তরে আরও নিয়োগ দেয়া হয়। তারাও কিন্তু বেতন পেতেন। জিয়াউর রহমান সহ অন্যরা কিন্তু বিনা বেতনে যুদ্ধ করেনি।’
জিয়াউর রহমান অবশ্য যুদ্ধ করেছেন কি না সেটা নিয়েও নানা প্রশ্ন আছে বলে জানান হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘দলিল দস্তাবেজ বলে প্রকৃতপক্ষে জিয়াউর রহমান মুক্তিযোদ্ধার ছদ্মাবরণে পাকিস্তানিদের গুপ্তচর হিসেবে কাজ করেছেন। তিনিও চার শ টাকা বেতন গ্রহণ করতেন। মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস তিনি বেতন গ্রহণ করেছেন।’
মুজিবনগর সরকারের শপথ কীভাবে হয়েছিল, সেটিও উল্লেখ করেন হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘মুজিবনগর সরকারের যারা শপথ নেবেন তারা এক জায়গা থেকে আর দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের কলকাতা প্রেসক্লাব মধ্যরাতে যাত্রা শুরু করেছিলেন।
‘তাদের কাউকে বলা হয়নি কোথায় যাবে। বলা হয়েছিলো কয়েক ঘণ্টার ড্রাইভ হবে এরপর একটি জায়গায় যাবে। তখন মেহেরপুরের বৈদ্যনাথ তলার আম্রকানন, যেটিকে পরে মুজিবনগর নাম দেয়া হয়েছিল। সেখানে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানটি হয়।
‘সে সময় জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান কারাগারে ছিলেন বিধায় তিনি শপথ নিতে পারেননি। তবে তার নেতৃত্বেই সরকার গঠন হয়েছিল। এই সরকারের অধীনেই মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত হয়। যেটিকে আমরা মুজিবনগর সরকার বলি এটিই বাংলাদেশের প্রথম সরকার। এই সরকারের অধীনেই মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল।’