বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ঢাকনাবিহীন ১৯১ ম্যানহোল এখন মৃত্যুফাঁদ

  •    
  • ১৭ এপ্রিল, ২০২২ ১৪:৫২

মকবুল হোসেন বলেন, ‘ড্রেনের ঢাকনা না থাকায় আমরা যারা চলাচল করি তাদের জন্য এটা বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। বাচ্চারা দিনে সাবধানতা অবলম্বন করলেও সন্ধ্যার পরও তো তারা যাতায়াত করে। কিন্তু ঢাকনাবিহীন ড্রেনে অনেকেই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন।’

রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেট থেকে নগরীর লালবাগ পর্যন্ত ১ হাজার ৪৫০ মিটারের এই পথে মূল সড়কের পাশে করা আরসিসি ড্রেনের ম্যানহোলের ১৯১টি ঢাকনা দীর্ঘদিন ধরে খোলা রয়েছে, যা মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার শঙ্কায় রয়েছেন ওই পথে চলাচল করা শিক্ষার্থী ও পথচারীদের।

কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা ২ হাজার ৮০০ মিটার ম্যানহোলের রাস্তার কাজ করছে। তার মধ্যে ১ হাজার ৪৫০ মিটারের কাজ শেষ। এ রাস্তায় ম্যানহোলের ঢাকনা লাগালেও ৪১টি ঢাকনা চুরি হয়ে যাওয়ার কথা বলেন তারা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেট (পার্ক মোড়) থেকে উপাচার্যের বাংলোর গেট পর্যন্ত আরসিসি ড্রেনের ১৬টি বড় ম্যানহোলের ঢাকনা নেই। উপাচার্যের বাংলোর গেট থেকে কারমাইকেল কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজ গেট পর্যন্ত ১৪৯টি ছোট এবং কলেজিয়েট থেকে লালবাগ কারমাইকেল কলেজ গেট পর্যন্ত ২৬টি বড় ম্যানহোল খোলা রয়েছে। প্রতি ১৫ ফিট পর পর ম্যানহোলের ঢাকনার ব্যবস্থা করা হলেও পুরোটাই খোলা রয়েছে।

এই পথ দিয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, কারমাইকেল কলেজ ও কারমাইকেল কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজ হওয়ায় শ শ শিক্ষার্থী হেঁটে প্রতিদিন বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া ছাড়াও নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজ সারছেন।

স্থানীয়রা জানান, গত দুই মাস আগে এই খোলা ম্যানহোল দিয়ে ড্রেনে পড়েছে কারমাইকেল কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজের এক ছাত্রী। পরে তার সহপাঠীরা সেই ম্যানহোলে নেমে তাকে উদ্ধার করেছে। তারও আগে আরও দুজন পড়েছে।

স্থানীয় মকবুল হোসেন নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘ড্রেনের ঢাকনা না থাকায় আমরা যারা চলাচল করি, তাদের জন্য এটা বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। বাচ্চারা দিনে সাবধানতা অবলম্বন করলেও সন্ধ্যার পরও তো তারা যাতায়াত করে। কিন্তু ঢাকনাবিহীন ড্রেনে অনেকেই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন।’

তিনি বলেন, ‘পথচারী, ছাত্র-ছাত্রীরা হাঁটলে আতঙ্কে থাকে, কখন কে পড়ে যায়। মানুষের চলাচলের জন্য মারণফাঁদে পরিণত হয়েছে ড্রেনটি। যদি ঢাকনাই না দেয় তাহলে মারণফাঁদ তৈরি করার কোনো দরকার হয় না।’

কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বাদশ (মানবিক) বিভাগের শিক্ষার্থী সুমন রানা বলেন, ‘কলেজ থেকে বের হলেই তো হেঁটে হেঁটে যাওয়া লাগে। খুব ভয় করে। যদি পা পিছলে পড়ে যাই, সব শেষ। আমরা খুব সাবধানে আসা-যাওয়া করি।’

রংপুর সিটি (টেকনিক্যাল) কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী পারুল আক্তার বলেন, ‘আমি চকবাজারের একটি মেসে থাকি। প্রায় দিনই আমরা লালবাগ বাজারে মেসের বাজার করার জন্য যাই। খুব ভয় লাগে।’

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘পার্ক মোড় থেকে লালবাগ বেশি দূরে নয়। হেঁটে যেতে পাঁচ মিনিটেরও কম সময় লাগে। কিন্তু ড্রেনের ওপর দিয়ে হাঁটতে গিয়ে যেন জীবনটা হাতে নিয়ে হাঁটতে হয়। এক ভয়ংকর অবস্থা।’

রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল বিভাগ জানিয়েছে, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট থেকে লালবাগ বাজার হয়ে কলেজপাড়া পর্যন্ত প্রায় ২ হাজার ৮০০ মিটার ম্যানহোলের কাজ চলছে। তাতে খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ১২ কোটি টাকা। ওই জায়গাটুকুও এই ১২ কোটি টাকার প্যাকেজে। বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে কাজ শেষ হলেও অন্য প্যাকেজে এখনও শেষ হয়নি। আগামী জুন মাসের মধ্যে কাজ শেষ হবার আশা করছে দপ্তরটি।

ঠিকাদার মাশরুর রহমান নীলয় নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্যাকেজের কাজ প্রায় শেষ, আমরা কিছু কিছু জায়গায় ঢাকনা দিয়েছিলাম। এর মধ্যে ৪১টি ম্যানহলের ঢাকনা চুরি হয়ে যায়। আমরা সেটা সিটি করপোরেশনকে লিখিত দিয়েছি। এগুলো চুরি হওয়ায় আমাদের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এই ক্ষতি কীভাবে পুষিয়ে নেব জানি না। সে জন্য আমরা গত তিন মাস আগে চিঠি দিয়ে জানিয়েছি।’

রংপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আজম আলী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ওই কাজটি কয়েকটা প্যাকেজের কাজের একটা। ওখানে কাজ শেষ হলেও অন্য প্যাকেজগুলোর কাজ চলছে। সব প্যাকেজের কাজ জুন মাসে শেষ হবার কথা। এর মধ্যে ঢাকনাগুলো দেয়া হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর