ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে দলবল নিয়ে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক অতনু বর্মণের বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিযোগ, অতনু বর্মনের বাইকের সামনে তার বাইক ব্রেক করা নিয়ে গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা সংগ্রাম ভাস্কর্যের মোড়ে এই ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী রাকিবুল হাসান সজীব বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী, থাকেন হাজী মুহাম্মদ মুহসিন হলে।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সজীব বলেন, ‘রাত সোয়া ১১টার দিকে আমি উদয়ন স্কুলের সামনে স্বাধীনতা সংগ্রাম ভাস্কর্যের পাদদেশ দিয়ে বাইক নিয়ে ঢাকা মেডিক্যাল থেকে হলে ফিরছিলাম। এ সময় পেছন থেকে আমার এক বন্ধু আমাকে ডাক দেয়। আমি পেছনে যাওয়ার জন্য বাইক নিয়ে রাস্তার উপরই ইউটার্ন নিলে আমার বাইকটা ডান পাশের রাস্তার মাঝখানে চলে আসে।
‘আর সেই রাস্তা দিয়ে অতনু দা এবং সাথে কয়েকটি বাইক নিয়ে তার অনুসারীরা আসছিলেন। আমার বাইক দাদার বাইকের সামনে পড়ে গেলে দাদা বারবার হর্ন দিতে থাকেন। আমি দুর্ঘটনা এড়াতে বাইক থামিয়ে ফেলি। এরপর উনি আমার সামনে এসে গালিগালাজ শুরু করেন।’
তিনি বলেন, ‘প্রতিবাদ করে আমি বলি, এই ভাই, দাঁড়ান। এটি শুনে দাদা তার অনুসারীদের বলে, শালার পুতেরে মার। এ সময় রাস্তার উপর পূর্ব থেকেই বসে আড্ডা দিতে থাকা তার অনুসারীরা এসে অতর্কিতভাবে মারতে শুরু করে। আমার নাকে, কানে, মুখে যে যেদিক থেকে পারে কিল ঘুষি মারে। আমি তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরিচয় দিয়েছি। আমার বন্ধু হাসিব দৌড়ে এসে বলে, ভাই ও আমার বন্ধু। সে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। মুহসিন হলে থাকে।’
পরিচয় পাওয়ার পরও তাকে মারতে থাকে বলে জানান সজিব। পরে তার কয়েক বন্ধু তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করে।
সজিব বলেন, ‘আমাকে মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়ার সময় অতনু দা আমার বন্ধু হাসিবকে বলছে, যা হয়েছে ভুলে যাও। জুনিয়ররা হয়ত বুঝতে পারেনি। এরপর তিনি আমার চিকিৎসার জন্য এক হাজার টাকাও দিয়ে গেছেন।’
সজিব বলেন, আমি এর বিচার চাই।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে অতনু বর্মণকে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
অবশ্য তিনি গণমাধ্যমকে বলেছেন, এরকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। তার হলে টুর্নামেন্ট আছে। তিনি শুক্রবার সারা দিন সে টুর্নামেন্ট নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন।
পরে ভুক্তভোগীর অভিযোগ ও প্রাথমিক চিকিৎসার কথা বললে তিনি বলেন, ‘‘কোনো মারধরের ঘটনা ঘটেনি। তার সাথে আমার শুধু তর্কাতর্কি হয়েছে। তর্কাতর্কি বলতে সে প্রথমে আমাকে চিনতে পারেনি। সে যেহেতু আমার ক্যাম্পাসের জুনিয়র, সে আমাকে ‘সরি’ বলল। এরপর আমিও চলে আসি, সেও চলে যায়।’’