মৃদুমন্দ বাতাস আর আলো-ছায়ার খেলায় ভালোই কেটেছে বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন। দ্বিতীয় দিন সরকারি ছুটিতে সড়কে গাড়ির আধিক্য কম। কিন্তু প্রখর খরতাপে প্রাণ ওষ্ঠাগত।
দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এরই মধ্যে ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে, সেটি রাজশাহীতে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটের তথ্য বলছে, সেখানে পারদ উঠেছে ৪৩ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ঢাকা পিছিয়েছিল এমন নয়। ৪১ দশমিক ১ ডিগ্রি তাপে পুড়েছে রাজধানী শহর। রোজায় পানাহার বন্ধ রেখে তীব্র গরমে অস্বস্তি দেখা গেছে মানুষের মধ্যে।
রাজশাহীর এই সময়ের তাপমাত্রা গত আট বছরের রেকর্ড বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার সময় রাজধানীর তাপমাত্রা অ্যাপলের ওয়েদার অ্যাপে দেখা গেছে ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে এই তাপ অনুভূত হচ্ছিল ৩৯ ডিগ্রির সমান। যখন দিনের বেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ ছাড়িয়ে যায়, তখন অনুভূত হচ্ছিল আসলে এর চেয়ে বেশি।
আগের দিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে ৩৭ ডিগ্রি, আর ঢাকায় ৩৪ ডিগ্রি।
অর্থাৎ এক দিনেই তাপমাত্রা বেড়েছে ৬ থেকে ৭ ডিগ্রি, যা সচরাচর দেখা যায় না। আর এই সময়ের স্বাভাবিক তাপমাত্রা থাকে ৩৪ ডিগ্রির মতো। গড়ের চেয়ে ৭ ডিগ্রি বেশি গরমে মানুষ হাঁসফাঁস করবে- এটাই স্বাভাবিক।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী আজমল সিকদার বলেন, ‘বাসা থেকে বের হওয়ার সময় গত এক সপ্তাহে আজকের মতো এতটা গরম লাগেনি। আজ তীব্র গরমে অফিসে আসতে কষ্ট হয়েছে।’
আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তা হাফিজুর রহমানের কাছে প্রশ্ন ছিল, ২৪ ঘণ্টায় গরম এত কেন বাড়ল। উত্তরে তিনি বলেন, ‘গত কয়েক দিন বৃষ্টি ছিল বিভিন্ন জায়গায়। তাই তাপমাত্রা কিছুটা কম ছিল। আজ সারা দেশে কোথাও সেভাবে বৃষ্টি হয়নি। এ কারণে তামপাত্রা বেড়ে গেছে।’
আবহাওয়ার বার্তায় জানানো হয়েছে, রাজশাহী, পাবনা, চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং আগামী কয়েক দিনে তা অব্যাহত থাকতে পারে।
আগামী ২৪ ঘণ্টায় আবহাওয়ার যে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে, তাতে তাপমাত্রা কিছুটা কমবে বলে জানানো হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৪ দশমিক ২ ডিগ্রি এবং রাজশাহীতে ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
বৃষ্টির আভাস, কমবে তাপ
আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান শনিবার থেকে শুরু হওয়া নতুন সপ্তাহে দেশে ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা বেশি বলে জানিয়েছেন। তখন গরম কমে আসবে।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘এখনকার তাপমাত্রা বৃষ্টির ওপর নির্ভর করে। বৃষ্টি হলে তাপমাত্রা কমে।’
এই সময়ে বৃষ্টি হলে তা শিলাবৃষ্টি হতে পারে- সেটিও জানিয়ে দেন এই আবহাওয়াবিদ।
অধিদপ্তরের আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ‘লঘুচাপের বর্ধিতাংশ হিমালয়ের পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
‘ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে প্রবল বিজলী চমকানোসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্য এলাকায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।’
সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলেও জানায় আবহাওয়া অধিদপ্তর।