বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সরকারি জমি ব্যাংকে বন্ধক, ১৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ

  •    
  • ১৫ এপ্রিল, ২০২২ ১৮:২৩

র‌্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা রাজধানীর বাড্ডায় হত্যাচেষ্টা, চাঁদাবাজি, প্রতারণা, জালিয়াতি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য দিয়েছেন। মহাসড়কের জমি কেনাবেচা করে ব্যাংকে বন্ধক রেখে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের চাঞ্চল্যকর তথ্যও দিয়েছেন।

সরকারি জমি নিজের দেখিয়ে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ১৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

র‌্যাব-১-এর একটি দল বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর উত্তরা থেকে মো. গোলাম ফারুক (৫০) ও তার সহযোগী ফিরোজ আল মামুনকে গ্রেপ্তার করে।

শুক্রবার দুপুরে কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি বাড্ডা থানাধীন মেরুল-বাড্ডা এলাকায় জাল দলিল নিয়ে বিরোধের জেরে হত্যাচেষ্টা করা হয়। যেখানে ভিকটিমকে নিজ জমি থেকে উৎখাত করার জন্য ফারুক ও তার সহযোগী ফিরোজসহ অন্যারা গত ২৬ মার্চ ও ৬ এপ্রিল হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করে।’

এ বিষয়ে বাড্ডা থানায় মামলা হয়। র‌্যাব ওই ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে নজরদারি বাড়ায়। বৃহস্পতিবার রাতে মামলার প্রধান আসামি ফারুক ও ফিরোজকে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‌্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা রাজধানীর বাড্ডায় হত্যাচেষ্টা, চাঁদাবাজি, প্রতারণা, জালিয়াতি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য দিয়েছেন। মহাসড়কের জমি কেনাবেচা করে ব্যাংকে বন্ধক রেখে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের চাঞ্চল্যকর তথ্যও দিয়েছেন।

২০২১ সালের এপ্রিলে একটি বেসরকারি টেলিভিশনের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে মহাসড়কের জমি ব্যক্তিনামে নিবন্ধন, বিক্রি, ব্যাংকে বন্ধক ও ব্যাংক কর্তৃক নিলামে বিক্রিচেষ্টার ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে।

ওই ঘটনায় ভূমি মন্ত্রণালয় তদন্ত কমিটি গঠন করে।

গাড়ি আমদানি ব্যবসা করতে গিয়ে প্রতারণা শুরু

জিজ্ঞাসাবাদে ফারুক জানান, তিনি ২০০০ সাল থেকে গাড়ি আমদানির ব্যবসা শুরু করেন। একটি বেসরকারি ব্যাংকে বন্ধকি সম্পত্তি ব্যতীত এলসি আবেদন করে গাড়ি আমদানি শুরু করেন। বেসরকারি ব্যাংকটি আমদানি করা গাড়ি বিক্রি করে ব্যাংকের অর্থ পরিশোধ করার শর্তে তাকে ৭ কোটি টাকা ডিমান্ড লোন দেয়। কিন্তু ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ না করায় ব্যাংক তাকে সম্পত্তি বন্ধক দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করলে তিনি সরকারি জমি অসদুপায়ে ব্যক্তিনামে নিবন্ধন করার পরিকল্পনা করেন।

পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৯৪৮ সালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের উত্তরার আজমপুর অংশের জমি অধিগ্রহণ হওয়ার আগে এই জমির মালিকের ছেলেকে খুঁজে বের করেন ফারুক।

জালিয়াতির সাহায্যে তিনি ২০০৬ সালে মিথ্যা তথ্য দিয়ে ভুয়া দলিল করেন। পরে সেই জমির মালিকের ছেলের কাছ থেকে ফারুক তার স্ত্রীর নামে ২০১০ সালে মাত্র ৩০ হাজার টাকায় জমি কিনে আরেকটি দলিল তৈরি করেন। একই বছরে তার স্ত্রীর কাছ থেকে ওই জমি নিজের নামে দলিল করে নেন।

মহাসড়কের জমি নিজের দেখিয়ে ব্যাংক লোন

জালিয়াতির মাধ্যমে দলিল ও মহাসড়কের জমিকে নিজের বলে দেখিয়ে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকে বন্ধক দেখান। তিনি আরও ১৫ কোটি টাকা ঋণ নেন। কিন্তু ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ না করায় ২০১৩ সালে ব্যাংক বন্ধকি জমি নিলামে বিক্রির নোটিশ দেয়। এ সময় ব্যাংক সরেজমিন গিয়ে দেখতে পায়, ওই জমিটি সরকারি।

পরবর্তী সময়ে তিনি ভুল সংশোধন দলিল করে আগের বন্ধক জমির দাগ নম্বর পরিবর্তন করে বাড্ডা থানায় মামলার বাদী ও ভুক্তভোগীর জমির দাগ নম্বর উল্লেখ করেন। তখন ব্যাংক সেই জমিতে বন্ধকি সম্পত্তির সাইনবোর্ড দিতে গিয়ে জানতে পারে সেটিও ভুয়া।

কমান্ডার মঈন বলেন, ফারুকের বিরুদ্ধে জমিসংক্রান্ত, প্রতারণা, হত্যাচেষ্টাসহ মোট আটটি মামলা রয়েছে।

র‌্যাব জানায়, ফারুকের সব অপকর্মের অন্যতম সহযোগী ফিরোজ। তিনি উত্তরা এলাকায় বিভিন্ন কিশোর গ্যাং পরিচালনা করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

হত্যাচেষ্টা মামলার বাদী জামির আলী বলেন, ‘আমার উত্তরার ২৭ শতাংশ জমি ফারুক দখল করার জন্য পাঁয়তারা করে আসছিলেন। তাদের কাছে ওই জমির কোনো দাগ খতিয়ান নেই। এ ছাড়া ওই জায়গা বন্ধক দিয়ে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের প্রধান শাখা থেকে ১৫ কোটি টাকা লোন নিয়েছেন তিনি। এ ঘটনার দায় আমার ওপর চাপানোর চেষ্টা করেছেন ফারুক।’

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে অভিযোগ করলে তারা ব্যবস্থা নেয়নি বলে তিনি অভিযোগ করেন।

এ বিভাগের আরো খবর