নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও মহাসড়কে বাসের ধাক্কায় এক শিশু গুরুতর আহত হয়। এ অবস্থায় তাকে দ্রুত উদ্ধার করে সোনারগাঁও ২৫০ শয্যা হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি ঘটলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসার পর চিকিৎসক বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ৭ বছর বয়সী মুসা হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত শিশুর মামা কামাল হোসেন বলেন, ‘আমার বড় বোন ফোনে আমাকে বলেন, মুসাকে আমার দেখতে মন চায়, ওকে বাড়ি থেকে নিয়ে আয়। তখন আমি নারায়ণগঞ্জ আড়াইহাজার থেকে আমার ভাগিনা মুসাকে নিয়ে সোনারগাঁও বাসস্ট্যান্ড নেমে কিছুদূর এগিয়ে আইল্যান্ডের কাটা সাইট দিয়ে পার হওয়ার সময় একটি বাস আমার ভাগিনাকে ধাক্কা দেয়। তখন সে রাস্তায় ছিটকে পড়ে। পরে স্থানীয় হাসপাতাল নিয়ে যাই। সেখান থেকে ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে আসার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’
নিহত শিশুর মা হোসনে আরা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমি স্বামী পরিত্যক্তা। আমার স্বামী মাদকাসক্ত। আমার বিয়ের ১৫ বছর। সাত বছর ধরে স্বামীর সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই আমার। একটা পোশাক কারখানায় কাজ করি সোনারগাঁও এলাকায়। আমার দুই ছেলে নিয়ে আমি বাবার বাড়ি থাকি। ছেলেরা নানা-নানির কাছে থাকে। গতকাল আমার ছেলে ওর মামার সঙ্গে আমার সঙ্গে দেখা করতে আসে। সোনারগাঁও বাস থেকে নেমে রাস্তা পারাপারের সময় বাসে ধাক্কা দেয়। আমি অপেক্ষায় ছিলাম আমার ছেলে আসতেছে। পরে খবর পাই আমার ছেলে বাসের ধাক্কায় আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে আছে। খবর পেয়ে রাত আটটায় এসে আমার ছেলের লাশ দেখতে পাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বাড়ি নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার উপজেলার কালাপাহাড়িয়া গ্রামে। নিহতের বাবার নাম দিদার হোসেন। আমার শ্বশুরবাড়ি নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁও বাতি বন্দর এলাকায়। আমার দুই ছেলে। নিহত মুসা ছোট।’
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও হাইওয়ে রোডে একটি বাসের ধাক্কায় এক শিশুকে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
শিশুটির মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মেডিক্যাল কলেজ মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় জৈনপুরী বাসটি হাইওয়ে পুলিশ জব্দ করেছে এবং চালককে আমরা আটক করেছি। চালক নিজেই শিশুটিকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এসেছিল।’
বিষয়টির সত্যতা কাঁচপুর হাইওয়ের ওসি নিশ্চিত করেছেন।